“নেকলেস “
মূলঃ গী দ্যা মোপাসা
অনুবাদঃ পূর্ণেন্দু দস্তিদার
সে থতমতভাবে বলল । কী হলাে ? কী হলাে তােমার ? …. …..
প্রবল চেষ্টায় মেয়েটি নিজের বিরক্তি দমন করে , তার সিক্ত গণ্ড মুছে ফেলে শান্ত কণ্ঠে জবাব দেয় । ” কিছুই না । শুধু আমার কোনাে পােশাক নেই বলে আমি ঐ ব্যাপারে যেতে পারব না । তােমার যে কোন । সহকর্মীর স্ত্রীর পােশাক আমার চেয়ে যদি ভালাে থাকে , কার্ডখানা নিয়ে তাকে দাও । ‘ সে মনে মনে দুঃখ পায় । তারপর সে জবাব দেয় :
“ মাতিলদা , বেশ তাে চল আলাপ করি আমরা । এমন কোনাে পােশাক , অন্য কোনাে উপলক্ষেও যা দিয়ে কাজ চলবে অথচ বেশ সাদাসিধা , তার দাম কত আর হবে ? কয়েক সেকেন্ড মেয়েটি চিন্তা করে দেখে এমন একটি সংখ্যার বিষয় স্থির করল যা চেয়ে বসলে হিসাবি । কেরানির কাছ থেকে সঙ্গে সঙ্গে এক আতঙ্কিত প্রত্যাখ্যান যেন না আসে । শেষপর্যন্ত ইতস্তত করে মেয়েটি বলল ;
“ আমি ঠিক বলতে পারছি না , তবে আমার মনে হয় চারশ & হলে তা কেনা যাবে । ‘ শুনে তার মুখ ম্লান হয়ে গেল । কারণ , তার যেসব বন্ধু গত রবিবারে নানতিয়ারের সমভূমিতে ভরতপাখি শিকারে গিয়েছিল , আগামী গ্রীষ্মে তাদের সঙ্গে যােগ দেওয়ার ইচ্ছায় একটি বন্দুক কিনবার জন্য ঠিক ততটা অর্থই সে সঞ্চয় করেছিল । তা সত্ত্বেও জবাব দিল । বেশ ত । আমি তােমায় চারশত ট্রা দেব । কিন্তু বেশ সুন্দর একটি পােশাক কিনে নিও।
‘ ‘ বল ’ – নাচের দিন যতই এগিয়ে আসতে থাকে ততই মাদাম ললাইসেলকে বিচলিত ও উদ্বিগ্ন মনে হয় । অবশ্য তার পােশাক প্রায় তৈরি হয়ে এসেছে । একদিন সন্ধ্যায় তার স্বামী তাকে বলল : তােমার হয়েছে কী ? গত দুই – তিন দিন ধরে তােমার কাজকর্ম কেমন যেন অদ্ভুত ঠেকছে । ‘ শুনে মেয়েটি জবাব দেয় , আমার কোনাে মণিমুক্তা , একটি দামি পাথর কিছুই নেই দিয়ে আমি নিজেকে সাজাতে পারি । আমায় দেখলে কেমন গরিব গরিব মনে হবে । তাই এই অনুষ্ঠানে আমার না যাওয়াই ভালাে হবে । ‘ স্বামী বলল , “ কিছু সত্যকার ফুল দিয়ে তুমি সাজতে পার । এই ঋতুতে তাতে বেশ সুরুচিপূর্ণ দেখায় । দশ ফ্রা দিলে তুমি দুটি কি তিনটি অত্যন্ত চমৎকার গােলাপফুল পাবে । ‘
মেয়েটি ঐ কথায় আশ্বস্ত হলাে না । সে জবাবে বলল , না , ধনী মেয়েদের মাঝখানে পােশাকে – পরিচ্ছদে ঐ রকম খেলাে দেখানাের মতাে আর বেশি কিছু অপমানজনক নেই ।
তখন তার স্বামী চেঁচিয়ে উঠল : ‘ আচ্ছা , কী বােকা দেখত আমরা ! যাও , তােমার বান্ধবী মাদার ফোরসটিয়ারের সঙ্গে দেখা করে তাকে বল তার জড়ােয়া গহনা যেন তােমায় ধার দেয় । এটুকু আদায় করার তাে তার সঙ্গে । তােমার পরিচয় যথেষ্ট ।
‘ সে আনন্দধ্বনি করে উঠল ।
তারপর সে বলল । সত্যিই তাে ! এটা আমি ভাবিনি । ‘ পরদিন সে তার বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে তার দুঃখের কাহিনি তাকে বলল । মাদাম ফোরসটিয়ার তার কাচের । দরজা লাগানাে গােপনকক্ষে গিয়ে বড় একটি জড়ােয়া গহনার বাক্স বের করে এনে তা খুলে বলল : ‘ ভাই , যা ইচ্ছা এখান থেকে নাও ।
‘ সে প্রথমে দেখল কয়েকটি কঙ্কন , তারপর একটি মুক্তার মালা ও মণিমুক্তা – খচিত চমক্কার কারুকার্য – ভরা একটি সােনার ভিনিশার ‘ কুশ ‘ । আয়নার সামনে গিয়ে সে জড়ােয়া গহনাগুলি পরে পরে দেখে আর ইতস্তত করে , কিন্তু ওগুলি নেওয়ার সিদ্ধান্তও করতে ছেড়ে যেতেও পারে না । তারপর সে জিজ্ঞাসা করে । “ আর কিছু তােমার নেই ? ” কেন ? আছে , তােমার যা পছন্দ তুমি তা বেছে নাও ।
“চলবে”
গল্পের প্রথম পার্ট দেখার জন্য ভিজিট করুনঃ https://grathor.com/%e0%a6%ae%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%8f%e0%a6%95-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a5%a4/