ব্রেকাপ থেকে মুক্তির উপায় 👈
যে মানুষটা আপনার প্রতিদিনের রুটিনের মনের সব কথা যাকে খুলে না বললে ভালো লাগতো না, সেই মানুষটার সঙ্গে কোন কথা হবে না, দেখা হবে না- এমনটা মানা কষ্টকর।
দুই দিক মিলিয়ে সম্পর্কটা বয়ে নেয়া সম্ভব নয় বলেই ব্রেকআপ। তবু এই সময় মানুষ মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করে দেয়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সবাই এই ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। কোন ক্ষেত্রে সময় একটু বেশি লাগে, কারো কম।
*গবেষণায় দেখা গিয়েছে নারী ও পুরুষের মধ্যে ব্রেকআপের কষ্ট বেশি কাবু করে ফেলে নারীকে। পুরুষরা তবে মেয়েরা আবার প্রেম হারানোর যন্ত্রণা
নিজের চিন্তাভাবনা কে পরিবর্তন করুন। তবে এমন সম্পর্ক গড়তে ব্যর্থ হলে আমরা হয়তো সমস্যার । সম্পর্ক বাদ হয়ে গেছে এই মানে নয়, এতে আপনার দোষ আছে। কিন্তু সম্পর্কটাই যে অকার্যকর এবং বিষাক্ত হয়ে উঠেছে সেই সত্যটি স্বীকার করতে চাই না। নিচে কিছু উপায় বলা হলো ঃ
*আবেগি নয় বাস্তব বাদী হন কেউ আপনার কোন বিষয়গুলো পছন্দ করে বা না করে সে ব্যাপারে টেনশন করে অযথা প্রচুর মানসিক এবং আবেগগত শক্তি অপচয় করবেন না। বড় আশা স সব স্বপ্ন, বৃক্করস এবং উম্মাদনা এর সবই শুধু জৈব রাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়ার ফল এবং ক্ষণস্থায়ী।
*আপনি হয়তো এমন কারো সঙ্গে নিজের রসায়ন হয়েছে বলে অনুভব করতে পারেন যিনি আপনার জন্য মারাত্মক। আপনি যদি নিজেকে লালসার অনুভুতির মাঝে হারিয়ে ফেলেন তাহলে বিষাক্ত কোনো সম্পর্কের জালে চিরদিনের জন্য আটকে পড়বেন। তারচেয়ে বরং নির্মোহভাবে নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনি যার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন তার মধ্যে আপনি যেসব গুন চান তার সবকিছু না হলেও অন্তত বেশিরভাগই আছে কিনা।
*ইতিবাচক, এবং উৎসাহদানকারী লোককে সম্পর্কের জন্য বাছাই ঠিক করুন । ক্রমাগত নেতিবাচকতা সম্পন্ন লোকেরা সহজেই একটি সম্পর্ককে বিষিয়ে তুলতে পারে। যারা সচেতনভাবে নিজেদের জীবন মানের এবং ব্যক্তিগত উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন এমন লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক করুন। বন্ধুত করুন
*যারা নিজেদের স্বপ্ন পূরণে এবং জীবনে সাফল্য লাভে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তারা আপনাকেও সফলার দিকেই নিয়ে যাবে । সুখী মানুষেরা তাদের আশে-পাশের লোকদেরকেও স্বাভাবিকভাবেই সফলতার পথ প্রদর্শন এবং পৃষ্ঠপোষকতা করেন। উচ্চ মান ও গুন সম্পন্ন লোকদের সঙ্গ পেলে আপনি আপনার নিজের সবগুলো সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোথায় কোথায় উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে তা জানতে পারবেন
*নিজেকে নিজের সাথে সময় দিতে অভ্যস্ত হন একা হয়ে পড়ার ভয়েই সাধারণত বেশিরভাগ মানুষ বিষাক্ত এবং অকার্যকর সম্পর্কের ফাঁদে আটকে থাকতে চান। প্রথম প্রথম একা থাকা খুবই কঠিন এবং কষ্ট হতে পারে। কারণ আমরা প্রাকৃতিকভাবেই ভালোবাসা এবং অন্যের সঙ্গে সম্পর্কের বন্ধনে জড়াতে অভস্ত । মাথায় রাখবেন অন্যের সঙ্গে একটি সফল এবং পরিপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সফল হওয়ার আগে আপনাকে আগে নিজের সঙ্গেই একটি খাঁটি এবং অটুট সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। একা থাকতে শেখা একটি কঠিন প্রক্রিয়া। তবে বিশৃঙ্খলা এবং নাটকীয়তায় ভরা অস্বাস্থ্যকর সম্পর্কের ফাঁদে আটকে পড়ার চেয়ে একা থাকা অনেক ভালো।
*অন্যের মধ্যে আপনি যা চান নিজেও তা হন কিন্তু তার আগে আপনার নিজেকেও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে হবে। আপনাকেও নিজের প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করতে হবে এবং কথা ও কাজে সততা প্রদর্শন করতে হবে। নিজের সম্পর্কে কোনো গুজব শুনলে সঙ্গে সঙ্গে তা রুখে দাঁড়ানোর মতো অস্তিত্ব সম্পন্ন হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে আপনাকেন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতাহীন অবস্থান ধরে রাখুন। কখনোই সবার সেরা বা ঘনিষ্ঠদেরকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা প্রদর্শন করবেন না। করো সঙ্গে কথপোকথনে পারস্পরিক সম্মানবোধ প্রদর্শন করুন। এবং নিজের কথা বলার চেয়ে বরং তার কথা বেশি শুনুন। লোককে সঙ্গ দেওয়ার মতো মানসিকতা সম্পন্ন হন।
*নিজের চাহিদাগুলো নিজেই পূরণ করা শিখুন নিজের জন্য আপনি নিজেই যা করতে পারবেন তা অন্যকে দিয়ে করাতে যাবেন না। বিশেষ করে নিজের যত্ন এবং নিজের দায়িত্বগ্রহণের ক্ষেত্রে তো অবশ্যই না। কাউকেই শুধু আপনার যত্ন নেওয়ার জন্য সৃষ্টি করা হয়নি। নিজের প্রয়োজন মেটাতে অন্যকে দরকার হওয়ার মানে হলো আপনার জীবন আরো প্রতিকুল হয়ে উঠবে এবং আপনার মধ্যে অতি ভালোবাসা সৃষ্টি করবে। আপনার নিজের জীবনের সমস্যাগুলো আপনি নিজে ছাড়া আর কেউই ভালোভাবে সমাধান করতে পারবেন না।
*আপনি নিজের ক্যারিয়ার গড়ুন। আত্মবিশ্বাসী অনুভুত হবে। এবং এমন জীবন সঙ্গী বা সঙ্গীনি পাবেন যিনি আপনাকে সম্মান করবেন। নিজের জীবনের সরল পথে মাধ্যমেই আপনি আত্ম-ভালোবাসা এবং আত্মসম্মানবোধ গড়ে তুলতে পারবেন। আপনি যদি নিজেকে সম্মান করতে শেখেন তাহলে আপনাকে সম্মান করে না এমন কারো সঙ্গে আপনি সম্পর্কের ফাঁদে আটকা পড়বেন না।
নিজেকে বিশ্বাস করুন
*আপনার দেহেই রয়েছে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় যা অন্যদের শক্তি এবং বাসনা সম্পর্কে পূর্বানুমান করতে সক্ষম। গভীর মনোযোগের সঙ্গে বিষাক্ত বা নাটকীয়তায় আসক্ত হয়ে থাকতে পারে এমন কারো সম্পর্কে সবগুলো সতর্কতা সঙ্কেত পর্যবেক্ষণ করুন। নিজেকে যদি আপনার অপব্যবহারের শিকার মনে হয় তাহলে তা ভালোভাবে বুঝার চেষ্টা করুন। হতে পারে আপনি এমন একটি একতরফা সম্পর্কের ফাঁদে আটকে পড়েছেন যেখানে আপনি একাই শুধু দিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু বিনিময়ে কিছুই পাচ্ছেন না। আপনি যদি অপরাধবোধে আক্রান্ত হন তাহলে বুঝবেন আপনার সঙ্গী বা সঙ্গীনি আপনাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই অনুভুতিতে আক্রান্ত করছে যে, আপনি বুঝি তার কাছে ঋণী। আপনি যদি কারো সঙ্গে থাকার সময়টুকুতে সারাক্ষণই রেগে থাকেন তাহলে বুঝবেন আপনি এমন কারো সঙ্গে আছেন যিনি আপনাকে হেয় করছেন। কেউ চলে যাওয়ার পর যদি আপনি আবেগগতভাবে ভেঙ্গে পড়েন তাহলে বুঝবেন আপনি এমন সম্পর্কের ফাঁদে আটকে পড়েছেন যা পারস্পরিকভাবে উপকারী নয়। আর আপনার মধ্যে যখন কাউকে এড়ানোর আকাঙ্খা তৈরি হবে তাহলে বুঝবেন আপনি অস্বাস্থ্যকর সম্পর্কে জড়িয়েছেন। নিজের প্রতি আপনাকে অবশ্যই দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে।
প্রায় সব দম্পতিই তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় সংঘাতে লিপ্ত হন এবং দ্বিমত পোষণ করেন। কিন্তু তা যদি অনবরত ঘটতে থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনি বিষাক্ত কোনো সম্পর্কের ফাঁদে আটকে পড়েছেন।
*সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপানার সহ্যের একটি সীমা টেনে দিন। এরপরও যদি বারবার একই ঘটনা ঘটে তাহলে আপনাকে হয়তো ওই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে হতে পারে। এতে হয়তো আপনার খারাপ লাগতে পারে কিন্তু এটা না করলে আপনি শুধু নিজের শক্তি ক্ষয় করবেন। এবং আপনার সম্মানবোধ তলানিতে এসে ঠেকবে।
নিজের সীমাগুলো জানুন এবং সেগুলোতে অনড় থাকুন
*আপনি সবসময়ই নিজের অজান্তে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্যদেরকে আপনার সঙ্গে কীভাবে আচরণ করতে হবে তার ইঙ্গিত দেন। এই ইঙ্গিতগুলোই আপনার সীমা বা বাউন্ডারি। এই ইঙ্গিতগুলোই আপনি কতটুকু সহ্য করবেন বা করবেন না তার দিক-নির্দেশনাও বহন করে। সততা, সম্মান এবং নির্ভরশীলতা ইত্যাদিকে আপনি কতটা মূল্যায়ন করেন তার ওপর ভিত্তি করেই লোকে আপনার সঙ্গে যোগযোগ গড়ে তোলে। এছাড়া আপনি নিজের জন্য কতটা জায়গা চান বা একাকী সময় কাটাতে চান অথবা আপনার কতটা শারীরিক ভালোবাসা এবং রোমান্স দরকার সে ব্যাপারেও লোকে বুঝে শুনেই আপনার সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলবে।
আপনি যদি নিজের সীমাগুলোকে নিজেই সম্মান করেন তাহলে অন্যরাও সেগুলো অতিক্রম করা, নিয়ন্ত্রণ করা বা আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করতে আসবে না। আপনি যখন সম্পর্কের ক্ষেত্রে দৃঢ়তার সঙ্গে সীমা টেনে দেবেন তখন দ্রুতই যাদের প্রতি আপনার হৃদয়ে সত্যিকার কোনো রাগ নেই এবং ক্ষমা করতে পারবেন।