অনলাইন ইনকাম কি বা কাকে বলে, এরকম প্রশ্নের উত্তর জানে না বা এরকম ইনকাম সম্পর্কে কোনো কিছু শুনে নি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন কাজ। বর্তমানে আমাদের চারপাশে যেসব মানুষ অনলাইনে সময় অতিবাহিত করছে, তারা সকলেই অনলাইন আয় সম্পর্কে জানে। কিন্তু, তাদের মধ্য থেকে কতজন এই অনলাইন আয় করছে? খুবই কম পরিমাণে লোক এই অনলাইন আয় সম্পর্কে জেনে তাতে কাজ করছে।
বেশিরভাগ লোকই এই অনলাইন আয় বা ইনকাম সম্পর্কে অবহিত থাকলেও, তারা এই আয় করতে চায় না। তাদের একটা বদ্ধ ধারণা জন্মায় যে, এই অনলাইন আয় বুঝি তাদের দ্বারা সম্ভব নয়। তারা এটার যোগ্য নয়। অনলাইন থেকে টাকা উত্তোলন করতে বড্ড ভেজাল! ইত্যাদি ভুয়া ধারণা তারা তাদের মনে পোষণ করে রাখে। যার ফলে অনলাইনে সময় অতিবাহিত করলেও, তারা অনলাইন আয় করতে বিমুখ।
আবার তাদের মধ্যে অনেকেই আছে, যারা বাস্তবিক কাজে তো অলসই, অনলাইন কাজ করতেও অলসতা প্রকাশ করে। তারা মনে করে, “এতো আয় করে কি হবে? একদিন তো মরেই যাব!” আরে ভাই, মরে তো সবাই যাবে। তবে মরে যাওয়ার আগে ভালো কাজ করে, অন্যদের সাহায্য করে গেলে তো তোমারই লাভ। তুমি যদি আয় না করো, তবে তোমার পরিবারেই তো অভাব আসবে। অন্যদের তখন কি করে সাহায্য করবে?
তখন তারাই আবার যুক্তি দেখাবে, “আমরা এখন ছাত্র। এখন কেন আমরা আয় করব? যখন পড়ালেখা শেষ হবে, তখন চাকরি করে আয় করব।”
তারা তো এটা বুঝে না যে, তারা ছাত্র- ভালো কথা। আয় করার বয়স হয় নি, সেটাও ভালো কথা। কিন্তু, তারাই আবার রাতের পর রাত জেগে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইউটিউব চালিয়ে সময় ব্যায় করে। কাজের কাম তো কিছুই করে না। শুধু ঘুমানোর মতো মূল্যবান সময় তারা অকাজেই ব্যায় করে। স্কুল, কলেজ যাওয়ার সময় তারা ঘুমায়। ফলে পড়ালেখা তো আর হলো না।
পড়ালেখা না করে, অকাজে শুধু অনলাইনে সময় নষ্ট করে তারা কি করে চাকুরি পাবে? এমনিতেই এখন চাকুরির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা খুব। যারা ভালো ছাত্র, তাদেরই তো কপালে অনেক সময় চাকুরি যুটে না। তার উপর ভালো পড়ালেখা না করে, তারাই আবার চাকুরি করার স্বপ্ন দেখে। কি হাস্যকর ব্যপার!
আবার অনেকেই বলে, “আমি চাকুরি-বাকুরি কিছুই করব না। আমার বাবার এতো সম্পদ আছে কিসের জন্য? আমি সেই সম্পদ বসে বসে খেলেও শেষ করতে পারব না।”
তাদের শুধু একটা কথাই বলে যাই। “বসে বসে খেলে রাজার সম্পদ ফুরতেও সময় লাগে না।”
অন্যদিকে তাদের সমবয়সী বা তাদের থেকে ছোটরা ঘরে বসেই লাখ লাখ টাকা আয় করছে শুধুমাত্র অনলাইনে কাজ করে। তাদের মধ্যে যারা ছাত্র, তারা পড়ালেখার পাশাপাশি পার্ট টাইম জব হিসেবে এই অনলাইন আয় করছে। আমি আমার এক বন্ধুরই কথা বলছি। তার নাম “ইবরাহীম খলিল”। সে ২০২০ সাল থেকেই ফ্রি-ল্যান্সিং করতে শুরু করে। এখন মাসে সে ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় করছে অনায়াসে।
অনেকেই বলতে পারে, তার পড়ালেখার তাহলে কি হচ্ছে? সে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। আর গোল্ডেন নাম্বার পেয়ে উত্তীর্ণও হয়েছে। সে এই অনলাইন আয়কে তার পড়ালেখার পাশাপাশি পার্ট টাইম জব হিসেবে মনে করে। আর সে অনুযায়ী কাজও করছে।
কিন্তু ১মে যাদের কথা বললাম, তারা পড়ালেখা তো করছেই না, বরং; অযথা অনলাইনে সময় ব্যায় করছে। আমাদের দেশের অধিকাংশই অকাজে অনলাইনে তাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করছে। তোমাদের বিশ্বাস না হলে পরিসংখ্যান করে দেখতে পারো- আমাদের দেশে কতজন অনলাইনে রাতের পর রাত পার করছে, আর তাদের মধ্য থেকে কতজন কাজের কাজ করছে।
পরিশেষে সবার উদ্দেশেই একটা কথা বলি, ডিজিটাল যুগের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে আমরা অনলাইনে অযথা সময় নষ্ট করলে, আমাদের দেশ নিশ্চিত পিছনে পড়ে যাবে। তাই আমাদের উচিত অনলাইনে অকাজের কাজ না করে, কাজের কাজ কিছু করি। তবেই আমাদের দেশ উন্নত আয়ের দেশে পরিণত হবে। এসো,
“ভুয়া ধারণা ত্যাগ করি, অনলাইনে আয় করি!”