আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো। আজকে আমি নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হজির হয়েছি। আশা করি সবার উপকারে লাগবে।
হলুদ,, যা শত শত বছর ধরে নিত্য অতি প্রয়োজনীয় একটি মসলা জাতীয় দ্রব্য হিসেবে রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু আদিতে মানুষ রান্নার ক্ষেত্রে হলুদ বাটা ব্যবহৃত করত। কিন্তু যুগের পরিবর্তনের সাথে মানুষ এখন বাটা হলুদের পরিবর্তে বাজারে পাওয়া যায় এমন প্যাকেট জাত গুঁড়া হলুদ রান্নার কাজে ব্যবহার করছে।
সে যাই হোক আজকে আমি যে বিষয়ের উপর আর্টিকেল লিখেছি তা হলো— রূপচর্চায় হলুদের কিছু অতুলনীয় উপকারিতা। হলুদ বলতে গেলে একটি ন্যাচারাল কসমেটিকস। এটি গায়ের রঙ যেমন উজ্জ্বল করে, তার সাথে বিভিন্ন চর্ম রোগের সমস্যা যেমন অ্যালার্জি, ব্রণ, র্যাশ ইত্যাদিও দূর করে। তাহলে চলুন রূপচর্চায় কাঁচা হলুদের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
রূপচর্চায় কাঁচা হলুদের উপকারিতা
(১) ত্বক ফর্সা করতে
প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি দুধের সাথে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে খাওয়া হয় তাহলে ধীরে ধীরে ত্বকের রঙ ফর্সা হতে থাকে। তাছাড়া দুধের সাথে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে খেলে রক্ত তে পরিষ্কার হয়, সাথো ত্বক ভিতর থেকে সুন্দর ও লাবন্যময় হয়। তবে আপনি যদি দুধের সাথে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে খেতে না পারেন, তাহলে মধু কিংবা গুড় মিশিয়েও খেলেও সমান উপকার পাবেন।
(২) ব্রন দূর করতে
হলুদের মধ্যে যে এন্টিসেপ্টিক ও এন্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান থাকে সেটি আপনার ব্রণ দূর করতে সহায়ক। তাছাড়া এটি শুধু আপনার ব্রণই দূর করবে না, সাথে ব্রণের দাগ ও লোমকূপ থেকে তেল নিঃসরণ হওয়ার পরিমাণও অনেকাংশে কমিয়ে দিবে।
(৩) তৈলাক্ত ত্বকের জন্য
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য হলুদ আপনাকে সাহায্য করতে পারে। এর জন্য আপনাকে ৩/৪ চিমটি হলুদের গুঁড়া, ১ চামচ চন্দন গুঁড়া ও ৪/৫ চামচ কমলার রস মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরি করে মুখে লাগাতে হবে। এতে আপনি তৈলাক্ত ত্বকের যেকোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
(৪) শুষ্ক ত্বকের জন্য
আপনার ত্বক যদি শুষ্ক হয়ে থাকে এবং আপনি আপনার ত্বক উজ্জ্বল এবং লাবণ্যময় করতে চান, তাহলে কাঁচা হলুদের সামান্য বাটা, সাথে ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, ২/৩ ফোঁটা লেবুর রস, একটা ডিমের সাদা অংশ এবং কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে নিতে পারেন। এরপর সেই প্যাকটি মুখে লাগাবেন। আশা করি নিশ্চিত আপনার সমস্যার সমাধান পাবেন।
(৫) চোখের নীচে কালো দাগ ও বলিরেখা দূরকরতে
চোখের নিচে কালো দাগ কিংবা বলিরেখা দূর করতে ২/৩ চিমটি পরিমাণ হলুদ গুঁড়ার ও মাখন মিশিয়ে চোখের নীচে লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি চোখের নিচে কালো দাগসহ বলিরেখা দূর করতে কার্যক্ষম।
(৬) স্ট্রেচ মার্ক দূর করতে
মার্ক দূর করতে আপনি বেসন ও কাঁচা হলুদ ব্যবহার করতে পারেন।
(৭) চর্ম রোগ থেকে মুক্তি
ত্বকের যেকোনো চর্ম রোগের জন্য হলুদ অত্যন্ত কার্যকর একটি উপাদান। হলুদের সাথে কাঁচা দুধ মিশিয়ে শরীরে মাখলে একজিমা, অ্যালার্জি, র্যাশ, চুলকানি ইত্যাদি নানাবিধ চর্ম রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
(৮) রোদে পোড়া দাগ দূর করতে
দিন করে যখন আপনি বাইরে বের হন, তখন কড়া সূর্য্যের তাপে আপনার ত্বক পোড়া ভাব বা কালচে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি হলুদ বাটার সাথে শশার রস, মুলতানি মাটি ও লেবুর রস মিশিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে নিয়ে সেটি মুখে লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিটের মতো। দেখবেন ত্বকের পোড়া ভাব কমে যাবে।
(৯) ত্বকের মরা কোষ দূর করতে
২/৩ চিমটি পরিমাণ হলুদ, চিনি এবং চালের গুঁড়া মিশিয়ে মুখ স্ক্রাব করলে মুখের সব মরা কোষ দূর হবে। তাছাড়া শুষ্ক এবং কালো ঠোঁটে হলুদ গুঁড়ার সাথে কাঁচা দুধ মিশিয়ে স্ক্রাব করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
(১০) ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম দূরীকরণে
প্রতিদিন যদি আপনি ময়দার সাথে কাঁচা হলুদ বাটা মিশিয়ে স্ক্রাব ব্যবহার করেন, দেখবেন ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম ধীরে ধীরে কমে যাবে।
(১১) বয়স ধরে রাখতে হলুদ
এক দুইদিন পর পর বেসন, কাঁচা হলুদ বাটা, টক দই মিশিয়ে মুখ সহ সারা শরীরে লাগালে এটি আপনার ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখবে।
তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখবেন যে হলুদ কখনোই ত্বকে সরাসরি লাগাবেন না। কোনো কিছুর সাথে যেমন চন্দন গুঁড়া, চালের গুঁড়া, বেসন ইত্যাদির সাথে মিশিয়ে লাগাবেন। কেননা প্রত্যেক মানুষেরই ত্বক ভিন্ন। তাই আগে মুখে না দিয়ে, হাতে অথবা ঘাড়ে অ্যালার্জি টেস্ট করে নিতে পারেন। এতে আপনি বুঝতে পারবেন প্যাকটি আপনাকে সুট করছে কিনা।
আশা করি আমার এ পোষ্টটি সবার ভালো লেগেছে। যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বা শেয়ার করুন।
সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।