এক সময়ে এক জঙ্গলে থাকতো দুই বন্ধু। এক হাতি আরেকজন শিয়াল। তারা ছিল ছোট কালের বন্ধু। তারা দুজনেই এক সাথে বেড়াতো। তারা তাদের মধ্যেই মনের ইচ্ছা শেয়ার করতো। একদিন শিয়াল তার লেজ পরিস্কার করতেছিল। এইটা দেখে হাতি বলল, শিয়াল বন্ধু তোমার লেজটা কতই না সুন্দর। কিন্তু আমার লেজটা এতো ছোট কেন?
শিয়াল বলল, বন্ধু তোমার লেজ ছোট। কিন্তু তোমার শূরটা অনেক বড়। আর আমার শূর নেই। কিন্তু লেজ আছে। তখন হাতি বলল, আমিও তোমার মতো একটা বড় লেজ চাই। কিন্তু কিভাবে আমার লেজ বড় করব। শিয়াল ছিল চালাক। সে হাতিকে বলল, যদি তুমি আমার জন্য প্রত্যেক দিন খাবার এনে দাও, তাহলে আমি তোমার লেজ বড় করার বুদ্ধি বলে দিব। এই কথা শুনে হাতি বলল, ঠিক আছে। আমি তোমার জন্য প্রত্যেক দিন খাবারের ব্যবস্থা করব।
সেই কথা অনুযায়ী হাতি শিয়ালকে প্রত্যেক দিন খাবার এনে দিতে লাগলো। আর শিয়ালকে জিজ্ঞাসা করলো, কই বন্ধু আমার লেজ বড় করব কি করে?
শিয়াল বলল, তোমার লেজে একটা পাথর ঝুলিয়ে দাও। তাহলে আসতে আসতে তোমার লেজ বড় হয়ে যাবে। শিয়াল তো জানে হাতির এতো বড় শরীর সে কীভাবে তার লেজ দেখতে পারবে। তখন হাতি বলে, “শিয়াল বন্ধু আমার যে লেজ বড় হয়েছে কীভাবে জানবো”? শিয়াল বলল, “আমাদের যে কাক বন্ধু আছে তাকে বলবে তোমার লেজ বড় না ছোট”। এভাবেই কয়েকদিন হাতি তার লেজে একটি পাথর ঝুলিয়ে রাখল। এদিকে চালাক শিয়াল বসে মনের শুখে হাতি বন্ধুর এনে দেওয়া খাবার খাচ্ছে।
শিয়াল ভাবলো তাদের কাক বন্ধুকে এই ব্যপারটা জানিয়ে দিবে। তাই শিয়াল কাককে ডাকলো। আর তাকে বলল, “হাতি বন্ধু যদি তোমাকে জিজ্ঞাসা করে যে তার লেজ বড় হয়েছে কি না”? তাহলে তুমি বলবে হ্যাঁ বড় হয়েছে। কাক বলল, “কেন আমি এই কথা বলব”? শিয়াল বলল, “তুমি যদি এই কথাটা বলো তাহলে তুমি আমার ভাগের খাবারের একটি অংশ পাবে”। কাক তো রাজি হয়ে গেলো। তবে হাতি আনন্দে খাবার খাচ্ছিল। এই ভাবে অনেক দিন চলে গেলো। হাতি শিয়ালকে খাবার এনে দিতে লাগলো। আর শিয়াল কাককে খাবারের একটি অংশ দিয়ে তার মুখ বন্ধ করে রাখল।
একদিন হাতি কাককে জিজ্ঞাসা করলো যে,“ বন্ধু কাক আমার লেজ কি বড় হয়েছে”? কাক বলল, হ্যাঁ বন্ধু তোমার লেজ বড় হয়েছে। হাতি তার লেজ দেখার জন্য অনেক চেষ্টা করে। কিন্তু দেখতে পারে না। একদিন কাক ভাবলো তার বন্ধুকে সব কিছু বলে দিবে। তাই সে হাতির কাছে গিয়ে বলে দিলো শিয়ালের সব চালাকির কথা।
হাতি মনে অনেক দুঃখ পেলো। আর সাথে সাথে শিয়ালের কাছে এশে বলল, “কেন বন্ধু আমাকে মিথ্যা আনন্দ দিলে”? তুমি না আমার ছোট কালের বন্ধু! শিয়াল বলল, “ঠিক বলেছ আমি তোমার ছোট কালের বন্ধু। তাই আমি তোমার মুখে হাশি ফুটানোর জন্য এই মিথ্যা কথা বলেছি”। “তাই আমাকে ক্ষমা করে দাও”। হাতি বলল, “ঠিক আছে আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম”। এইভাবে ভুল বোঝাবুঝি মিটমাট হয়ে গেলো। এইভাবেই তারা সবসময় একে অপরের কাজে সাহায্য করতে লাগলো।
তো বন্ধুরা কি বুঝলে? কমেন্ট করে জানাও। সকলকে ধন্যবাদ।