Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

বিজ্ঞানের অপব্যবহারে আমাদের পৃথিবী

আমরা যেসব দ্রব্য ব্যবহার করি, যেমন রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, প্লাস্টিক, ফোম, এরােসল
প্রভৃতির ফলেও বায়ুমণ্ডলে উৎপন্ন হচ্ছে এক ধরনের গ্রিনহাউস গ্যাস (এইচসিএফসি)। এই
গ্যাসের কারণে বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর ক্ষতি হয়। বায়ুমণ্ডলের অনেকগুলাে ওর আছে। তার
মধ্যে পৃষ্ঠের নিকটবর্তী স্তর ঐপােফেয়ার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যার গড় উচ্চতা ১২ কি.মি.। এর।
পরের স্তর হলাে স্ট্যাটোস্ফিয়ার। তারপরের স্তরটি হলাে ওজোন স্তর, যা ২০ কি. মি. পর্যন্ত বিস্তৃত।
ওজোন স্তর সুর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শােষণ করে পৃথিবীর জীবজগতকে রক্ষা করে। ওজোন অর
ক্ষয়ের কারণে ভূপৃষ্ঠে অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব শতকরা পাঁচ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটাও বৈশ্বিক
উষ্ণতা বাড়ার কারণ।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলাে অধিক হারে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার
করে পরিবেশ নষ্ট করছে। তাছাড়া এসব দেশ পারমাণবিক
চুল্লি ব্যবহার করে, যা থেকে প্রচুর বর্জ্য সৃষ্টি হয়। এই বর্জ্যও
গ্রিনহাউস গ্যাস বৃদ্ধি করছে, তবে বৈশ্বিক উষ্ণায়নে এর
ভূমিকা অতি সামান্য। শিল্প-কারখানার বর্জ্য ও কালাে ধোঁয়া
থেকেও প্রচুর পরিমাণে পারদ, সিসা ও আর্সেনিক নির্গত
হয়। এটাও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণ।।
কালাে ধোয়া
মহাসমুদ্রকে পৃথিবীর মানব দেহের ফুসফুসের সাথে তুলনা করা
যায়। বিশ্বের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে মহাসমুদ্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রয়েছে। কিন্তু সমুদ্রে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য নিক্ষেপ করার ফলে তা
দূষিত হচ্ছে এবং এ দূষিত বাষ্প বাতাসে মিশ্রিত হয়েও বৈশ্বিক
উষ্ণায়নে ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের মতাে ক্ষুদ্র একটি
দেশেও এক সময় বহু নদী-নালা, খাল-বিল ও হাওর-বাওর
ছিল যা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত। এখন
এসব ললী-খাল-বিল শুকিয়ে গিয়েছে কিংবা ভরাট করে ফেলা।
সমুদ্রে বর্জ্য ফেলা ও কালাে ধোকা উদগীরণ।
হয়েছে। অনেক নদী ও খাল বর্জ্য ফেলার কাজে ব্যবহৃত হয়।
এভাবে অনেক অনুন্নত দেশেই এসব নদ-নদীর অপব্যবহার
হওয়ায় বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়।

পরিবেশ দূষণের পিছনে যে কারণটি সবচেয়ে বেশি।
করুত্বপূর্ণ তা হলাে বন উজফকরুন। আমরা জানি,
সবুজ উদ্ভিদ বাতাস থেকে কার্বন-জাই-অক্সাইজ গ্রহণ
করে এবং আমাদের জন্য অক্সিজেন ত্যাগ করে। কিন্তু
ব্যাপকহারে বৃক্ষ নিধন ৰা বন উজাড়করণের ফলে
বায়ুমখলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের­ পরিমাণ বেড়ে গেছে।
ফলে বায়ুমহলে ওজোন স্তর ক্ষয়কারী সিএফসি গ্যাশ
অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বর্তমান বিশ্বে ব্যাপক হারে নগর গড়ে উঠেছে। মানুষ
কাজের খোঁজে শহরে ছুটছে। ফলে শহরে জনসংখ্যার
চাপ ও বিভিন্ন প্রকার যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। এসব
যানবাহনের নির্গত কালাে ধোঁয়া হচ্ছে কার্বন-ডাই-
অক্সাইড। তাছাড়া শিল্প-কারখানার কালাে ধোঁয়াও
নগরের বায়ুতে কার্বনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। এটিও
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির একটা কারণ।
কৃষিতে যান্ত্রিক সেচ, নাইট্রোজেন সার, কীটনাশক
প্রভৃতি ব্যবহার করা হয়। এসবের ফলেও বায়ুমণ্ডলের
ওজোন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার প্রভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতা
যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি।
আমরা সপ্তম শ্রেণিতে বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন
সম্পর্কে জেনেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের একটি প্রধান
কারণ বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। এর ফলে পৃথিবীর সর্বত্র আজ
আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশও তা থেকে মুক্ত
নয়। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে বাংলাদেশে পরিবেশ ও
জীবনযাত্রায় যেসব ক্ষতি হতে পারে তা হলাে : |
কৃষিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার
সমুদ্রের পানির উচচতা বেড়ে যাওয়ার ফলে উপকূলবর্তী অঞ্চলসমূহে সমুদ্রের পানি ঢুকে পড়ে। আর
সমুদ্রের লবণাক্ত পানির প্রভাবে গাছপালা, মৎস্যখামার ও শস্যক্ষেতের ক্ষতি হয়। ইতােমধ্যেই এর
প্রভাব লক্ষ করা গেছে। বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলসমূহের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকার কৃষি জমিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে।
জমির উর্বরাশক্তি কমে গেছে। এ কারণে এসব অঞ্চলে কৃষি উৎপাদনও কমে গেছে। অনেক রকম।
মিঠা পানির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে গাছপালা। এর প্রভাব পড়ছে মানুষের জীবন-জীবিকার
উপর। জীবিকার টানে মানুষ শহরমুখী হয়। শহরের উপর ও চাপ বাড়ছে।
সমুদ্রের পানি বৃদ্ধির কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় উচু জোয়ারের সৃষ্টি হয়। যা জলােচ্ছ্বাসের।
আকার ধারণ করে। আবার সমুদ্রে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার কারণে সাইক্লোনের তীব্রতা বেড়ে যায়।
আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইলা” ও “সিডর এর নাম শুনেছি। এ দুটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের |
কারণে আমাদের দেশের উপকূলবর্তী এলাকায় প্রাণহানি ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
খাবার পানির তন্ত্র অভাব দেখা দেয়। ইতােমধ্যে সুন্দরবনের প্রায় এক-চতুর্থাংশ বন নষ্ট হয়েছে।
এর ফলে জীববৈচিত্র্য ও মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।

Related Posts

6 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No