রোহিঙ্গা হলো মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আগত শরণার্থী। রোহিঙ্গা মিয়ানমারের একটি সংখ্যালঘু মুসলিম জাতি, তাদেরকে মিয়ানমারের বৌদ্ধরা বাংলাদেশের অবৈধ অভিবাসী হিসাবে হিসেবে গণ্য করে। রোহিঙ্গারা বিভিন্ন প্রজন্ম ধরে বসবাস করে আসছে। কিন্তু ২০১৭ সালে মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর দ্বারা গণহত্যার শিকার হওয়া রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে।২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের হিসেব বলছে যে, এই গণহত্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রায় ৬,৫৫,০০০ থেকে ৭,০০,০০০ রোহিঙ্গা
শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম এ নির্যাতনের শিকার হয়ে আরো অগণিত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
আনুমানিক প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে। তাছাড়া, ভারতের হায়দ্রাবাদেও রোহিঙ্গা রয়েছে, সেখানকার রোহিঙ্গারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল যার কারণে মিয়ানমার এর মতো তারাও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। এমন ভাবে প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ এর ফলে বাংলাদেশ পরে গেছে চাপে। এখন বাংলাদেশ এর আন্তর্জাতিক সমাধান চায়।
২০১৭ সালের আগে থেকেই কিছু রোহিঙ্গা পরিবার বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে বসবাস করতে থাকে। তবে ২০১৭ সালে মানবিক দিক বিবেচনা করে বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলো বাংলাদেশ সরকার। শুরুতে সবাই অনেক আগ্রহ দেখিয়ে রোহিঙ্গাদের সাহায্য করতে আসলেও আস্তে আস্তে তা যেনো ঘোলা হতে থাকে। ভাবা হয়েছিলো অতিশীঘ্রই আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট নিরসন করা হবে কিন্তু আজও সেই সংকট, সংকট ই রয়ে গেলো।
রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ এর পর বাংলাদেশ হারিয়েছে তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। রোহিঙ্গাদের কাটা হয়েছে গাছ থেকে শুরু করে পাহাড় পর্যন্ত। সেখানে সারা বিশ্ব ভীত জলবায়ু পরিবর্তন এর ভয়ে সেখানে বাংলাদেশে অসংখ্য গাছপালা, বনভূমি কাটা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের আবাসস্থল তৈরীর জন্য। এর ফলে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ বড় ক্ষতির মুখোমুখি হবে।
বাংলাদেশ নানান কূটনৈতিক টোপ ব্যাবহার করেও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দিতে পারলো না। যখনি বাংলাদেশ সফল হয়েছে তখনি রোহিঙ্গারা যেতে রাজি হয় নি।তারা চায় তাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিয়ে নিরাপদ আবাসস্থল তৈরী করা হোক রাখাইনে।তবেই তারা ফিরে যাবে মিয়ানমারে।সম্প্রতি বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দিতে কমনওয়েলথ এর সহায়তা চাচ্ছে। জাতিসংঘের ৭৪ তম অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা এখন আঞ্চলিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এর নিরসন করা উচিৎ। তিনি এজন্য আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
আমরা সকলেই চাই সবাই সবার দেশে নিরাপদ থাকুক। রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল তৈরী করে যত দ্রুত মিয়ানমারে ফিরত পাঠানো যাবে ততটাই মঙ্গলজনক হবে বাংলাদেশের জন্য।