অনেকেই অনিদ্রারোগে ভোগেন। রাতে ঘুমাতে গেলে সহজে ঘুম আসতে চায় না। বিছানায় পাশ কাটতে সময় চলে যায়। যা শারীরিক ও মানসিক নানান সমস্যার সৃষ্টি করে। স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করা দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। ফলে একঘেয়েমি বেড়ে যায়। অনেকে আবার ঘুমের সমস্যা থেকে রক্ষা পাবার জন্য ওষুধ খায়। কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখবেন, ঘুমের ওষুধের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনে। তাহলে উপায় কি এই সমস্যার কোনো সমাধান নেই? আছে!
ভারতীয় সংবাদপত্র জি নিউজ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু সাধারণ খাবার ঘুমের ওষুধের বিকল্প হতে পারে। সেসব খাবারের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। আপনি নির্ভয়ে এবং ঘুমের সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে এই খাবারগুলি খেতে পারেন। তো চলুন জেনে নেয়া যাক খাবার গুল সম্পর্কে-
হালকা গরম দুধঃ হালকা গরম দুধ ঘুমের ওষুধের বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে। যারা রাতে ভাল ঘুমাতে পারে না বা বিছানায় পাশ কাটাতে কাটাতে সময় নষ্ট করছেন তারা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটু গরম দুধ খেয়ে নিতে পারে। দুধে ট্রাইপটোফান এবং অ্যামিনো এসিড থাকে, যা শরীরে ঘুমের আবেশ ঘটায়। উপরন্তু, দুধের ক্যালসিয়াম মস্তিষ্কে ট্রাইপটোফান ব্যবহার করতে সাহায্য করে। এক গ্লাস দুধ পান করলে মানসিক চাপ কমে যায় এবং শরীরকে কিছুটা শিথিল করে। তাই ঘুম সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়ে যায়।
কলাঃ কলা খাওয়ার ফলে রাতে ঘুম ভাল হয়। কলায় ম্যাগনেসিয়াম আছে, যা পেশী শিথিল করে। এছাড়া কলা খেলে মেলাটোনিন এবং সেরোটোনিন হরমোন নির্গত হয় যার ফলে সহজেই ঘুম আসে। তাই যারা ঘুমের সমস্যা ভুগছেন তারা রাতে কলা খেয়ে ঘুমাতে পারেন।
মধুঃ মস্তিষ্কে ওরেক্সিন নামের একটি নিউরোট্রান্সমিটার আছে, যা মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে এবং ঘুম বিঘ্নিত করে। রাতে ঘুমানোর আগে মধু খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কে গ্লুকোজ প্রবেশ করে এবং ওরেক্সিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, যা দ্রুত ঘুমাতে সাহায্য করে।
আলুঃ রান্না করা আলু একটি ভাল ঘুমের জন্য সহায়ক খাবার হতে পারে। আলু খাওয়ার ফলে ট্রাইপটোফানের সাহায্যে হাই তোলায় বাধা সৃষ্টিকারী এসিড ধ্বংস হয়ে যায়। ফলস্বরূপ, মস্তিষ্ককে দ্রুত ঘুমাতে সাহায্য করে।
ওটমিলঃ যাদের ওজন বৃদ্ধিজনিত সমস্যা আছে তারা সাধারণত ওটমিল খায়। ওটমিলে রয়েছে মেলাটোনিন, যা ঘুমাতে সাহায্য করে। সুতরাং, রাতে আপনি ওটমিল খেতে পারেন। এতে করে আপনার ঘুম সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করা যায়।
চিনাবাদামঃ রাতের ঘুমের জন্য আরেকটি দরকারী খাবার হলো চিনাবাদাম। যাদের রাতে ঘুমাতে সমস্যা হয় তারা প্রতি রাতে ১০-১২টি বাদাম খেতে ঘুমাতে পারেন।
আর একটি বিষয় অবশ্যই মেনে চলবেন সেটি হলো বিকাল চারটা পর চা বা কফি থেকে দূরে থাকা চেষ্টা করুন। চা বা কফিতে থাকা ক্যাফেইন মস্তিষ্ককে জাগ্রত রাখতে সাহায্য করে।