বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে করোনার টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য। আগামী সপ্তাহ থেকে দেশটিতে ফাইজার এবং বায়োয়েনটেকের যৌথ উদ্যোগে তৈরি ভ্যাকসিনটির প্রয়োগ শুরু হবে। করোনার বিরুদ্ধে ৯৫ ভাগ কার্যকর এমন দাবি নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে আলোচনায় মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফাইজার এবং জার্মান কোম্পানি বায়োয়েনটেকের যৌথ উদ্যোগে তৈরি ভ্যাকসিনটি। বুধবার ভ্যাকসিনটি জরুরি ভিত্তিতে নিজ দেশে ব্যবহারের অনুমোদন দিল যুক্তরাজ্য। এর মাধ্যমে বিশ্বের প্রথম কোন দেশ হিসেবে ব্যবহারের অনুমোদন দিল দেশটি। সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য প্রথমবার কোনো করোনার ভ্যাকসিন পেল বিশ্ব। এম.এইচ.আর.এ এর সিদ্ধান্তটি জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রী। তিনি বলেন আগামী সপ্তাহ থেকেই শুরু হবে টিকাদান।
আগামী সপ্তাহ থেকে নিজ দেশে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু করবে যুক্তরাজ্য। এই সময়ের মধ্যেই ফাইজারের ৮ লাখ ডোজ টিকা পৌঁছে যাবে দেশটির হাতে, যার উৎপাদন প্রক্রিয়া চলছে বেলজিয়ামে। ২১ দিনের ব্যবধানে ভ্যাকসিনটির দুটি প্রদান করতে হবে। সবার আগে বয়স্ক এবং অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের টিকা দেবে ব্রিটিশ সরকার। এরই মধ্যে ফাইজারের ভ্যাকসিনটির চারকোটি ডোজের অর্ডার দিয়েছে যুক্তরাজ্য। জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের অনেক দেশ ফাইজারের টিকার অগ্রিম অর্ডার দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে আগামী বছরের মধ্যে ১৩০ কোটি ডোজ টিকা তৈরি করে বলে জানিয়েছে বায়োয়েনটেক। যুক্তরাজ্য ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে টিকার অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে ফাইজার, অক্সফোর্ড এবং মডার্না।
চূড়ান্ত অনুমোদনের দৌড়ে এগিয়ে ছিল বেশ কয়েকটি করোনা প্রতিরোধক ভ্যাকসিন। তবে সবাইকে ছেড়ে বাজিমাত করলো মার্কিন ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফাইজার এবং জার্মান প্রতিষ্ঠান বায়োয়েনটেকের প্রতিষেধক। বুধবার সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য এর অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্যের ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা পণ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এম.এইচ.আর.এ। ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে দুই কোটি মানুষের জন্য তারা কিনেছে চার কোটি ডোজ যার এক কোটি মিলবে এবছরই। অবশ্য দামের হিসাবে সবচেয়ে সুলভ মূল্য অক্সফোর্ডের টিকা (৪ ডলার)। অন্যান্য গুলোর দাম ডোজ প্রতি ১০ থেকে ৩৩ ডলার পর্যন্ত।
অন্যদের থেকে কেন আলাদা টিকাটি? বলা হচ্ছে ডলারর্সফোর্ড কয়েকটি কর চূড়ান্ত ট্রায়ালে ৪১ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেন যাতে দেখা যায় তরুণদের পাশাপাশি ষাটোর্ধ্ব দের ক্ষেত্রেও ৯৫% কার্যকরী এটি। তাছাড়া এর নেই পার্শপ্রতিক্রিয়া স্বাস্থ্যঝুঁকিও। দামও রয়েছে হাতের নাগালে। কিন্তু সমস্যা একটাই আর তাহলো এর সংরক্ষণ পদ্ধতি। কিভাবে কাজ করবে এই ভ্যাকসিনটি? গবেষকদের দাবি টিকাটি মানব শরীরের জেনেটিক পদ্ধতি গুলোকে মূলত প্রশিক্ষণ দেবে। কিভাবে করোনার বিরুদ্ধে ঢাল তৈরি করা যায় সেই খাপ খাওয়ানোর ব্যাপারটিই শেখাবে শারীরিক কাঠামোকে। সাধারণত একটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষা শেষ হতেই লাগে বছরের পর বছর, সেখানে মাত্র ১০ মাসেই ফাইজার ও বায়োয়েনটেক পেয়েছে সাফল্য। এটাই এখন পর্যন্ত ধারণা থেকে বাস্তবে রূপ পাওয়া প্রথম ভ্যাকসিন।