শহরের শীতের সময়ের রুপ গ্রামের শীতের চাইতে একটু ভিন্নতর। এখানে শীতের প্রকোপ একটু কম। শহরের ইটের পরে ইট প্রকৃতিকে উপভোগ করতে দেয় না। এখানে উত্তরের শীতল বাতাস বয়ে আসে ঠিকই কিন্তু তার সাথে খেজুরের রসের বা খেজুর গুড়ের মন মাতানো গন্ধ আমোদিত করে না।
শহরের শীতের সকাল কেবল কাকের ডাক, কলের শব্দ, পেট্রোল ও ডিজেলের গন্ধ, বাস-ট্রাকের শব্দে মিশে যায়। সকালে অফিসগামী মানুষের ছোটাছুটি। যান্ত্রিক সভ্যতায় শহরবাসীরা অভ্যস্ত। প্রকৃতির রুপ উপভোগ করার সময়ও নেই। তবে এর কিছু ভিন্নরুপও আছে।
শহরে শীত আসে খুশির মেজাজ নিয়ে। আসে শহরকে নানা সাজে, নানা রঙে সাজাতে। শীতের মৌসুমে শহরে খেলাধুলার আসর বসে। শীত মানুষকে ঘরের বাইরে টেনে নিয়ে যায়। বনভোজনের হিড়িক পড়ে যায় শহুরে মানুষের মধ্যে। যান্ত্রিক শহর ছেড়ে একটু দূরে বাতাসে মুক্তমনে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য লোকালয় বেছে নেয়।
অপরদিকে, গ্রামে শীতের আমেজ ও আয়োজন অনেকটা ভিন্ন প্রকৃতির। শহরের তুলনায় গ্রামে শীত চলে আসে আগে আগেই। শীতকে বরন করে নিতে শুরু হয়ে যায় গরম কাপর কেনার ধুম। অনেক ক্ষেত্রে গরীব মানুষদের শীতের কষ্ট সহ্য করতে হয়।
শীতের আমেজ পূর্ণরুপ ধারন করে নানা স্বাদের পিঠাপুলির খাওয়ার মাধ্যমে। বিশেষ করে শীতের পুলি পিঠা ও খেজুরের রস সকালটাকে আরও বেশি রাঙিয়ে দেয়। মুড়ি মুড়কি, মন্ডা মিঠাই তো আছেই। শীতের সকালে রোদ পোহানো যেন গ্রামীন লোকদের আরেকটি বিলাস।
তবে, যারা খেটে খাওয়া মানুষ তাদের জন্য শীতটা আসলেই বেশ দূর্ভোগ নিয়ে আসে। তবুও রুটি রুজির তাগিদে তাদের কুয়াশা ভেদ করেই কাজে নামতে হয়। পশু পাখিরাও যেন শীতে ঝিমিয়ে পড়ে। গবাদি পশুর জন্য নিতে হয় বিশেষ ষত্ন। অতিথি পাখির বিচরন গ্রাম এলাকায় অনেক বেড়ে যায়।
আজ এ পর্যন্তই। আল্লাহ হাফেজ।