সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আমাদের এই বাংলাদেশ। এ দেশে অধিকাংশ লোক কৃষক ।হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে গড়ে উঠেছে দেশের অর্থনীতি। আপন সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়ে তারা জাতির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। দুঃখ দারিদ্র্র্র লাঞ্ছনা গঞ্জনা সহ্য করে করে তারা।
কৃষকের জীবন দুঃখে কষ্টে ভরপুর ।অভাব তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী ।সে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে কঠিন জমিতে শস্য ফলায় কিন্তু সে তার ফল পায় না। ফলে তারা উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বিনিয়োগ করতে পারেনা। শক্তিশালী বলদ কিনতে পারে না। পারেনা ভালো বীজ কিনতে। বাংলার কৃষকেরা বহুকাল ধরে শোষণের শিকার। তাদের চাওয়া অত্যন্ত সীমিত। কেবল খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকা। কিন্তু সে বেঁচে থাকার অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত।
যারা কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে তারাই কৃষক কৃষক কঠিন মাটির বুকে লাঙ্গল চালিয়ে শস্য উৎপাদন করে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা মাঠে কাজ করে ।কৃষক কঠিন মাটির বুকে লাঙ্গল চালিয়ে শস্য উৎপাদন করে।
কৃষক এর বর্তমান অবস্থা বড় করুন। দেশের জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির ফলে মাথাপিছু জমির পরিমাণ এখন অনেক কমে গেছে। দেশের অধিকাংশ কৃষক ভূমিহীন। তারা তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও স্বনির্ভর হতে পারছে না। অর্ধেক এই জমির মালিক কে দিতে হয় তারা যা চাষ করে। তাছাড়া বীজ সার কীটনাশক ঔষধ এর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার তারা ঠিকমতো তা প্রয়োগ করতে পারে না। এখানে তাদেরকে নির্ভর করতে হচ্ছে সে এক জোড়া বলদ এর উপর। তাই যা দরকার সেই অনুযায়ী উৎপাদন করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না ।তাদেরকে এখনো চড়া সুদে ঋণ গ্রহণ করতে হয়। মহাজনের সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে তারা জমি হালের বলদ কিংবা ভিটে বাড়ি বিক্রি করে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র তে বাঁধা পড়ে।
বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব সাফল্যের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কৃষি পদ্ধতির উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই আছে। বরং বলা যায় অবস্থার আরো অবনতি হচ্ছে হচ্ছে। আমাদের কৃষকেরা শিক্ষার আলো থেকে এখন ও অনেক দূরে। তাই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ এবং কৃষির আধুনিক যন্ত্রপাতি সম্বন্ধে তারা অজ্ঞ। এছাড়া জমিতে সেচ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন এখনো সম্ভব হয়নি ।এদেশের ভাগ্যহত কৃষক কুল এখনো প্রকৃতির খেয়াল খুশির উপর নির্ভর করতে হয়। অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টি মরুক বন্যা ধরেধরা দলের শাস্তিতে প্রতি বছর প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার ফসল বিনষ্ট হয়। বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতি কে চাঙ্গা করতে হলে কিছু ক্ষেত্রে বিপ্লব প্রয়োজন ।আর এ জন্য কৃষকদের জীবনযাত্রা ও দৃষ্টিভঙ্গির সম্পূর্ণ পরিবর্তন প্রয়োজন ।কৃষক বাঁচলে আর কৃষি বাঁচলে আমাদের দেশ বাঁচবে। তাই আর কাল বিলম্ব না করে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ এদেশে প্রয়োগ করতে হবে ।কৃষি ক্ষেত্রে যান্ত্রিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে পৃথিবীর বহুদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে ।এদেশে যদি তা প্রয়োগ করা হয় তাহলে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। এর জন্য সবার আগে প্রয়োজন আমাদের শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা এ বিষয়ে সরকারকে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।
বাংলা কৃষক সমাজ আজ সব মানুষের মুখে যারা অন্ন তুলে দিচ্ছে তারা কৃষক। এদেশের পবিত্র মাটির সঙ্গে তাদের আত্মার সম্পর্ক তাঁরা কৃষক। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে তারা কৃষক। কৃষক সমাজের উন্নতির জন্য তাই আমাদের প্রত্যেকের মনোযোগী হওয়া উচিত।
👉আসসালামু আলাইকুম।