Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

ভণ্ড সাধুবাবার ভয়ানক পরিণতি

এটা অনেকদিন আগের কথা। সে সময় ভুতের খুব উপদ্রব ছিল। কিছু হলেই, সবাই বলতো একে ভুতে ধরেছে, ওকে ভুতে হাওয়া করে দিয়েছে, ওখানে যাইস না- ভুত আছে, রাতে কেন বের হুইসিস- ভুতে ধরবে, ইত্যাদি ইত্যাদি।

এমন সময় ভুত তাড়ানোর সাধু বাবাদেরও কদর কম ছিল না। কিছু হলেই, সেই সাধু বাবাদেরকে ডেকে আনা হতো। তারা ঝাড়- ফুক করে কি কি যেন বিড় বিড় করে বলতো। আর রোগীর শরীরে শুধু ফু ফু করতো। কয়েকদিনেই ভুত বাপ বাপ বলে পালাতও।এমন সময় একটা যুবক কোনো কাজ খুঁজে পাচ্ছিলো না। কি করবে তা নিয়ে সে অনেক ভাবনায় পড়ে যায়। হঠাৎ তার মাথায় একটা বুদ্ধি আসে। সে সাধু বাবা সেজে অনেক টাকা আয় করতে পারবে। কিন্তু সাধু বাবা সাজবে কীভাবে?

সে কিছুদিনের জন্য গ্রাম থেকে বের হয়ে গেলো। শহরে পরচুলা, নকল দাড়ি কিনল। আরও সাজ যত লাগে, তার সব কিছুই সে কিনল। তারপর সে একটা সাজগোজের আস্তানায় গিয়ে খুব সুন্দরভাবে সাধু বাবা সেজে নিল। এবার শুধু গ্রামে ফেরার পালা।
সে গ্রামে আসলো। এসেই সে সোজা গ্রামের মোড়লের বাড়িতে চলে গেলো। মোড়ল তো সাধু বাবাকে দেখেই অবাক। সাথে সাথে সে সাধু বাবার চরণ ছুঁইয়ে প্রণাম করলো। আর সাধু বাবাকে তার বাড়িতে থাকার জন্য আহ্বান জানালো।

সাধুবাবা তার জায়গা পাকাপোক্ত করার জন্য নানান ছক কষতে লাগলো। ভণ্ড সাধুর আগমনের কথা গ্রামের সকলের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। তারা দলে দলে অনেক লোক আসতেছে। সাধু বাবাকে দেখে অনেকে তাকে সিজদাও করছে। কেউ কেউ তো তাকে দেবতা বলে ডাকছে।
গ্রামের কিছু লোক তাকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছে না। এই কথাটা ওই ভণ্ড সাধুর কানে গিয়ে পৌছালো। সে চাইলো সবার সন্দেহ দূর করতে। কিন্তু দূর করবে কি করে? ভাবতে ভাবতে তার চান্দু মাথায় একটা বদমাশি বুদ্ধি উঁকি দিলো।

সে গ্রামের সকলকে মোড়লের বাড়িতে ডাকল। আর বলতে লাগলো, “ভাইসব! আমি আমার দৈব দৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছি যে, এই গ্রামে ঘোর অমঙ্গল নেমে আসছে। আজ রাতেই এই গ্রামের কিছু বাড়ি আগুনে পুড়ে যাবে।”
কিছু লোক বলল, “এসবই হচ্ছে এই ভণ্ড বাবার আজগুবি কথা। আমরা কেউই তা বিশ্বাস করি না।”
এবার সাধুবাবা বলল, “তোমরা এবার বুঝতে পারছ তো, এই গ্রামের কিছু মুর্খ লোকের কারণে বিধাতা এমন শাস্তি দিতে চান। এখান থেকে কেউ মুক্তি পাবে না। আমাকে যেহেতু অনেকেই বিশ্বাস করে না, তাই আমি চলে যাচ্ছি। কিন্তু তোমাদের উপর ঘোর বিপদ শুরু হবে আজ রাত থেকেই। চলতেই থাকবে তা দিনের পর দিন।”

সাধুবাবা জানে আজ রাতে সে যখন ২-৩টা বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেবে, তখন সবাই বুঝতে পারবে সাধুবাবার কথা একেবারে ১৬ আনাই সত্যি। ফলে গ্রামের সবাই তাকে বিশ্বাস করবে, সবাই সাহায্য চাইবে। আর কেউই তাকে সন্দেহ করবে না। শুধু আজ রাতের অপেক্ষা।
গ্রামের যারা সাধুবাবাকে সন্দেহ করে, তারা সকলে বুঝতে পারল এটা সাধুবাবার কোনো কলা-কৌশল। তাই তারা রাতে গ্রাম পাহারা দেবার কথা ভাবল। আর ভাবনা অনুযায়ী কাজে লেগে পড়লো।

রাতে সাধুবাবা একটা বাড়িতে আগুন লাগাতে যাবে, অমনিই তারা সবাই ওই সাধুবাবাকে ধরে ফেললো। আর গ্রামের সবাইকে ডাক দিলো। সবাই এসে সাধুবাবাকে এরকম কাজ করতে দেখে খুবই রেগে গেলো। মোড়ল মশাইকে খবর দেওয়া হলো। মোড়ল আসলে, সবাই এই ভণ্ড সাধুর বিচার করতে বলল।

মোড়ল বলল, একে উত্তম মাধ্যম দেওয়া হোক। সবাই এমন উত্তম মাধ্যম দেওয়া শুরু করলো যে, ভণ্ড সাধু মাইরের চোটে মরেই গেলো।
তাই কখনোই লোক ঠকানো উচিত নয়।

Related Posts

11 Comments

Leave a Reply