মানুষের মধ্য আপন পর নির্ধারিত হয় আন্তরিকতা আর ব্যবহার দিয়ে, সম্পর্কের নাম দিয়ে আপন পর নয়”। কাঁথা যে রঙ্গের সুতোয়ে গাঁথা হোক না কেন সুতোর সাথে কাঁথার সম্পর্ক যত্ন সহকারে রাখলে দীর্ঘদিন টিকে থাকে কিন্তু টিকে থাকে না রক্তের বাঁধনে থাকা সম্পর্ক। মানুষের মধ্য থাকা অন্তরাত্মা যদি তালা ধরা হয় তবে চাবি হলো তাঁর ব্যবহার। তালা খোলতে যেমন চাবির প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
অন্তরাত্মা খুলতে ব্যবহার ঠিক চাবির মত,সম্পর্কের তালা খোলার জন্য অনস্বীকার্য। অর্থাৎ তালা খোলতে তার জন্য আবশ্যক চাবির আর অন্তরাত্মা খোলতে আবশ্যক ব্যবহারের। ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্যই শুধু ব্যবহার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয় না বরং সম্পর্ক রক্ষার জন্য ও ব্যবহার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাই বলা যায় যে,আপন পর সম্পর্কের একটি তালা মাত্র,অন্তরিকতা আর ব্যবহার দিয়ে যত্নসহকারে খুলতে হয়।আপন পর হয় আবার পর আপন হয় শুধু সে আন্তরিকতা আর ব্যবহার এরই কারণে। মানুষের ভেতর সম্পর্কের বিষয়টি মূলত স্বেচ্ছাচাকৃত কার্য ও মনস্তাত্ত্বিক এক চরিত্র,যা তার উদ্দেশ্য ও কামনা, বাসনার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়ে।
বিশেষত বিশেষ উদ্দেশ্য প্রবণ মুহূর্ত গুলো সামনে যখন উপস্থিত হয় তখন আপন স্বার্থকে সম্পর্কের চেয়ে বড় করে দেখে এবং সেই উদ্দেশ্য পূরণের উদ্যোগ নেয়।ফলশ্রুতিতে দেখা যায় যে, পিতা পুত্রে মনোমালিন্য, স্বামী স্ত্রীর বৈরিভাব, ভাই ভগ্নী সব দূর দূর হাবভাব, এমতাবস্থায় সম্পর্কটা তখন লাগে একদম অপরিচিতের মত!তবে এই মানষটিই আবার অন্যকারোর সাথে গলায় গলায় খাতির করে এমন ভাবে যাপিত হচ্ছে, পরস্পর রক্তের সম্পর্কীয় ও আপন না হওয়ার পরও লাগে যেন তারা পরমাত্মীয়।সম্প্রতি মানব সমাজে আপন ছেড়ে পরকে আপন করার সম্পর্ক- আন্তরিকতা আর ব্যবহার বেশ দৃষ্টি কাড়ার মতই লক্ষণীয়। এ জন্যই বলা হয় যে, আপন পর সম্পর্কের নাম দিয়ে নির্ধারিত হয় না,হয় মানুষের আন্তরিকতা আর ব্যবহার দিয়ে ।
কবিতা : “বিজয়ের সুর”
মুহা. কবির হোসেন
বিজয়ের সুর বাজে হৃদয় আমার
ফাগুন ঝড় হাওয়া বেদনার,
আকাশের মরু সাজে উদয় তারার
আগুন ঝরা ধাওয়া বারেবার।
আহা! সময়ের বড় দুর্জয় পারাবার
ঊনিশশো একাত্তর এর ডিসেম্বর,
আমার ভাইয়ের বিজয়ে রহাবার
বিশ্ব দেখেছে তাঁর অন্তর।
আকাশের মত মরু ভাস্বর প্রেমের
মোহরঙ্কন করে নিজের রত,
সেই আভাসে সব ভীরু হানাদার
পালায় দেখে বিজয়ের পথ।
বিজয়ের সুর আজ বাজে অনড়
ষোলই ডিসেম্বর স্মরণ সভার,
হৃদয়ের ক্রূর লাজ বাজে সমর
নিতান্তই সেই শিহরণ হারাবার।
দেশের তরে লাখো প্রাণ অকাতর
কোরবান করে জীবন ভাস্বর,
মুক্তির পরে দেখো জান পরোপার
ফরমান পড়ে মহান আত্মার।
নির্লোভ মনে আহা নির্মমতার শীকার
মুক্তি সেনার পুষ্প দল,
গোলাপ সম ঝরা পাপড়ীর নিকার
মুক্তি-ই দেনার শেষ সম্বল।
আগুন রাঙা তাজা গোলাপের মতন
আজও আসে সে সুগন্ধি তাঁর,
মহান বিজয়ের আজ সুর সমীরণ
মহীরুহ হাসে যে, কামনাই প্রভুবর।
।।মুহা. কবির হোসেন।।ঝালকাঠি,বাংলাদেশে।।