পৃথিবীর সবচেয়ে নিপুন ও জটিল সৃষ্টি মানব দেহ । বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়তই গবেষনা করছে মানব দেহ নিয়ে ফলে অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে আসলেও এখনো সম্পূর্ন মানব দেহ নিয়ে কোন বিজ্ঞানীই পূর্নাঙ্গ তথ্য বের করতে সক্ষম হয় নী । আর অনেকের গবেষনার ফল সরুপ বেরিয়ে আসছে অনেক অজানা তথ্য যা পুরো বিশ্বকে অবাক করে দেয় । মানব দেহ নিয়ে যেমন জল্পনা কল্পনার শেষ নেই ঠিক এতি নিয়ে তথ্যেরো শেষ নেই ।
তাই চলুন আজ জেনে নেয়া যাক মানব দেহ নিয়ে কিছু অজানা তথ্য ঃ-
মানব মস্তিসকে ১০০ মিলিয়নের মত নিউরন বা স্নায়ুকোষ কয়েছে । আমাদের হাঁসি, কান্না, চিন্তা, ভাবনা, নরাচরা সব কিছু সম্ভব হচ্ছে এই নিউরন কোষগুলোর মধ্যে রাসায়নিক ও বৈদ্যুতিক সংকেত আদান প্রদানের ফলে । যদি এ সকল নিউরনের বৈদ্যুতিক সংকেত গুলো একত্র করা সম্ভব হয় তবে তা দিয়ে একটি ১০ ওয়ার্টের বাতি জ্বালানো সম্ভব । আমাদের মস্তিষ্ক ব্যাথা অনুভব করতে পারে না যখন আমাদের শরিলের কোন অংশে ব্যাথা লাগে তখন সেই অংশের সেন্সর মস্তিষ্কে তথ্য পাথায়, তারপর মন্তিষ্ক বুঝতে পারে হে’ ওহানে চোট লেগেছে আর এটার জন্য কতটা ব্যাথা হওয়া উচিৎ তা ঠিক করে । কিন্তু আপনি কি জানেন যদি আমাদের মস্তিষ্কে চোট লাগে তখন মস্তিষ্ক ব্যাথা অনুভব করতে পারে না । কারন মস্তিষ্ক নিজেকে তথ্য পাঠাতে পারে না । হয়ত এটা আপনার বিশ্বাস হচ্ছে না, কিন্তু এটাই সত্যি । যখন ব্রেইন সার্জারি করা হয় তখন রোগি অজ্ঞান হয় না, বরং তখন সে জেগে থাকে । আমাদের মস্তিষ্কের শতকরা ৮০ ভাগ হচ্ছে পানি । মন্তিষ্ক রক্তে মিশ্রিত ২০% অক্সিজেন ব্যবহার করে । মন্তিষ্কর দিনের তুলনায় বেশি কাজ করে এবং রাতে অনেক সক্রিয় থাকে । একজন মানুষের স্নায়ুতন্ত্র এতই বড় যে, তা দিয়ে পৃথিবিকে সাতবার পেচানো যাবে । কোন অনুভূতি স্নায়ুতন্ত্রের মধ্য দিয়ে ঘন্টায় ২০০ মাইল বেগে প্রবাহিত হয় । দেহে ও মনে কোন অনুভূতি আসলে তা মস্তিষ্কে পৌছাতে ০ দশমিক ১ সেকেন্ড সময় লাগে । বিজ্ঞানীরা মনে করেন যারা যত বেশি স্বপ্ন দেখে তাদের আইক্লু তত ভালো । একজন মানুষের শরলে রক্তের পরিমান তার মোট ওজনের ১৩ ভাগের ১ ভাগ । অর্থাৎ কোন ৬৫ কেজ ওজনের একজন মানুষের রক্তের পরিমান হল ৫ কেজি । একটি রক্ত কোষ মাত্র ৬০ সেকেন্ডে পুরো শরিল প্রদক্ষিন করতে পারে । এক স্থান থেকে শুরু করে সমগ্র শরিল ঘুড়ে আসতে একটি রক্ত কনিকা ১ লক্ষ কিঃমিঃ পথ অতিক্রম করে অর্থাৎ যা প্রায় আড়াই বার পৃথিবী অতিক্রম করার সমান । আমাদের দেহের সব রক্ত নালিকে যদি জোড়া লাগানো হয় সেটার দোর্ঘ প্রায় ৬০ হাজার মাইলের মত হবে । আর পৃথিবীর চার পাশে একবার ধুরে আসের দূরত্ব হল ২৫ হাজার মইলের মত । তার মানে কোন মানুষের সব রক্ত নালী জোড়া লাগালে পূরো পৃথিবী ২ বার পেচিয়ে নেয়া যাবে । দেহে অক্সিজেন সরবরাহকারি লোহিত রক্ত কনিকার পরিমান আড়াই হাজার কোট এবং এরা ৪ মাস বাচে । রোগ প্রতিরোধ কারি শ্বেত রক্ত কনিকার সংখ্যা আড়াইশ কোটি এবং এরা মাত্র ১২ ঘন্টা বাচে । হৃপিন্ড রক্ত সঞ্চালনের জন্য যে চাপ দেয় তারে ৩০ ফিট দূরে রক্ত যেতে পারবে । মহিলাদের হৃদস্পন্দন পুরুষের চেয়ে দ্রুত । মানুষের ডান ফুসফুসের চেয়ে বাম ফুসফুস আকারে ছোট । আমাদের পাকস্থলিতে যে হাইড্রোক্লোরিক এসিড পাওয়া যায় তা ধাতু গলাতেও সক্ষম । বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ রকমের কাজ খুজে বের করেছে । একজন শিশুর জন্মের সময় দেহে হার থাকে ৩৫০টি কিন্তু পূর্নাঙ্গ দেহ অর্থাৎ বড় হলে ২০৬টি হার নিয়ে গঠিত হয় মানব দেহ । একটি ভ্রুমের গর্ভে আসার ৩ মাসের মাথায় তার ফিঙ্গার প্রিন্ট তৈরি হয়ে যায় । আর আমাদের জন্মের ৬ মাস আগে থেকেই আমাদের দাঁত উঠার প্রক্রিয়া শুরু হয় । যদিও সেটা মাড়ির বাইরে আসতে আসতে আমাদের বয়স এক বছর হয়ে যায় । আমাদের চোখ সবসময় আকারে একই থাকে কিন্তু কান ও নাক বৃদ্ধি পাওয়া কখোনই থেমে থাকে না । আমাদের মস্তিষ্ক প্রায় ১০ হাজারটি গন্ধ চিনতে ও মনে রাখতে পারে ।