ছবি সংগৃহীত
বাংলাসেশের সর্ব দক্ষিন-পুর্ব সীমান্ত; সেন্টমার্টিন যা কিনা মিয়ানমার সীমানার সাথে সংযুক্ত, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সেখানে আবারো ভারি অস্ত্রসহ বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। প্রায় ২২ বছর পর সেন্টমার্টিন দ্বীপ সীমান্তে পূনরায় বিজিবি মোতায়েন করা হল। এর আগে ১৯৯৭ সালে সেখানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছিল। গতকাল ৭ এপ্রিল থেকে ভারি অস্ত্র সহ সেখানে বিজিবির সদ্যসরা পুনরায় টহল দিতে শুরু করেছে।
টেকনাফস্থ বিজিবির ২ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর’ সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত সেন্টমার্টিন দ্বীপের নিরাপত্তায় বিজিবি নিয়জিত ছিল। কিন্তু এর পর কোস্টগার্ডকে সেখানকার দায়িত্ব দেয়া হয়। তাই এত দিন সেখানে বিজিবি নিয়মিত টহল দিতে না পারলেও ভিবিন্ন সময় মাদক চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছে। বর্তমান সরকার চাচ্ছেন যে বিজিবি সেখানে আবারো টহল দিক। তাই পূনরায় সেখানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। তারা নিয়মিত চোরাচালান প্রতিরোধ, মানবপাচার রোধ ও সীমান্ত পাহারায় নিয়োজিত থাকবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য বর্তমানে রোহিঙ্গা ইস্যু সহ বেশ কিছু বিষয়ে প্রতিবেশিদেশ মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে । এর আগে ১৯৯৭ সাল ও এর পরবর্তি সময়ে মিয়ানমার বেশ কিছু বার সেন্টমার্টিনকে তাদের ভূখন্ডের বলে দাবি করেছিল। সর্বশেষ ২০১৮ সালে সেন্টমার্টিনকে মিয়ানমার তাদের অংশ হিসেবে দাবি করেছিল। সম্প্রতি সে দেশের জনসংখ্যা বিষয়ক সরকারী ওয়েবসাইটে যে মানচিত্র প্রকাশ করা হয়, তাতে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নীলাভূমি সেন্টমার্টিনকে তাদের দেশের অংশ হিসেবে দেখানো হয়। পরে মিয়ানমারের তৎকালিন রাষ্ট্রদূত উ লুই ও;-কে তলব করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এবং এর প্রতিবাদ জানালে মিয়ানমার সেই মানচিত্র থেকে সেন্টমার্টিনকে বাদ দিয়ে তাদের মানচিত্র সংশধোন করেন। ১৯৩৭ সালে যখন বৃটিশ সরকারের শাসনামলে বার্মা ও ভারত ভাগ হয় তখন সেন্টমার্টিন ভারতের ভূখণ্ডে পরেছিল এবং পরবর্তি কালে ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পূর্ব পাকিস্তান ও এর পরবর্তি কালে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বর্তমান বাংলাদেশের ভূখন্ডে অন্তরগত হয় এই সেন্টমার্টিন দ্বীপ। সেন্টমার্টিনকে বাংলাদেশের ভূখন্ডের ধরেনিয়েই ১৯৭৪ সালে মিয়ানমারের সাথে সামুদ্রিক যুক্তি হয়েছিল।
সেন্টমার্টিনকে মিয়ানমারের দাবি করার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সেন্টমার্টিনকে মিয়ানমারের দাবির বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নিলাভূমি কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনকে মিয়ানমার যে তাদের বলে দাবি করছে সে বিষয়ট সরকারের মাথায় আছে। বাংলাদেশের শেষ সীমানা হল সেন্ট মার্টিন দ্বীপ সেখানে এর আগেও বিজিবি মোতায়েন ছিল, এর পরবর্তি সময়ে সেখানে কোস্টগার্ড দায়িত্ব নেয়। কিন্তু সরকার আবার মনে করছে সেখানে বিজিবি মোতায়েন করা দরকার তাই সেখানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। মিয়ানমার সেন্টমার্টিনকে তাদের সিমানা দাবি করায় সেখানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে কিনা’ সে ব্যাপারে জানতে চাইলে সরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, তেমন কিছুই না কিন্তু সরকার সেন্টমার্টিনের নিরাপত্তার জন্যই বিজিবি মোতায়েন করেছে। সব কিছু মাথায় রেখেই সেখানে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।