সম্প্রতি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে কিছু ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে যার মধ্যে দেখা যায় একজন নারী এবং এক কিশোরের ক্রিকেট খেলার কিছু মুহূর্ত।রাজধানীর পল্টন এলাকায় ছেলের সাথে মায়ের ক্রিকেট খেলার এই দৃশ্য ব্যাপক ভাইরাল হয়।ছবিতে দেখা যায়,মা-ছেলের ক্রিকেটের এক পর্যায়ে মাকে আউট করতে পেরে ছেলে আনন্দে আত্মহারা।কিন্তু মা-ছেলের সেই আনন্দদায়ক মুহূর্ত ছাপিয়ে মুখ্য হয়ে উঠে মায়ের পোশাক নিয়ে সমালোচনা।উল্লেখ্য, এইসব ছবিতে মায়ের পরনে ছিল একজাতীয় বোরকা(“খিমার”)।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।এক পক্ষ ওই নারীর বোরকা পরিহিত হওয়ার কারণে সমালোচনা করে বলছেন,ওই নারীকে কোনভাবেই একজন বাংলাদেশি মায়ের প্রতিচ্ছবি বলা যায়না।সমাজ পরিবর্তনের জন্য ক্রিকেট খেলতে নামলে তিনি কখনোই বোরকা পরতেন না।তাকে দেখে আফগানী কিংবা পাকিস্তানি মায়ের মত মনে হচ্ছে বলে সমালোচনা করেন তারা।
আবার অনেকে এই মায়ের প্রতি সাধুবাদ জানিয়েছেন এই বলে যে,ভদ্রমহিলাটির পোশাক মুখ্য নয়।সন্তানকে আনন্দ দিতে এক মায়ের ব্যাট হাতে নামা একজন প্রফেশনালকে ও হার মানায়।পোশাক যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে মনে করেন তারা।তাদের মতে,বাঙালিদের ক্রীড়াপ্রেম এই ছবির মাধ্যমে প্রমানিত হয়।পর্দা করা মানেই রক্ষণশীলতা,প্রতিবন্ধকতার বেড়াজালে নিজেকে বন্দী করা নয়,এই ছবি তাই প্রমান করে বলে জানান তারা।
অনেক ব্যাবহারকারী সামাজিক মাধ্যমে এইসব সমালোচনাকারীদের নারীর পোশাক বিবেচনা না করে মা-ছেলের স্বতঃস্ফূর্ত ও সাবলীল ভালবাসা দেখার আহ্বান জানান।বিষয়টিকে তির্যক মন্তব্যের মাধ্যমে বিকৃত না করে সহজভাবে নেয়ার কথা বলেন তারা।
জানা গেছে,ছবির মহিলাটির নাম ঝর্না আক্তার এবং সাথে কিশোরটি তার ছেলে।ছেলের নাম ইয়ামিন।সন্তানের আবদার রাখতে তিনি প্রায় সময়ই ব্যাট হাতে নেমে পরেন।তিনি জানান তাদের বাসার নিচেও ক্রিকেট খেলায় মেতে ওঠেন মা-ছেলে।যেমনটা হয়েছিল সেদিন পল্টন ময়দানে।
গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,ছবি ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় তিনি মোটেও ক্ষুব্ধ নন।বরং এতে তিনি খুশি হয়েছেন।তিনি একসময় এথলেট ছিলেন এবং তার স্বপ্ন ছেলে ও খেলাধুলায় একদিন অনেক এগিয়ে যাবে।তিনি জানান তার ভাই একজন জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড় ছিলেন।
পোশাক নিয়ে সমালোচনার প্রেক্ষিতে ঝর্না আক্তার বলেন,যারা সমালোচনা করছেন তারা ভুল করছেন।তারা মুল বিষয়টি বুঝতেই পারেননি।কিন্তু এতে তার কোন সমস্যা নেই বলে জানান তিনি।মা হয়ে সন্তানের আবদার রাখতে বোরকা পরে ক্রিকেট খেলাতে তিনি কোন দোষ দেখেন না।সন্তানের আনন্দের জন্য মায়েরা যেকোনো কাজ করতে পারেন বলে তিনি মনে করেন।ছেলের মন রক্ষার্থে পর্দা করে মাঠে নামতেও কোন ভ্রূক্ষেপ নেই এই মায়ের।