বর্তমান প্রযুক্তির জগতে স্মার্টফোন একটি অত্যাবশকীয় উপাদান। কিন্তু এটি যেমন অত্যাবশকীয় উপাদান সেই সাথে এর দোষ-ত্রুটিও রয়েছে। এটি আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্তাকে সহজ করেছে বলা চলে। কিন্তু এর নেগেটিভ দিকটা হলো গেমিং প্লাটফর্ম। গেমিং প্লাটফর্মকে নেগেটিভ প্লাটফর্ম কেন বললাম? অনেকেই অবসর সময়ে গেম খেলে সময় কাটায় সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু যারা গেমটাকে আসক্তিতে পরিণত করে ফেলেছে তাদের ব্যাপারে কি বলতে পারি। বিশেষ করে উঠতি বয়সের যুব সমাজদের মাঝে এটি কেমন প্রভাব ফেলছে? তাদের কাছে স্মার্টফোন মানেই গেমিং। একটি স্মার্টফোন আছে তো গেম ইনস্টল থাকতেই হবে। গেমসের প্রতি আসক্ত দিনদিন তাদেরকে অলস করে দিচ্ছে। কর্মস্পৃহা তাদের মধ্যে কাজ করছে। দিন-রাত মোবাইল গেমসেই সময় দিচ্ছে। আসলে এ প্রসঙ্গে অনেক কিছুই বলা যায়।
কাজের কথায় আসি, বর্তমানে বহুলভাবে জনপ্রিয় একটি গেমের নাম ফ্রি ফায়ার। প্লে স্টোরে সকল গেমের মধ্যে সেরা ৫-এ থাকবে সম্ভবত এটি। গেমটির মাস্টারমাইন্ড হলো চীন। এখন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। করোনাকালে এটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। প্রায় সবাই গেমটা সম্পর্কে জানেন। অনেকের কাছে গেমটির নাম শুনলে এক ধরণের ঘৃণা কাজ করে। অবশ্য এর যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ফ্রি ফায়ারকে ব্যস্ত থাকার গেমও বলতে পারি। কেননা এটি এমন একটি গেম যেটিতে একবার কেউ আসক্ত হয়ে গেলে তার দিনটাই ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যায়। গেমটি ছাড়া এক মূহুর্ত চলেই না। এটি দিনদিন বন্ধুত্বের মাঝে দুরত্ব বাড়াচ্ছে। বন্ধুদের মাঝে আড্ডার সময়টুকু এখন গেমের পুজি। আরো একটি কথা, কিছুদিন আগে শুনেছিলাম গেমটিতে ইসলাম বিরোধী কিছু কার্যকলাপ রয়েছে। কাবা শরিফ ভাঙ্গা, আল্লাহর নাম বিকৃত আরো কত কি। একজন মুসলিম হিসেবেও গেমটি খেলা উচিৎ নয়। যাইহোক গেমটির নেগেটিভ ব্যাপারে অনেক কিছুই বলা যাবে। আর বলবো না।
একটি গল্প দিয়ে আলোচনাটা শেষ করি- (যুবক তোমার যেমন হওয়া উচিৎ)
আবির, খুব ভদ্র এবং সময়নিষ্ঠ এক ছেলে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে চেষ্টা করে সে। বাজে কোনো অভ্যাস তার মধ্যে নেই। প্রতিদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে ফজরের নামাজ পড়ে দিনটা শুরু করে। তারপর সকাল সকাল একটু হাটাহাটি করে বাড়ি ফিরে আসে। তারপর একজন ছাত্র হিসেবে প্রতিদিনের মতোই পড়তে বসে। কলেজের সময় হলে গোসল করে পরিপাটি হয়ে কলেজে যায়। তার অনেক বন্ধুরাই আছে যারা ফ্রি ফায়ারে আসক্ত কিন্তু সে জানে ফ্রি ফায়ার গেমটি খুব আসক্তিজনক। তাই এটি খেলবে কি তার মোবাইলে ইনস্টল পর্যন্ত করতে চায় না।
কলেজের ক্লাস শেষ হলে সোজা বাড়ি চলে আসে। অন্যান্যদের মতো আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট করে বাড়ি ফেরার অভ্যাস তার নেই। তাই যেখানে সেখানে সময় নষ্ট না করে বাড়িতেই চলে আসে। তার কলেজ ছুটি হয় বিকেল ৩টায়। বাকি সময়টুকু বাড়িতে বিভিন্ন কাজ করে কাটিয়ে দেয়। বন্ধুদের ব্যাপারেও সে বেশ সজাগ। বন্ধুদের সাথে সে আড্ডাও দেয় তবে সীমিত। পড়া কিংবা কাজ বাদ দিয়ে আড্ডায় মেতে উঠে না। যাইহোক, সে নামাজের প্রতি বিশেষ যত্নশীল। কারণ সে বিশ্বাস করে নামায সকল অশ্লীল কাজ থেকে মানুষকে হেফাজত করে। তাই তার দৈনন্দিন রুটিনে নামাজ খুব গুরুত্ব পায়।
সন্ধায় বাড়ির কাজ শেষ করে পড়তে বসে এবং পড়া শেষ করে ঠিক সময় ঘুমাতে যায়। এভাবেই তার দিন কাটে।