হতাশা খুব কমন একটা শব্দ।সাধারণত কোনো ইচ্ছেপূরণ না হলে বা কাজের আশানুরূপ ফল না পেলে যে মানসিক অবসাদের সৃষ্টি হয় তা হলো হতাশা।তাছাড়া লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব না হলে হাল ছেড়ে দেয়ার প্রবণতা-ই হতাশা। হতাশা একটি মানবিক অনুভূতি যার মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি কখনও মানসিক বিপর্যয় সৃষ্টি করে।
১।উদাসীন ভাব।
২।কোন কাজে মন না বসা।
৩।মেজাজ খিটখিটে থাকা।
৪।ক্ষুধা ও ঘুম না হওয়া।
৫।একজনের রাগ অন্যজনের উপর মেটানো।
৬।মন খারাপ করে বসে থাকা।
চলুন এবার জানি হতাশার কারণ সম্পর্কে ।
আমরা অনেকেই হতাশা বা ডিপ্রেশন এর কারণ বলতে প্রেমে ব্যর্থতা বা এর সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলো কে বুঝি ।কিন্তু ডিপ্রেশন এর বিভিন্ন কারণ থাকে।যেমন:
১।কোন কিছুর উপর অতিরিক্ত আশা করে সেই আশার অপূর্ণতা থেকে হতাশার সৃষ্টি হয়।
২।কোন কাজে ব্যর্থ হলে হতাশার সৃষ্টি হয়।
৩।একাকিত্বের কারণে হতাশার সৃষ্টি হয়।
৪।কোন তুচ্ছ ঘটনাকে বড় করে দেখার ফলে হতাশা আসে।
৫।সমস্যা মোকাবেলায় অক্ষম হওয়ার ফলেও হতাশা তৈরি হয়।
তাছাড়া পারিবারিক কোলাহল,আর্থিক সংকট ,নেতিবাচক চিন্তাধারা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণেও হতাশা আমাদের ঘিরে রাখে।
হতাশা থেকে মুক্তির উপায় সমূহ:
১।হতাশা থেকে মুক্তি পেতে আমাদের সর্বপ্রথম যে কাজটি করা দরকার তা হলো হতাশার কারণ খুঁজে বের করা।আমরা অনেকেই আছি যারা হতাশায় ভোগী কিন্তু কি কারণে হতাশা আমাদের ঘিরেছে তা-ই জানি না।তাই আমাদের হতাশা থেকে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই হতাশার কারণ খুঁজে বের করতে হবে।
২।ব্যর্থতাকে মেনে নেওয়ার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।পৃথিবীতে কোন জিনিস ই আপনা-আপনি পাওয়া যায় না।কোন কিছু পেতে হলে অবশ্যই চেষ্টা করে যেতে হবে।আর চেষ্টার ফলেই আসে সফলতা।কিন্তু সফলতার পেছন ব্যর্থতা তো থাকবেই।আমাদের মনে রাখতে হবে ব্যর্থতা একটা পরিক্ষা মাত্র। তাই ব্যর্থতা কে মেনে নেওয়ার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
৩।সমস্যার কথা বা মনের কথা খুলে বলা।আমরা অনেকেই মনের কথা মনেই জমিয়ে রাখি।কারোর সাথে শেয়ার করি না।যার ফলে আমরা একধরনের চাপা হতাশায় ভোগতে থাকি। আমরা যদি মনের কথা বা সমস্যার কথা কারোর কাছে নাই বলি তাহলে মানুষ বুুুঝবে কি করে আমরা কি সমস্যায় আছি। তাই সমস্যার কথা খুলে বলতে হবে ,এমন ও তো হতে পারে যার কাছে শেয়ার করা হয়েছে সেই উক্ত সমস্যাটা সমাধান করে দিয়েছে।আর যদি সমস্যার সমাধান না ও হয় তারপর ও আপনার মন অনেক হালকা লাগবে এবং হতাশা দূূর হবে।
৪।নিজেকে ব্যস্ত রাখার মাধ্যমে হতাশা থেকে মুক্তি লাভ করা যায়।আমাদের যখন কোন কাজ
থাকেনা তখন নানা রকম ভাবনা আমাদের ঘিরে ফেলে, বিভিন্ন রকমের উল্টা পাল্টা চিন্তা মাথায় চলে আসে।এবং হতাশা তখন আমাদের আকড়ে ধরে।কিন্তু আমরা যদি নিজেকে সবসময় কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখি তাহলে আমাদের মাথায় কোন বাজে চিন্তা আসেনা এবং আমরা হতাশা থেকে মুক্ত থাকতে পারি।
৫। বন্ধু কিংবা পরিবারের সাথে সময় কাটানোর মাধ্যমে হতাশা মুক্ত থাকা যায়।
পরিবার এবং বন্ধুই হচ্ছে আমাদের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।তাই পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর মাধমে অনেক খুশি থাকা যায়।যা আমাদের হতাশা মুক্ত করে।
৬।প্রান খুলে হাসা।হাসি আমাদের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস।আমরা যদি না হাসতে পারতাম তাহলে আমরা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়তাম। হাসি মানুষের দুশ্চিন্তাকে দূর করে দিতে পারে খুব সহজেই।তাই প্রান খুলে হাসতে হবে।আর এই হাসি ই আমাদের আগামীর পথ চলাকে খুব সহজ করে দিবে।
৭।বই পড়া ও খেলাধুলা করার মাধ্যমে আমরা হতাশা দূর করতে পারি। বই এমন এক বস্তু যা মানুষকে উন্নত থেকে উন্নততর করে তোলে।যখন মন খারাপ থাকে তখন গল্প কিংবা উপন্যাসের বই পড়ার মাধ্যমে মন ভালো করা যায়।খেলাধুলা আমাদের মনকে প্রফুল্ল রাখে।দুশ্চিন্তা থেকে আমাদের মুক্তি দিয়ে থাকে। তাই নিয়মিত খেলাধুলার মাধ্যমে আমরা হতাশা থেকে মুক্তি পেতে পারি।
তাছাড়া আমরা অনেকেই কোন জিনিস চাওয়ার পর বা কোন কিছুতে আশা করার পর তার অপূর্ণতার কারণেই হতাশায় ভোগী ।হতাশা থেকে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে,কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি আমাদের ক্ষমতার মধ্যে কিনা।ক্ষমতার বাইরের কিছু খুব সহজে পাওয়া সম্ভব না ,তাই এ ব্যাপারে হতাশাগ্রস্থ হওয়া চলবেনা ।তুুুচ্ছ
কোন বিষয় নিয়ে দুশিন্তা করা যাবেনা।
সর্বোপরি আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে যে,সৃষ্টিকর্তা যেহেতু সমস্যা দিয়েছেন তিনি ই সেই সমস্যার সমাধান করে দিবেন।আর এই কথা মাথায় থাকলেই আমরা হতাশা কে পিছু ফেলে সামনে এগিয়ে যেতে পারবো ।