স্মার্টফোন (Smartphone) আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যে একটা দিনও ফোন ছাড়া কল্পনা করা যায় না। আর সেই ফোনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটাই হলো ব্যাটারি (Battery)। ব্যাটারি ছাড়া একটি ফোন দিয়ে কোনো কাজই করা সম্ভব না। আর তাই একটি ফোনকে দীর্ঘ সময় ব্যবহারের জন্য ব্যাটারির লাইফ বাড়ানো অপরিহার্য। তাহলে চলুন জেনে নেই কিভাবে স্মার্টফোনের ব্যাটারি লাইফ বাড়ানোর কিছু কার্যকরী উপায়-
পদ্ধতি-১
আমরা অনেকেই স্মার্টফোন ব্যবহারে যে ভুলটা করি তা হলো রাতে ঘুমানোর সময় ফোনে চার্জ দিয়ে ঘুমিয়ে যায়। ফলে ফোনটি সারা রাত চার্জ হয়। সারা রাত চার্জ হওয়ার জন্য ফোনের ব্যাটারিতে অতিরিক্ত চার্জের কারণে চাপের সৃষ্টি হয়। যা ব্যাটারির জন্য মোটেও ভালো নয়। এবং এই অতিরিক্ত চাপের ফলে ব্যাটারিটি বিস্ফোরিত হতে পারে। তাই যদি আপনিও এই কাজটি করে থাকেন তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজটি বর্জন করুন।
পদ্ধতি-২
স্মার্টফোন চার্জ দেওয়ার সময় ফোনের ব্যাটারি গরম হয়ে যায়। আর এই গরম ফোনেও অনেকাংশে ছড়িয়ে পড়ে। তাই ফোনকে গরমের প্রভাব থেকে রক্ষা করতে ফোনের ব্যাক কভার খুলে চার্জ দেওয়া উচিত।
পদ্ধতি-৩
আপনার স্মার্টফোনের নিজস্ব চার্জার দিয়ে ফোনটি চার্জ করুন। কারণ প্রত্যেকটি ফোনের চার্জার সেই ফোনের জন্যই বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। অন্য চার্জার দিয়ে ফোন চার্জ দিলে চার্জে তারতম্যের সৃষ্টি হয় এবং ব্যাটারির ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। যার ফলে ব্যাটারির লাইফ কমতে থাকে। এজন্য ফোনের মূল চার্জার দ্বারাই স্মার্টফোনটি চার্জ করুন।
পদ্ধতি-৪
এবার জানা যাক ফোনে চার্জ দেয়ার সঠিক সময় কোনটি। স্মার্টফোনে 20%-এর উপরে যদি চার্জ থাকে তবে চার্জ দেওয়া উচিত নয়। আবার ব্যাটারির চার্জ একেবারে 0% করেও চার্জে দেওয়া উচিত নয়। কারণ অপ্রয়োজনীয় রিচার্জে ব্যাটারির লাইফ নষ্ট হয়। এজন্য সর্বনিম্ন 15-20% চার্জ থাকা অবস্থাতেই স্মার্টফোনের চার্জ দেওয়া ভালো।
পদ্ধতি-৫
আমরা অনেকেই মনে করি পাওয়ার ব্যাংক দিয়ে চার্জ দেয়ার সময় ফোনে কাজ করলে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু এই ধারণাটি সঠিক নয়। চার্জার হোক কিংবা পাওয়ার ব্যাংক যেকোনো কিছু দিয়েই চার্জ দেয়ার সময় ফোন চালানো একেবারেই উচিত নয়। কেননা চার্জার ও পাওয়ার ব্যাংক এর মাধ্যমে চার্জ দেয়ার সময় ব্যাটারি গরম হয়ে যায়। একই সাথে যদি স্মার্টফোনটিও ব্যবহার করা হয় তাহলে ফোনটি আরও অতিরিক্ত গরম হয়ে যাবে। যা ব্যাটারি ও ফোনের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
পদ্ধতি-৬
অনেক সময় ফোনের নিজস্ব চার্জার নষ্ট বা হারিয়ে যাওয়ার কারণে নতুন করে চার্জার কিনতে হয়। আর ভুলটা আমরা তখনি করি। সেটা হলো যাচাই না করে কম দামে চার্জার কেনা। আপনি আপনার স্মার্টফোনের জন্য যে চার্জারই কিনুননা কেন সেটা অবশ্যই আপনার ফোনের মূল চার্জারের মত চার্জ আউটপুট দেয় কিনা তা ভালো করে দেখে নিন। অনেক সময় দেখা যায় চার্জারের ওপর লেখা আছে সঠিক অ্যাম্পেয়ার ও ভোল্ট। কিন্তু ফোনে আগের মত সঠিক ভাবে চার্জ হচ্ছে না। এই সমস্যার সঠিক সমাধান হলো আপনি যদি আপনার ফোনের কাস্টমার কেয়ার থেকে অর্ডার দিয়ে ফোনের মডেল অনুযায়ী চার্জারটি নিতে পারেন তাহলে সবচেয়ে ভালো হয়।
পদ্ধতি-৭
স্মার্টফোন থেকে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ গুলো আনইন্সটল করে দিন। কারণ অনেক অ্যাপ প্রয়োজন ছাড়ায় ব্যাকগ্রাউন্ডে অন (ON) হয়ে থাকে। ফলে ব্যাটারির অযথা চার্জ ফুরায় এবং ফোনটিও গরম হয়ে থাকে।
একনজরে দেখে নেই কি কি কাজ স্মার্টফোনের ব্যাটারির জন্য ক্ষতিকরঃ
- সারা রাত ফোনকে চার্জ দেয়া। ব্যাটারির ওপর বেশ চাপের সৃষ্টি করে এই কাজটা।
- ব্যাক কভার সহ ফোন চার্জ করা।
- ফোনে চার্জ দেয়ার সময় অন্য চার্জার ব্যাবহার করা।
- 15-20% এর কম বা বেশি চার্জ থাকলে ফোনে চার্জ দেয়া।
- চার্জ দেয়ার সময় ফোন কাজ করা।
- কম দামি চার্জার ব্যবহার করা। সঠিক অ্যাম্পেয়ার ও ভোল্ট যুক্ত চার্জার ব্যবহার না করা।
- অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ ইন্সটল করে রাখা।
ইত্যাদি সমস্যা গুলো সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে স্মার্টফোনের ব্যাটারি লাইফ বাড়ানো সম্ভব। সেই সাথে ফোনের পারফর্মেন্সও ভালো করা সম্ভব।