বর্তমানে বিশ্ববাসীর প্রধান সংকটের নাম নিঃসন্দেহে “করোনা মহামারী”।
করোনা মহামারী শুরুর পর থেকেই আমাদেরকে স্বাস্থ সুরক্ষার দিকে নজর দিতে বলা হচ্ছে। আর এ জন্য বার বার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়ার প্রতি জোর দেয়া হচ্ছে।
আমি যেই বিষয়টি আজকে শেয়ার করতে যাচ্ছি তা আমাকে অনেকটাই অবাক করেছে সাথে সাথে হতাশ ও!
বলা হয়েছে বার বার ২০ সেকেন্ড সময় ধরে খুব ভালো ভাবে হাত ধুতে হবে। আমার আশংকার বিষয় হলো –
“একটা নরমাল ট্যাপ ব্যবহার করে ২০ সেকেন্ডের অধিক সময় খরচ না করে হাত ধুতে কমপক্ষে ১.৫- ২ লিটারের মত পানি খরচ হয়!”
এখন প্রশ্ন হলো, আপনি কি ২০ সেকেন্ডে হাত ধুয়ে ট্যাপ বন্ধ করতে পারেন? নাকি আরো অধিক সময় নেন? সত্যি তো এটাই যে, আমি নিজে পরীক্ষা করে দেখেছি আমার প্রায় ৪০ সেকেন্ড সময় লেগে যায়।
সে অনুযায়ী প্রতি দিন হাত ধোয়ার জন্য একজন মানুষ কম করে হলেও ৩০ থেকে ৩৫ লিটার পানি খরচ করি। তাহলে ৪ সদস্যের একটি পরিবার কমপক্ষে ১২০ লিটার পানি করচ করে।
এবার আসি মূল কথায় যা আমাকে আসলেই প্রচন্ড হতাশ করেছে –
আমরা জানি, আমাদের ব্যবহারযোগ্য পানি সাধারণত আমরা সাধারণ নলকূপ বা গভীর নলকূপ দিয়ে ভূ-গর্ভ থেকে উত্তোলন করে থাকি। ধারনা করা হচ্ছে, এ ভাবে দৈনিক ভূ-গর্ভস্থ পানি খরচ করার কারনে ২০৫০ সালের আগেই বাংলাদেশের ঢাকা সহ অনেকগুলা শহরে পানির সংকট দেখা দিবে। এখনই ঢাকার এমন অনেক এলাকা আছে যেখানে অধিকাংশ মানুষ ভালো পানি পাচ্ছে না খাবার কিংবা গোসলের জন্য।
শুধু বাংলাদেশ নয় ভারতের NITI এর জরীপ মতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ভারতের প্রায় ২১ টা শহরে কোন প্রকার ভু-গর্ভস্থ পানি পাওয়া যাবে না।
এক গবেষণা থেকে জানা যায়, বর্তমান বিশ্বের অন্তত ৪০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৩০০ কোটি মানুষ ব্যাবহার উপযোগী পানি সংকটে ভুগছে। যার মধ্যে ৩৩% ভারতবর্ষের বাসিন্দা।
এছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে সুপেয় পানির সংকটে ভুগছে প্রায় ৭৬ কোটিরও বেশি মানুষ। তাদের মতে, ২০৫০ সাল নাগাদ ৯৩০ কোটি মানুষের মধ্যে ৭০০ কোটি মানুষ সুপেয় পানির সংকটে পড়বে। তাই বলছি, এখনো সময় আছে পানির অপচয় বন্ধ করুন।
আপনি হয়তো ভাবছেন আপনি একা কি করবেন? আপনি একা একজন যদি জাস্ট ৪০ সেকেন্ড ট্যাপ ছেড়ে হাত না ধুয়ে ২০ সেকেন্ডে হাত ধোয়া শেষ করতে পারেন, তাহলে আপনি একাই দৈনিক ২০ লিটার পানির অপচয় কমাতে পারেন! যদি পরিবারের ৪ জনকে বুঝাতে পারেন তবে ৮০ – ১০০ লিটার পানি অপচয় বন্ধ করতে পারছেন! পরিমাণটি কিন্তু নেহাত কম নয়!
তাই বলছি, “আসুন আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সতর্ক হই। পনির অপচয় রোধ করি। আগামী প্রজন্মের জন্য পানির নিরাপদ সংস্থান নিশ্চিত করি।“
আল্লাহ্ হাফিজ।