“মাত্রাতিরিক্ত চিন্তা” এটি এমন একটি সমস্যা যা আপনার সুন্দর জীবন টাকে একেবারে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
আমাদের ব্রেইন বারবার সেটাই আমাদের মনে করায় যা আমাদের মন ভুলতে পারেনা। আমাদের ব্রেইন সবসময় কোন না কোন কিছু ভাবতে থাকে। আমরা যখনই কোনো কিছু ভাবি এখান থেকে আমরা অন্য কিছু চিন্তা নিয়ে আসে। তখন আবার আমরা সেটাকে ভাবতে শুরু করি। আবার তার মাস থেকে আমরা অন্য কিছু ভাবা শুরু করি। আর এভাবেই ভাবতে ভাবতে আমরা এমন জায়গায় পৌঁছে যাই যার সাথে বর্তমান জীবনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের মনে হয় আমাদের ব্রেইর আমাদের সাথে খেলা করে। বারবার আমাদের সেটাই মনে করায় যা আমরা ভুলে যেতে চাই। কিন্তু এটাও সত্যি, কেবল আপনার ব্রেইন চাইলেই আপনি কোন কিছু ভুলে যেতে পারবেন না। কারণ আপনাকে মন থেকে মানতে হবে যে আপনি সত্যি ভুলতে চান। কারণ ব্রেইনের কাজ হল লজিক্যালি চিন্তা করা। আর মনের কাজ হল অনুভূতিকে বোঝা। আর যতক্ষণ না আপনি মনকে মানাতে পারবেন ;আপনি সেটাকে ভুলতে পারবেন না। অর্থাৎ একদিকে আপনি ভাবছেন তাকে ভুলতে হবে আর অন্যদিকে আপনি তা নিয়েই চিন্তা করছেন বা তার কারণে আপনি অন্য কিছু করতে পারছেন না; এটাকেই বলে “মাত্রাতিরিক্ত চিন্তা”।
মাত্রাতিরিক্ত চিন্তা কখনোই হঠাৎ করে আসে না। মাত্রাতিরিক্ত চিন্তা হলো সেটা, যখন আমাদের ব্রেইনে কিছু চলে আর মনে অন্য কিছু চলে। যখন আপনি মাত্রাতিরিক্ত চিন্তাকে দূরে ঠেলে দিতে পারবেন; তখন আপনি অনেক শান্তি অনুভব করবেন।
তাই সবার আগে আপনাকে বুঝতে হবে প্রবলেমটা কোথায়? আপনার ব্রেইন কি চাইছে আর আপনার মন কি চাইছে? যদি আপনি কেবল মনের কথা শোনেন, তাহলে সেটা আপনাকে সমস্যাতে ফেলবে। কারন মনের কাজ চিন্তা করা নয়। এর কাজ হলো কেবল অনুভূতি অনুসারে ভালোবাসা ও ঘৃণার পরিস্থিতি তৈরি করা। আর এটা কতটা সঠিক, কতটা ভুল ;সেটা আপনার ব্রেইন ঠিক করবে। তাই সবার আগে ব্রেনের কথা শুনুন যে সে কি চায়? কি সমস্যা আছে, যাতে করে আপনার মন সেটাকে গ্রহণ করতে পারে আর আপনি এই মাত্রাতিরিক্ত চিন্তা থেকে সহজে বেরিয়ে আসতে পারেন।
যখন আপনার মাত্রাতিরিক্ত চিন্তা অনেক বেশি হয়ে যাবে অর্থাৎ আপনি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না যে কি করবেন আর কি করবেন না। তখন সেটাকে ওখানেই ছেড়ে দেন। সেটাকে বারবার বলা বা চিন্তা করা বন্ধ করুন। সময়ের ব্যবধানে তা ঠিক হয়ে যাবে।
কোনো সমস্যার সমাধান খোঁজা বন্ধ করুন। আমরা বেশি চিন্তা এই কারণেই থাকি, কারন আমরা কোন না কোন প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি। আমরা ভাবি, সে আমার সঙ্গে এমন টা কেন করলো? আমি এখন কি করবো? যদিও আপনার যা করার সেটা আপনি আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেবল আপনি সেটা মানতে বা বুঝতে চাইছেন না। কারণ আগেই বললাম যে আমাদের ব্রেইন কিছু চাই আর আমাদের মন কিছু চায়। তাই এদেরকে যুক্ত করুন ; তাহলে আপনি একটি নতুন রাস্তা পাবেন। যেমন নদী যখন পাহাড় থেকে চলা শুরু করে, তখন সে জানে না কোন দিক দিয়ে যাবে। সে কেবল চলতে থাকে আর রাস্তা অটোমেটিক তৈরি হতে থাকে। একই ভাবে আপনাকে সবসময় কোন না কোন সমাধান খুঁজতে হবে না। সমাধান আপনার কাছে আছে।
এরপর হলো, কালকের চিন্তা না করে আজকে চিন্তা করুন। নিজের উপরে মনোযোগ, নিজের খেয়াল রাখা, নিজেকে ভালোবাসা, নিজের চিন্তাকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া, নিজের কাজে মন দেওয়া, নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া, এক্সারসাইজ করা ;কেবল এই সব কিছুতে মনোযোগ দেন। এতে আপনার শরীরে একটি আলাদা প্রাণশক্তি অনুভব করতে পারবেন। আর আপনি নিজেকে অনেক শক্তিশালী করবেন। এইধরনের নতুন উদ্যোগগুলো আপনার জীবনে পরিবর্তন এনে দিতে পারে এবং মাত্রাতিরিক্ত চিন্তা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
আশা করবো জীবনের সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠে আমরা এগিয়ে যেতে পারবো এবং অন্যকেও উৎসাহিত করবো।
কেমন লাগলো জানাবেন। আর ভালো লাগলে কমেন্ট ও শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।
আগের লেখাটি পড়তে ক্লিক করুন। [ অনুকরণ নয়; বরং অনুভবেও জীবনটাকে এগিয়ে নিতে হয়]