অফিস থেকে এসে খাওয়া দাওয়া করে একটু রেষ্ট নিচ্ছি আর ফেসবুক চালাচ্ছি।
কিছুক্ষন পর দেখি আম্মু আমার ঘরে
আসলো—
আম্মু: বাবা কি করো??
–এইতো বসে আছি আম্মু, আসেন।
আম্মু: তো আব্বাজান এখন তো বাড়িতে একা একা সময় আমার কাটেনা, আপনার বাবাও সারাদিনে বিচার সালিস আর বাজারে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডায়।
আপনি যান অফিসে বাড়িতে আমি বড্ড একা থাকি।
–ওহ আচ্ছা তো আমায় কি করতে হবে বলেন।
আম্মু: হারামজাদা তুই তো সারাদিনই অনেক কিছু ভাবিস, এবার বিয়েটা করে
ফেল।
–আম্মু কি যে বলো এখনো তো বড়ই হলাম না, দেখো নাক টিপ দিলে দুধ পরবে এখনও!!
আম্মু: দেখ আবির ফাইজলামি করবি না,
তুই এখনো ছোট
আছিস নাকি।
সেই কবে পড়াশুনা শেষ হলো, ভালো চাকরিও
করতিছিস এখন, যদি বিয়ে না করিস তাহলে করবি কবে বল..??
–আম্মু তোমরা আমার এত বিয়ে নিয়ে পরছো কেনো বলতো, আরেকটু বড় হয়ে নিই, তারপর বিয়ে করবো ||
আম্মু: তুই একটু বস তোর জন্য উপহার নিয়ে আসছি আমি, কোথাও যাবিনা।
–হ্যা আম্মু অনেক দিন ধরে উপহার পাই না, যাও নিয়ে আসো|
অতঃপর আম্মু ঘর থেকে বের হয়ে গেলো আর আমি শুয়ে
শুয়ে ফোনে ফেবু চালাচ্ছি, কিছুক্ষন পর দেখি আমাকে কে জানো ঝাড়ু
দিয়ে মারতিছে আর এটা আর কেউ নয়, আমার আম্মু।
–এই ব্যাথা লাগছে তো ?
আম্মু: হারামজাদা বিয়ে করবি কি না বল ?
–আজ একটা শিশুকে বিয়ে করানোর জন্য এভাবে নির্যাতন করতিছো?
আম্মু: তুই বিয়ে করবি না তো তোর বাপ বিয়ে করবে।
–তা করালে করাতে পারো নতুন একটা মা আসবে আমার, হি হি হি হি!!!
আম্মু: তাহলে থাক তুই একা, কোথায় ভাবলাম বাকি জীবনটা বউ নাতি
নাতনির সাথে কাটাবো সেটা মনে হয় আর হবে না।
অতঃপর রাগ করে আম্মু চলে গেলো, মুখটা মলিন করে নিয়ে।
অতঃপর আম্মুর রুমে এসে দেখি আম্মু মন খারাপ করে বসে আছে, আমি তার কাছে গিয়ে
বসলাম আর বললাম-
–ও আম্মু……….|
আম্মু: …………|
— আম্মু তুমি জানোনা তুমি রাগ করলো আমার খুব কষ্ট হয়।
আম্মু: কথা বলবি না আমার সাথে যা।
–আচ্ছা যাও আমি বিয়ে করবো এখন তো একটু হাসো ?
আম্মু: সত্যি তুই বিয়ে করবি..?
–সত্যি! তিন সত্যি, এখন আর রাগ করে থেকো না।
আম্মু: আচ্ছা বাবা তুইই বল এখন বিয়ে না করলে কি বুড়া বয়সে বিয়ে
করবি, তাই তো আমি বেঁচে থাকতেই তোর বিয়েটা দিয়ে যেতে চাই।
–হুম ঠিক আছে, তারাতারি বিয়ে করবো, তারপর তারাতারি তোমাকে
দাদি বানাবো।
আম্মু: তোর বাদরামো টা আর গেলোনা, আচ্ছা তোর কেমন বউ পছন্দ বলতো বাবা..?
–তোমার যেটা পছন্দ হবে তাতেই আমি খুশি।
আম্মু: আজকেই তোর জন্য মেয়ে দেখবো, মেয়েটা গ্রামের থাকে খুব মিস্টি দেখতে।
–গ্রামের কেনো ?
আম্মু: গ্রামের মেয়েরা খুব ভালো হয় বুঝলি বাবা, ওরা খুব সহজ সরল হয়।
–আচ্ছা যেটা ভালো মনে কর তুমি সেটাই করো।
বলেই রুমে চলে গেলাম,
কি আর করার বলুন জীবনে তো একটা প্রেমও করতে পারলাম না তাই ভাবলাম বাবা মা যার সাথে বিয়ে দেয় তাকেই করবো।
অতঃপর পরদিন সকালে ছবি হাতে আম্মু রুমে এসে বললো,,
আম্মু: দেখ তো বাবা মেয়েটা কেমন..?
–টেবিলে রেখে দাও পরে দেখে নিবো।
বিকেলে অফিস থেকে ফিরে ছবিটার কথা মনে পড়তেই টেবিল থেকে ছবিটা হাতে নিয়ে মেয়েটাকে দেখলাম, দেখতে বেশ মিস্টিই লাগলো।
অতঃপর আমার বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়ে গেলো,
আম্মা একদমই বিয়েতে দেরি করতে রাজি নন,
অনেকটা ধুমধামের সাথেই বিয়েটা সম্পন্ন হয়ে গেলো,
বাসর ঘরে ঢুকবো কিন্তু ভয় হচ্ছে, কে জেনো বুকের ভিতরটাই হাতুড়ি দিয়ে দমাদম পিটানি শুরু করে দিয়েছে।
পিছন থেকে বন্ধুরা জোর করে রুমে ঢুকিয়ে দিলো, রুমে ঢুকতেই
দেখি আমার বউ আমার পায়ের উপর ঝাঁপিয়ে পরে সালাম করলো,,
আমি তো ভয়ে পেয়ে গেলাম, বললাম,,,
–এই এই কি করেন এইটা, পা ছাড়ুন, উঠুন।
অতঃপর সে সালাম শেষ উঠে দাড়ালো, তারপর খাঁটে গিয়ে বসলো ঘোমটা টা টেনে দিয়ে।
আমি তখন তার পাশে গিয়ে বসলাম।
–দেখি তো আমার মিস্টি বউ টাকে |
তার ঘোমটা টা সরালাম, চেহারাটা ততটা সুন্দর না কিন্তু খুব মায়াবি আর মিস্টি দেখতে, ছবির চেয়েও বেশী সুন্দর।
–আচ্ছা তোমার নাম কি..?
বউ: মোর নাম ইসরাত জাহান।
কিছুটা অবাক হলাম, ভাবলাম অনেক সুন্দর নাম হবে।
বউ কে আবার বললাম
–জানো তোমার নামটা না অনেক সুন্দর?
বউ: ধন্যবাদ আমনেরে |
এবার তো আরো অবাক হলাম!!
কি ভাষায় কথা বলে এগুলা।
আবার তাকে জিজ্ঞাসা করলাম–
–এই তুমি এভাবে কথা বলো কেনো..?
বউ: ওয়া কি মুই কেরোম কইররা কতা কইতে আছি আয়?
চলবে………।।
::/
লেখক:—নিবিড় আহসান (Failure)