সারাদিনের ক্লান্তি আর মিথ্যে সাধনের পর ঘুমটাই যে সর্গতুল্য তা বোধহয় কারোর ই অজানা নয়। যদিও প্রত্যেকে ঘুমে অভ্যস্তও নয়! রাত নামলেই সবাই ঘুমিয়ে পরে না। কেউ কেউ রাতের পর রাত কাটিয়ে দিচ্ছেন চাঁদ দেখে আবার কেউ সেরে নিচ্ছেন প্রয়োজনীয় কাজ। কেউ আবার মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখছেন নানান কবিতা, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার কারো কারো ডাক নাম হয়ে যাচ্ছে রাত-জাগা রোগী। যদিও এটি কোন রোগ না তবুও সমাজে প্রচলিত কথা থেকে বলতেই হয়, রাত-জাগা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। রাত জাগার ফলে হতে পারে মরণব্যাধি ক্যান্সার,তা জেনেও রাতের পর রাত চোখ পরে থাকে ফোন এর স্ক্রিনে। কিন্তু কোনো কোনো সময় ক্লান্তি এতটাই ঘায়েল করে যে,তারা ভুলেই যায় রাত এখনও একটুও গভীর হয়নি। ফলস্বরূপ একটু প্রশান্তি লাভ।
চাঁদ দেখা যার স্বভাব তাকে কি বলা যায়? চাঁদ দেখা আর তার সাথে কল্পনায় সুখ উপলব্ধি করতে সবাই পারে না৷চাঁদ প্রেমি একটা মানুষ যদি রাত্রি শেষ প্রহরের চাঁদ দেখার সুযোগ পায়! ব্যাপার টা কীভাবে দেখবে সবাই জানি না৷ কিন্তু নিঃসন্দেহে তার জন্য তা হবে সর্গতুল্য-সুখকর মুহুর্ত; ঠিক যেমন ক্লান্তি শেষে ঘুম৷
রাত অগণিত লেখকের প্রধান মাধ্যম। কত কবিতা, কত প্রবন্ধ, কত উপন্যাস ই না লেখা হয়েছে এই রাত নিয়ে। কোথায় নেই রাতের উপস্থিতি? মামুষের মন থেকে শুরু করে কাগজের পাতা আর বাস্তবিক অর্থে! সবখানেই আছে রাত কারণ রাতের সৌন্দর্য যে অসীম!
রাত যত গভীর হয় ,আত্ম উপলব্ধির ক্ষমতাটা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। নিজেকে উপলব্ধি করার সবচেয়ে কার্যকরী মাধ্যম হলো রাত। রাতের নিস্তব্ধতা নিজকে একা করে গভীর ভাবে ভাবতে শেখায়। যা কোলাহলময়ী দিনে সম্ভব না কোনোভাবেই। রাতকে উপভোগ করতে হবে আমাদের। কোন কিছু উপভোগ করতে পারাটা অনেক বড় পাওয়া, যা সবাই পারে না। যেমন বৃষ্টির দিনে সবাই বৃষ্টিকে গালি দেয়, কিন্তু ক’জন আছে যারা বৃষ্টি উপভোগ করে! যারা উপভোগ করতে পারে তারাই বুঝবে উপভোগের পাওয়া কতখানি। যারা উপভোগ করতে পারে না তারা তা বুঝবেই না।
সৃষ্টিকর্তার কী অপরূপ সৃষ্টি! সৃষ্টিকর্তা কতই না সুশ্রী মিশ্রণ এই রাত। কত সুন্দর করেই না সাজিয়ে দিয়েছেন তিনি এই রাতকে৷ হাজারো নক্ষত্র মাঝে চন্দ্র,অনুতপ্ত আর উপলব্ধিতে ভরা রাত।রাত উপহার দেয় সব অদ্ভুত আনন্দ,শুধু আনন্দই নয়,তার বিপরীত টাও।রাতটা আসলেই খুব অদ্ভুত।যতটা সুন্দর, ততটাই স্বার্থপর। কেননা রহস্যময় সব প্রশ্নের মুখোমুখি করে নিজেই কোথায় যেনো পালিয়ে যায়!