কমবেশি সবাই বর্তমান বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষই বিটকয়েন শব্দটির সাথে পরিচিত।তারপরও একটু সংক্ষেপে জানা যাকঃ
বিটকয়েন হলো একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি যা বিশ্বের সর্বপ্রথম ওপেন-সোর্স যার মাধ্যমে লেনদেনের জন্য ধরনের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বা অন্য কিছুর দরকার হয় না ।তবে এটি কোন দেশের সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত মুদ্রা নয়। এটির ব্যবহার শুধুমাত্র অনলাইন কর্তৃক ।বিটকয়েনের ক্ষুদ্র একক হচ্ছে সাতোশি এবং এই নামটি এসেছে মূলত সাতোশি নাকামোতো ছদ্ম নামের কোন এক ব্যক্তি কর্তৃক যিনি এই বিটকয়েন এর প্রতিষ্ঠাতা। এবং এই বিটকয়েনের প্রচলন শুরু হয় 2009 সালে। এই মুদ্রা ও এর প্রবর্তক কে ঘিরে নানা জল্পনা-কল্পনা রয়েছে, যা এখনো উন্মোচননার বাইরে।চলুন এইবার যাওয়া যাক বিটকয়েন সম্পর্কে কিছু মজার তউড়ে যাবে তথ্যেঃ
বিটকয়েন ক্রয়ঃ
প্রায় 90% লোকই মনে করেন যে বিটকয়েন কিনতে গেলে ১ বিটকয়েনই কিনতে হবে।এ ধারণাটি ভুল। বর্তমান সময়ে এক বিটকয়েন এর বাজার মূল্য প্রায় ৩৮৬০ ইউ এস ডলার, বাংলাদেশি টাকায় তিন লক্ষ টাকারও বেশি। যে কেউ ইচ্ছে করলে এক বিটকয়েন এর চেয়ে কমও কিনতে পারে।যেমন 0.01 বিটকয়েন, এমনকি 0.001 বিটকয়েনও কিনতে পারে। যে কেউ চাইলেই 8 দশমিক স্থান পর্যন্ত বিটকয়েন কিনতে পারেন।
বিটকয়েনের চাহিদাঃ
অনেকেরই ধারণা যে বিটকয়েনের দাম কখনো কমে না বরং বাড়তে থাকে এটি একটি ভুল ধারণা ছাড়া কিছুই নয়। কারণ বিটকয়েনের বাজারদর আর শেয়ার মার্কেট এর বাজারদর একই রকম ।এটি যে কোন সময় বাড়তেও পারে আবার কমতেও পারে।
লেনদেন ট্র্যাকিংঃ
বিটকয়েন সম্পর্কে মানুষের ভ্রান্ত ধারণার অভাব নেই এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ভুল ধারণা হল লেনদেন ট্র্যাক করার ধারণাটি। অনেকেই মনে করেন বিটকয়েনের লেনদেনটি অনেক গোপনীয় একটি বিষয় বা লেনদেন, তবে সত্যিটা হলো ব্যাপারটা মূলত গোপনীয় নয় বরং পাবলিক ।ব্লকচেইনে এন্ট্রি হয়ে যায় প্রতিটি বিটকয়েনের লেনদেনই,আর এসব তথ্য যে কোন বুদ্ধিমান ব্যবহারকারীদের পক্ষেই সম্ভব ট্র্যাক করা। সুতরাং এ থেকে প্রমাণিত হয় যে এটি একটি ভুল ধারনা যে বিক্রয় করা সম্ভব নয়।
একমাত্র ক্রিপ্টোকারেন্সি কি শুধুমাত্র বিটকয়েনই ?
যদি কেউ মনে করেন যে বিটকয়েনই শুধুমাত্র একমাত্র ক্রিপ্টোকারেন্সি তাহলে আপনার ধারনাটা ভুল কারণ বিটকয়েন ছাড়াও আরো অনেক ক্রিপ্টোকারেন্সি আছে।স্টেলার,ইথারিয়াম, লাইটকয়েন এরকম অনেক ক্রিপ্টোকারেন্সি বিদ্যমান রয়েছে বাজারে। অতএব বিটকয়েন একমাত্র ক্রিপ্টোকারেন্সি নয়। তবে জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিটকয়েন সবচেয়ে উপরে।
বিটকয়েন মাইনিংঃ
মাইনিং হলো বিটকয়েনের মূল উৎস, যেটি করা হয় বিশেষ ধরনের কম্পিউটার এর মাধ্যমে। তবে এটি ভুল ধারণা যে, যেকোনো কম্পিউটারেই বিটকয়েন মাইনিং সম্ভব।আর যদিও কোনভাবে সম্ভব হয় তাহলে তার লাভের হার সন্দেহজনক হবে। কারণ অনেক কম্পিউটিং পাওয়ার আর উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োজন বিটকয়েন মাইনিং এ লাভের মুখ দেখতে হলে।
সরবরাহকৃত মোট বিটকয়েনঃ
ইন্টারনেটের অনেক ওয়েবসাইটে এই তথ্য পাওয়া যায় যে, বিটকয়েনের সরবরাহ সীমিত পরিমাণের। এটি একটি সত্য ধারণা। মোট 21 মিলিয়ন বিটকয়েন মাইন করা সম্ভব হবে বিদ্যমান অবস্থায়। তবে বিটকয়েন লেনদেনের পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে বৃদ্ধি করা যাবে এর ভগ্নাংশের মাধ্যমে।
বিটকয়েনের আইন ব্যবস্থাঃ
আইন দ্বারা কি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বিটকয়েন? অনেকেই মনে করে থাকেন ছদ্মনামে থাকায় এটি হয়তো আইনের চোখ এড়াতে পারে, এই ধারণাটি ভুল কারণ আইন বিটকয়েনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এটি অসম্ভব কিছু নয়। ইতোমধ্যে অনেক দেশেই বিটকয়েন কে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশেও এরকম ক্রিপ্টোকারেন্সি বৈধ নয় উল্লেখ করা হয়েছে এবং সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক। এএফপি এবং টেলিগ্রাফের 2014 সালের একটি রিপোর্ট বলছে এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিটকয়েন লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জানানো হয়েছে এএফপি’ কে।