কলেজের প্রথম দিন আর বাকি সবার মত আমি খুব খুশি ছিলাম। নতুন নতুন বন্ধু বান্ধবী হবে তাদের সাথে পরিচিত হব আরো কত কি মনে মনে ভাবছিলাম, হলোও তাই অনেকের সাথে পরিচিত হলাম।এভাবে কেটে গেলো ৩-৪ মাস,কিন্তু এর মাঝে একজনকে মিচ্ করে গেলাম। সে নাকি প্রতিদিন কলেজে আসে কিন্তু এই কয় মাসে আমি তাকে খেয়ালই করি না।
একদিন আমি আমার এক বন্ধুকে হাসির ছলেই বললাম দোস্ত একটা প্রেম করার দরকাররে।ও বললো তাহলে ((রিয়ার)) সাথে কর। এখানে মেয়েটার আসল নাম না দিয়ে আমি ((রিয়া))দিলাম।যাই হোক তারপর আমি বললাম রিয়াকে??ও বললো কেন আমাদের সাথেই তো পড়ে আর সবচেয়ে বড় কথা ও তো তোর গুরুপেই আ। আমি আরও একটু বিস্মিত হলাম কারন আমি এই কয় এক মাসে একটা ক্লাসও মিস করি নি আর আমাদের ছাত্র-ছাত্রী ও কম আর আমি চিনি না ওকে।আমার কথা শুনে ও তো বিশ্বাস করছে না। এখানে ওটা হলো আমার বন্ধু পাভেল।
পাভেলঃঃ তুই রিয়াকে চিনিস না তাই না😊। নেকামি কম করে কর।
আমি ঃঃ সত্যি বলছি ওকে চিনি না। মনে মনে৷৷ ভাবলাম হয়তো চেহারা ওতো ভালো না তাই আমার নজর ওর ওপর পড়ে নি।
পাভেলঃঃ ঠিক আছে চল দেখি চিনিস কিনা?
আমিঃঃঃ চল!
তারপর গেলাম ক্লাস রুমে।
পাভেল রিয়ার কাছে গেলো আর ওকে বললো দেখতো একে চিনিস কি না। রিয়া বললো কেনো কি হয়েছে।পাভেল বললো ও নাকি তোকে চেনে না।
রিয়া এই কতা শুনে একটু মাথাটা নিচে করলো আমি বুঝলাম ও লজ্জা পেয়েছে।তারপর ও মাথা তুলে বললো ঠিকই বলে। ও আমাকে চেনে না। এই কথা শুনে পাভেল বললো কেনো??রিয়া বললো চিনলে তো আর আজকে তোর সাথে আসতো না তাই বললাম।
কথাটা ওরা হাসির ওপরেই নিয়ে নিলো।আমি তখনও ওর মুখটা দেখার জন্য ছটফট করছিলাম।তখন পাভেল রিয়াকে বললো তোর মুখ থেকে ঘোমটাটা সরিয়ে ওকে একটু দর্শন দে ও তোকে একটু দেখুক।রিয়া তার মুখের ঘোমটা সরালো আর আমি তার দর্শন পেলাম।অনপক খন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম। কিন্তু কেন যেন রাগ হচ্ছিল।ওর ওপর হচ্ছিল না নিজের ওপর হচ্ছিল তা বুঝতে পারছিলাম না।তাই কিছু না বলে চলে গেলাম ওর কাছ থেকে।তারপরও আমি ওর সাথে কথা বলতাম না। পরিচিত হাওয়ার কয় একমাস পর ও আমার সাথে কথা বলতে আসলো।
রিয়াঃঃঃ আচ্ছা তুমি আমার সাথে কথা বলোনা কেন?
আমিঃঃঃ কেন তোমার সাথে কথা না বললে কি কোনো সমস্যা আছে।
রিয়াঃঃঃ না,তা নেই কিন্তু এক সাথে পড়ে যদি কথা না বলা হয় তাহলে কেমন দেখা যায় না।
আমিঃঃঃ একটু রাগ করেই ওকে কিছু কথা শুনিয়ে দেয়।এখন ঠিক মনে পড়ছে না।
রিয়া একটু মন খারাপ করেই চলে গেলো। আর বললো সবার সাথে কথা বলো আমার সাথে কথা বললে কি হয়।
আমি এবার একটু মনে মনে হাসলাম,আর ভাবলাম একটু বেশিই খারাপ ব্যবহার করছি ওর সাথে আর করা যাবে না।
তারপর আমি ওর সাথে ভালোভাবে অনেক কথা বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু কও কপাল আমার দুটো ভালো হলে আবার রাগারাগি হয়ে যায়। অবশ্য রাগারাগি হওয়ার পর একদিনও আমি ওর সাথে আগে কথা বলিনি।
ওই কিছু না কিছু খাবার নিয়ে এসে আমার রাগ ভাঙাতো।
কলেজের দুইটা বছর যেই দিনই কথা হয়েছে সেই দিনই ঝগড়া হয়ে।
সেকেন্ড ইয়ারে ওঠার পর আৃার এক বান্ধবীর সাথে কথা বলছিলাম।কিছু কথায় ঐ বান্ধবী আমাকে রিয়ার ব্যপারে বললো,যে রিয়ার পিছনে অনেক ছেলে ঘো। কিন্তু ও কাওকে পাত্তা দেয় না। এই সব আরো অনেক কিছু। আমি সেই সময় ঔই বান্ধবীকে বললাম তাহলে আমি চেষ্টা করলে ও ১ মাসের মধ্যে রাজি হয়ে যাবে। ও বললো তাহলে করে দেখা এই বলে ও আমার সাথে বাজি ধরলো।আমিও রাজি হলাম।কারণ এটা মান সম্মান এর ওপর চলে এসেছে।ঐই বয়সে এটাই কোন ছেলে মেয়ে মেনে নিতে পারে না যে তাকে কেউ না করে দেবে।
পরেরদিনঃঃঃ
আমি নিজে থেকে ওর সাথে কথা বলতে গেলাম।আমার কথা বলতে যাওয়া দেখে যে খুশি হয়েছিল তা আমি ওর চোখে ঐদিন দেখেছিলাম। তারপর আমি ওর সাথে কিছু কথা বলে চলে এলাম। এই কথা গুলো আমি আমার স্কুল লাইফের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলাম।
আমি একাই এই কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম আমার স্কুলের বন্ধুদের মাঝ থেকে।এটারও একটা গল্প আছে অন্য লেখায় বলবো।
বন্ধুরা বললো ও আমাকে ভালোবাসে।এর আগেও আমি ওদের সাথে শেয়ার করছি ওর বিষয়ে তাই ওরা বলছে এই কথা।আমি ওদের কথায় শায় দিলাম না।তখন ওরা বললো তাহলে একটা টেস্ট করে দেখ।আমি ওদের কথা মত ওদের বলা কাজ করলাম।
পরেরদিন কলেজে যেয়ে আমি একটা বান্ধবীকে দিয়ে ওকে ডেকে পাঠালা। ওকে বলতে বললাম রিয়াকে যেয়ে বলবি আমার কথা যে আমি ওকে কিছু বলতে চায় যা খুবই গুরুত্বপূ। বান্ধবী ওকে যেয়ে বলতে না বলতে ও এসে হাজি।
রিয়াঃঃঃ তুমি নাকি আমায় ডেকেছো??কি বলতে চাও বলো।
আমিঃঃঃ ওর কথা শুনে একটু লজ্জা পেলাম কি বলবো বুঝতে পারছি না।তাই চুপ করে আছি।
রিয়াঃঃঃবলো কি বলবে?
আমিঃঃ না কিছু না এমনি,কেমন আছো তুমি?
রিয়াঃঃঃ ভালো আছি। কি বলতে ডাকছো বলো একটু রাগ দেখিয়ে বললো।
আমিঃঃঃ রাগ দেখাচ্ছো কেনো!!বললাম না কিছু না যাও।৷ ওল্টো রাগ আমি দেখাইলা। কারণ ওর রাগ হয় অভিমানে আর আমার হয় ইগো হার্ট হলে।তাই আমি রাগ করলে ও একদম চুপ হয়ে যায়।
রিয়াঃঃঃ একটু নরম শুরে বললো কি বলবা বলো।
আমিঃঃঃ না কিছু না যাও😡😡 তাই বলে চলে গেলাম।
এই ভাবে আমি যদি ওকে বলতাম তোর সাথে কথা আছে ও ঐদিন আমার পিছু ছাড়তো না।
একদিন ও আমাকে খুব করে চেপে ধরলো বললো আজকে বলতেই হবে।
ক্লাস রুমে যারা ছিলো রিয়া তাদের সবাইকে বের করে দিলো।
একটা কথা বলি নি ওর বিষয়ে রিয়াকে আপনারা যতটা নরম ভাবছেন ও ততটা নরম স্বভাবের কিন্তু না। ওকে দেখে সবাই কম বেশি ভয় পায়। তার ওর এক কথায় সবাই রুম থেকে বের হয়ে গেলো। রিয়া এবার দরজা জানালা লাগিয়ে দিয়ে আমার ঠিক সামনে এসে বসলো। আমি বুজলাম কলেজটা কেমন যেন চুপচাপ হয়ে গেলো। কারও কোনও সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু সময়ের জন্য আমার মনে হলো আমি কোন মরুভূমির মাঝে আছি।কারণ আমার খুব গরম লাগছিলো।আমার পুরো শরীর ঘামে ভিজে যাচ্ছিলো আমি এই মুহূর্তে কথা কোনদিন ভুলবো না। কারণ এটা আমার জীবনের সবচেয়ে সেরা মুহূর্ত যার ভিতর আমি হাসি কান্না দুটোই খুঁজে পায়।
রিয়া যখন আমার এসে বসলো আর বললো আজকে বলতেই হবে।তখন আমি ঘাবড়ে গেছিলা।কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না।আমি ওকে বললাম কি বলবো।
রিয়া বললো তোর যা মনে আসে তাই বল আমি কিছু মনে করবো না। একটা কথা এতদিন কথার মাঝে আমাদের সম্পর্কটা তুমি থেকে তুইতে যেয়ে দাঁড়িছে।
যাই হোক ও বললো বল….
আমি বললাম কোথা থেকে শুরু করবো ও বললো যেখান থেকে তোর ইচ্ছে যা বলে তুই খুশি আমিও তাই শুনে খুশি।তখন দেয়ালের ঐই পার থেকে অনেক আওয়াজ ভেসে আসলো আর আওয়াজে ভেসে আসলো বল ভালোবাসি I LOVE YOU
আমি একটু মাথা উঁচু করে দেখলাম রিয়া মিটমিট করে হাসছে আর বলছে এখন বল কি হলো বল।
আমি চারিদিকে একটু চোখ ঘোরালাম দেখলাম কেউ জানালা দিয়ে কেউ দেয়ালে থাকা ছিদ্র দিয়ে আর যে যেভাবে পারছে আমাদের দেখছে আর আমাদের কথা শুনছে।
রিয়া আমাকে বলছে বল তাড়াতাড়ি বল।
এবার আমার পালা……..আমি বললাম………………
- নোটঃঃঃ সময়ের কারনে আজ আর লিখতে পারছি না পরের খন্ডে শেষ করবো। এটা আমার জীবনের সত্য ঘটনা।লেখায় কোনো ভুল থাকলে মাপ করবেন।