বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আসসালামু আলাইকুম,কেমন আছেন সবাই?আশা করি ভালই আছেন।আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম ভিন্নধর্মী একটি পোস্ট।আজ আমরা জানব সাপে কাটলে আমাদের করণীয় কি?
পৃথিবীর সব দেশেই কম বেশি সাপ আছে।বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়।আমাদের অনেকেরই একটি ভুল ধারণা হলো সাপ আমাদের শত্রু।আসলে সাপ বিষাক্ত হলেও সাপের মাধ্যমে আমাদের উপকার হয়।ইঁদুর আমাদের অনেক বড় শত্রু।প্রতি বছর ইঁদুর আমাদের অনেক ফসল নষ্ট করে।এবং বিভিন্ন রোগ বালাই এর সংক্রমণ করে থাকে।সাপ এই ইঁদুরদের খেয়ে থাকে।পোকামাকড়,ইদুর,ব্যাঙ ইত্যাদি সাপের খাবার।তাই সাপকে আমাদের শত্রু ভাবা ঠিক না।সারা পৃথিবীতে যদিও সাপের কামড়ে অনেক মানুষ মারা যায় কিন্তু সাপ কাউকে মারার উদ্দেশ্য নিয়ে কামড় দেয় না।সাপ ভয় পেয়ে বা আত্মরক্ষার জন্য কামড় দেয়।আমরা কিছু পদক্ষেপ নিলে সাপের কামড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি।আমাদের দেশে মূলত জুন-জুলাই ও সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পায়।মূলত যখন সাপের প্রজনন ঋতু আসে এবং চারদিকে বর্ষার পানিতে ভরে যায়।তখনই সাপ গর্ত থেকে বেরিয়ে আসে।সাপ নিজে কোনো গর্ত করতে পারে না কিন্তু সাপ ইদুরের গর্তে আশ্রয় নেয়।সাধারণত সাপ খুবই ভীতু প্রকৃতির প্রাণি।মানুষকে দেখলেই ভয়ে পালিয়ে যায়।তাই সাপকে অধিক ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই।কিন্তু তারপরও যদি কেউ সাপের কামড় খায় তাহলে আমাদের কিছু করণীয় কাজ আছে।আমরা যদি এই টিপস গুলো ফলো করি তাহলে সাপের কামড়ের ক্ষতি থেকে বাঁচতে পারি।তাহলে চলুন জেনে নেই সাপে কাটলে আমাদের করণীয়।
১/ প্রথমেই আমাদের যদি সাপে কামড় দেয় এই কথা মাথায় রাখবেন আমাদের দেশের ৯৬% সাপই বিষধর নয়।তাই সাপ কামড়ালে প্রথমেই আতংকিত হবেন না।কারন বেশি আতংকিত হলে আমাদের রক্তচাপ বৃদ্ধি পাবে।এতে আমাদের প্রাণ নাশের ঝুঁকি আছে।তাই আতংকিত হবেন না।
২/সাপের কামড় ভাল ভাবে লক্ষ্য করুন।কামড়ে কয়টি দাঁতের দাগ আছে তা লক্ষ্য করুন।সম্ভব হলে ছবি তুলে রাখতে পারেন।কি সাপ কামড় দিয়েছে তা দেখে চিনতে পারলে ভাল।সাপ দেখতে না পেলে ডাক্তারকে ক্ষত স্থানের ছবি দেখাতে পারেন।এতে ডাক্তারের দ্রুত চিকিৎসা করতে সুবিধা হবে।
৩/হাতে বা পায়ে কামড় দিলে হালকা ভাবে তার উপর গামছা বা কাপড় দিয়ে বেধে দিন।খুব জোরে বাধবেন না।এতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
৪/যেই জায়গায় কামড় দিয়েছে সেই জায়গার চারপাশে বাঁশের বা কাঠের কঞ্চি দিয়ে বেধে দিন।এর উদ্দেশ্য হল ক্ষত্ স্থান যেন বেশি নড়াচড়া না করে।কারন ক্ষত স্থান বেশি নড়া চড়া করলে সেই স্থানে রক্ত বেশি সঞ্চালিত হবে।এবং তা শরীরের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার আশংকা আছে।
৫/নিজে সাপের কামড় খেলে দৌড় দিয়ে বা সাইকেল চালিয়ে ডাক্তারের কাছে আসবেন না।অন্য কারো সাহায্য নিন।
৬/কোনো বেদে,কবিরাজ বা ওঝার শরণাপন্ন হবেন না।কারন এই ধরনের লোকের কাছে এলে রোগীর প্রাণ নাশের ঝুঁকি আছে।তারা সঠিক চিকিৎসা জানে না।আমরা যদিও টেলিভিশন বা সিনেমায় রোগীদের ভাল করতে দেখি কিন্তু বাস্তবে তা একেবারেই সঠিক নয়।
৭/যতদ্রুত সম্ভব ডাক্তারের কাছে যান।এবং কি ধরনের সাপ কামড় দিয়েছে বা সাপের রঙ বা কামড়ের জায়গা দেখান।যদি শরীর অবশ অবশ লাগে বা যেকোনো সমস্যা যেমনঃ চোখে ঝপসা দেখা,বমি বমি ভাব ইত্যাদি যে সমস্যাই হবে ডাক্তারকে খুলে বলুন।
আমরা যদি এই সকল নিয়ম মেনে চলি তাহলে সাপের কামড়ের ক্ষতি থেকে প্রাণে বাঁচতে পারব।আমরা এতক্ষণ জানলাম যদি সাপ আমাদের কামড় দেয় তাহলে কি করণীয় সেই সম্পর্কে।
তো আজকে এই পর্যন্তই।আগামি পোষ্টে সাপের আক্রমণ থেকে বাচার উপায় নিয়ে আলোচনা করব।ধন্যবাদ।।