প্রথমে আসে কিপটে,
তার পর আসে হার কিপটে
তার পর আসি আমি।
হ্যা আমি।
আমি ইসতিয়াক আহমেদ।
ছোট খাটো একটা চাকরি করতাম ব্যাংকে।করতাম এখন আর করি না।এখন আমি অন্ধকারাচ্ছন্ন এক দুনিয়ায়।যেখানে আলো নেই,বাতাস ঢোকার কোন পথ নেই।শুধু যন্ত্রণা আর যন্ত্রণা।তাহলে আমার গল্প শুরু করা যাক:
আমার প্রথম পরিচয় হচ্ছে যে আমি কিপটের রাজা।আমার মত কিপটে এই দুনিয়ায় আর দুটো আছে কিনা সন্ধেহ।আমি এত তাই কিপটে যে কষ্ট করে বিছানায় শুয়ে থাকবো।কিন্তু আমার পিঠের নিচে কোন মেট্রিকস নেই।আমি এত টাই কিপটে যে আমার ইউজ করা মোবাইল ফোন টা ও সেই আজ থেকে ১৮ বছর আগের কেনা নোকিয়া ১১০০।ব্যাংকের সকল কাজ আমি এই মোবাইলে হিসেব করি।কিভাবে জানেন।আমার ব্যাংকের সব হিসাব আমি একটা মেসেজে লিখে সেটাকে ড্রিফট আকারে সেফ করে রাখি।আমার একটা পার্সোনাল ফেসবুক আইডি আছে।ভাবছেন আমার কাছে স্মার্ট ফোন নাই আমি আবার কি করে ফেসবুক ইউজ করব।বুদ্ধি থাকলে উপায় হয়।আমি *৩৫০# ডায়াল করে ফেসবুক ইউজ করি।সপ্তাহে ৫ টাকা করে কাটে।কিছু দিন ইউজ করার পর আর ইউজ করি নাই।আমার সকাল টা শুরু হয় নিমের দাতন দিয়ে দাঁত মেজে।তারপর হাত মুখ ধুয়ে বাজারে গিয়ে দোকান দার দের পটিয়ে পাটিয়ে একটু ময়দা,একটু চাল,একটু ডাল,একটু সবজি নিয়ে আসি।এক সপ্তাহ পর আবার যাই।আমার দুপুরের লাঞ্চ এ একই ভাবে আমার কলিগ দের পটিয়ে পাটিয়ে টিফিন জোগাড় করি।আমার স্বভাব হলে গেছে।তাই ওরা বেশি করেই আনে।এর পর খালি পেটে বা এক গ্লাস পানি খেয়ে ঘুম।এই ভাবেই আমার দিন নিপাত হতে থাকলো।অবশ্য আমার ঘরে যে একটা যন্ত্রণা আছে ও আবার আমার এই কিপটামি সহ্য করতে পারে না।আমার তাতে কোন যায় আসে না।
তো এই ভাবে কিপটামি করতে করতে আমি বেশ এখন প্রায় ১.৫ কোটি টাকার মালিক।কাল ব্যাংকে গিয়ে টাকা গুলো দেখে আসতে হবে।সব ঠিকঠাক আছে কি না।এই ভেবে আমি মনের আনন্দে ঘুমিয়ে পরলাম।
আমি ঘুমচ্ছি!
ঘুমচ্ছি!
ঘুমচ্ছি!
ঘুমচ্ছি!
পরের দিন সকালে উঠে দেখি আমার চার পাশে কেমন যেন অন্ধকার।আমার বিছানায় হাত বুলাতে লাগলাম আর বুঝতে পারলাম আমি বিছানায় শুয়ে আছি।উপরে হাত বুলালাম শক্ত কিছু অনুভব করলাম। ডান ও বাম সাইডে একই অবস্থা। একি আমি সাদা কাপড়ে মোড়ানো কেন।তাহলে কি আমি …..
হ্যা আমি আর বেঁচে নেই।আমার এত টাকা পয়সা ছিল ব্যাংকে।আমি তাহলে পৃথিবী তে কিছুই ভোগ করতে পারলাম না।
পৃথিবীর মানুষ এত খারাপ।আমার স্ত্রী এত নির্দয়। ওরা আমার জন্য একটা পয়সাও কবরে রেখে গেল না।
এই গল্প টা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।প্রথমত জীবন টা উপভোগ করার আর আর আমাদের মাস্টার মাইন্ড সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করা।জিবনে কিপটামি করে কোনো লাভ নাই।এক সময় আপনার জীবন সীমা শেষ হয়ে যাবে।আপনিও শেষ হয়ে যাবেন।
গল্প টা পড়ার জন্য ধন্যবাদ!
সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা!
শুভ নববর্ষ