গত কোন একটি আর্টিকেল আমি অতিরিক্ত পানি খাওয়ার পরিণাম এই শিরোনাম দিয়ে লিখেছি।আর আজ তারই উল্টো কোন এক আর্টিকেল নিয়ে লিখব।অর্থাৎ আজকের টপিকটির নাম ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা।আজকের টপিকটিও গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।তাই মনযোগ দিয়ে আর্টিকেলটি পড়লেও অনেক কিছু জানতে পারবেন আর সতর্কও হতে পারবেন। তো চলুন শুরু করা যাক।
অতিরিক্ত পানি খেলে যেমন Over hydration বা Intoxication হয় তেমনি দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে গেলে Dehydration বা পানিশূন্যতা হয়।
একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক ২-৩ লিটার পানি খেতে হয়,কিন্তু কেউ যখন এর চেয়ে কম পানি নিয়মিত খেতে থাকে, তখন তার যে রোগটি হয় সেটিই ডি-হাইড্রেশন।আমরা হয়তো ডি-হাইড্রেশন কত রকমের সেটা অনেকেই জানি না।তবে গত সপ্তাহে এই সম্পর্কে হালকা ধারণা দিয়েছিলাম তাই আজ সেটার বিস্তারিত রূপ প্রদান করব। ডি-হাইড্রশন মূলত তিন ধরণের যথাঃMild dehydration, Moderate dehydration এবং Severe dehydration.
1)Mild dehydration :এটা তখন হবে যখন আপনার দেহ থেকে ৫% পানি বের হয়ে যাবে।তবে এটা এতটা ক্ষতিকর নয় অর্থাৎ অতিরিক্ত তরল খেলেই আপনার এটি ঠিক হয়ে যাবার একটি সম্ভবনা থাকে।
লক্ষণসমূহঃ
1)মুখের ভিতর শুষ্কতা থাক
2)অতিরিক্ত পানি পিপাসা পাবে
3)আপনার ঘাম কমে যাবে
4)প্রস্বাব কমে যাবে
5)মাথা ব্যাথা হবে
6)মাথা ঘোরাবে
7)সাধারণ দুর্বলতা থাকবে
8)পা এবং বাহুতে ক্রাম্পস থাকবে
2)Moderate dehydration : এক্ষেত্রে যখন আপনার দেহ হতে ১০% পানি বের হয়ে যায় তখনই এটি হবে। এটির লক্ষণ:
১)রক্তের পরিমাণ হ্রাস পায়
২)হৃদপিণ্ডজনিত সমস্যা দেখা দেয়
৩)লো ব্লাড প্রেসার হয়
৪)অনেক ক্ষেত্রে সংজ্ঞানাশ হয়
3)Severe dehydration : এক্ষেত্রে আপনার দেহ হতে বিপুল পরিমাণ অর্থাৎ ১৫% পানি বের হয়ে যায়।এই ক্ষেত্রে Hospitalized হওয়া অত্যন্ত জরুরী।
লক্ষণসমূহঃ
১)কিডনি,ব্রেন,লিভারের ক্ষতি হয়
২)মেন্টাল ডিপ্রেশন শুরু হয়
৩)খিঁচুনি হয়
৪)অনেক সময় কোমা তে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।
আবার পানি ও সোডিয়াম বের হয়ে যাওয়ার ভিত্তিতেও তিন রকমের ডাইরিয়া রয়েছে এগুলো হলোঃIsotonic dehydration,Hypertonic dehydration,Hypotonic dehydration
Isotonic dehydration :যখন সোডিয়াম ও পানি একই সাথে বের হয়ে যায়।বমি বা ডাইরিয়ার ফলে এটি হয়।
Hypertonic dehydration : এইক্ষেত্রে পানি সোডিয়ামের তুলনায় বেশী বের হয়ে যায়
Hypotonic dehydration :এইক্ষেত্রে সোডিয়াম পানির তুলনায় বেশী বের হয়ে যায়।
Dehydration হবার কিছু কারণ আছে যেমনঃ
১)ডাইরিয়া হলে।অর্থাৎ ডাইরিয়া হলে আপনার দেহ হতে বেশী তরল বের হয়ে যায়।
২)অতিরিক্ত প্রসাব হলে,এটা কিডনি বা রেনাল সমস্যা হলে ব্যাপারটি হয়ে থাকে
৩)হরমোনজনিত রোগ থাকলেও এটি হতে পারে
৪)অনেক ক্ষণ ধরে টানা পরিশ্রম করে বেশী বেশী পানি পান না করে থাকলে
৫)অতিরিক্ত ঘাম বের হলে
ট্রিটমেন্টঃMild আর Modarate Dehydration হলে বেশী পানি আর স্যালাইন খান। তবে লক্ষণ অনুযায়ী যদি আপনার Severe dehydration হয়ে থাকে তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
প্রতিরোধঃ এই ধরণের রোগ যেন না হয় তাই আগেই থেকেই প্রতিবোধের ব্যবস্থা করতে হবে। Dehydration প্রতিরোধ করতে হলে নিয়মিত ২-৩ লিটার পানি খান,খুব ভারী কাজ বা পরিশ্রম শেষে অবশ্যই পানি খাবেস।কফি,সফট্ ড্রিংক এগুলো কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন।বেশী শাকসবজি, কুমড়া(মূত্র সমস্যার জন্য ভালো কাজে দেয়) খান।আর সুস্থ থাকুন।
আশা করি পানিশূন্যতা রোগ সম্পর্কে অনেকটাই জানতে পেরেছেন। সবাই ভালো থাকবেন।ধন্যবাদ সবাইকে।