১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সটা এমন একটা সময় যখন আমরা নিজেকে যেমন খুশি তৈরি করতে পারি। নিজেকে কোনো ছেলে বা মেয়ের পিছনে ঘোরাতে পারি বা নিজের কিছু ভালো অভ্যাস তৈরি করতে পারি অর্থাৎ যেমনটা আমরা চাই তেমন জীবনই আমরা তৈরি করতে পারি। কেবল আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি নিজেকে কোন রাস্তায় নিয়ে যেতে চান। যেমন একটি ছেলে ছিল যার বয়স ছিল ১৭ বছর। সে অনেক ভোলা ছিল যার কারণে সবাই তাকে পাগল বলতো, তার বন্ধুরা তাকে ধরে মারতো। তার বন্ধুরা তাকে কোনো রকমের পাত্তা দিতো না, কিন্তু তারপরেও সে তার বন্ধুদের সঙ্গেই থাকতো। আর কিছুদিন পর তাঁর বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে সে কিছু খারাপ অভ্যাসে জড়িয়ে পড়ে। যেমন সিগারেট খাওয়া, ড্রিংক করা। আগে তো সে অনেক ভয় পেতো, কিন্তু এখন ধীরে ধীরে তার মধ্যেও সাহস আসা শুরু করে। এখন তার বন্ধুরাও তাকে সাথে নিতে শুরু করে, আর ছেলেটি ভাবতো এখন হয়তো তাকে সবাই ভালবাসে।
কিন্তু ধীরে ধীরে যত সময় যেতে থাকে তত ছেলেটির জীবনটা খারাপ হওয়া শুরু হয়। যতদিন পর্যন্ত নিজের উপরে কোনো দায়িত্ব ছিল না ততদিনতো এভাবে ঠিকঠাকই চলছিলো। কিন্তু যখন দায়িত্ব আসা শুরু হয় তখন ছেলেটির বন্ধুগুলো ছেলেটির সঙ্গে দেখা করা কম করে দেয়। সবাই নিজের জীবন, নিজের পরিবার, নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সবাই ছোট ছোট কোনো না কোনো কাজ করা শুরু করে এরপর ছেলেটি সিদ্ধান্ত নেয় যে সে সবার মতো ছোট কোনো কাজ করে জীবনটা কাটাতে করতে চাইনা। আর জীবনে যদি কিছু করতে হয় তাহলে এখনই তাকে জীবনটা পরিবর্তন করতে হবে। এরপর সে সবাইকে ছেড়ে দেয়, সবার সাথে দেখা করা বন্ধ করে দেয়, আড্ডা মারা ছেড়ে দেয়, নেশা করা ছেড়ে দেয়। আর এইসব কিছু করার জন্য সবার প্রথমে সে তার অভ্যাস পরিবর্তন করার চেষ্টা করে।
আপনি যদি কোনো কিছু করতে চান তাহলে সেটা তখনই হবে যখন আপনি সেটার জ্ঞান রাখবেন। এরপর সেই ছেলেটিও শেখা শুরু করে, ছেলেটি একটি ছোট বিজনেস ওপেন করে। দিনরাত পরিশ্রম করে সেটাকে বড় করার চেষ্টা করে। সেইসব লোক গুলো যারা চাইতো যে সে জীবনে কিছু করুক, তারা তাকে হেল্প করে। আর আস্তে আস্তে ছেলেটি তার সমস্ত খারাপ অভ্যাসগুলো ছেড়ে এগিয়ে যায়। ওই লোকগুলো কেবল ছেলেটির সাথে ছিল, তাকে উৎসাহ দিয়েছিল। কিন্তু ছেলেটি নিজের পরিশ্রমে মাত্র দু’বছরে তার জীবনটাই বদলে দেয়। এখন তার এলাকাতে লোকজন সবাই তার নাম করা শুরু করে।
এজন্য কখনোই নিজেকে খুব বেশি নিচে নামতে দেবেন না। আপনার আসল ক্ষমতা আপনার চিন্তার মধ্যে আছে। লোক আপনাকে আপনার চেহারা দেখে চিনবে না, লোক এটা দেখেও আপনাকে চিনবে না যে আপনি কতটা ড্রিংক করতে পারেন বা কত টাকা খরচ করতে পারেন। বরং আপনি কি কাজ করেন, আপনি জীবনে কিভাবে বেঁচে আছেন, আপনার চিন্তা কি রকমের এর উপর নির্ভর করেই লোক আপনাকে সম্মান করবে। তাই আপনার বয়স যদি এখন হয় ১৬ থেকে ৩০ বছর তাহলে আপনাকে এখন আপনার নিজের জ্ঞানের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। কেবলমাত্র স্কুল বা কলেজে যা আপনাকে শেখানো হয় সেই জ্ঞানটুকুই যথেষ্ট নয় বরং বাইরে থেকেও আরো অনেক কিছু শেখার আছে।
এডুকেশন ছাড়াও আপনাকে আরো অনেক নলেজ রাখতে হবে, এরপর যদি আপনি জব করেন বা কোনো বিজনেস করেন তাহলে সেখানে নিজেকে এমন ভাবে লাগিয়ে দিন যাতে এখন যে লেভেলে আপনি আছেন পরের বছর এর উপরের লেভেলে আপনি থাকতে পারেন। আপনার চিন্তা এবং আপনার আত্মবিশ্বাস এমন হতে হবে যা আপনার জীবনকে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে। আমি কি করতে পারবো? আমি জানিনা আমি পড়তে পারবো কিনা, এইসব ভেবে নিজেকে দুর্বল করবেন না। আপনি যা কিছু করবেন সেটা ২০০% সঠিক হবে, আর যদি নাও হয় তাহলে সেটাকে সঠিক করে দেখানোর অ্যাটিটিউড আপনার মধ্যে থাকতে হবে। এরপর হলো আপনার চারপাশে ও আপনার সাথে সেই সমস্ত লোকগুলোকে রাখুন যারা আমার উপরে বিশ্বাস করে যে আপনি কিছু করে দেখানোর ক্ষমতা রাখেন। কারণ যখন আপনার মধ্যে কোনো নেগেটিভ চিন্তা আসবে, নিজের উপর থেকে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবেন তখন এরাই আপনার কনফিডেন্স বাড়াতে অনেক বেশী সাহায্য করবে।