কিছু কিছু মানুষের গল্প থাকে যা শুধু গল্প নয়। জীবন মানেই গল্প আর গল্প মানেই জীবন। যে জীবনে গল্প নেই, সে জীবন লবন ছাড়া পান্তা ভাতের মত। সে জীবনে নেই কোন স্বাদ, নেই কোনো গন্ধ, নেই কোনো মিষ্টতা, নেই কোনো অভিজ্ঞতা। সে জীবন মিছেমিছি, পশু পাখির ন্যায় বেঁচে থাকার চেয়ে বড় কিছু নয়। যার জীবন আছে তার গল্প আছে। আর যার গল্প আছে, তার আছে কিছু কষ্ট, কিছু আবেগ আর কিছু ভালোবাসা। আরে সবকিছুই জীবনকে নিয়ে যায়, জীবনের কাছে। জীবন মানেই কিছু জীবনের বৈচিত্রতা, কিছুটা আদিখ্যেতা, বাকিটা অতীত।
ভবিষ্যতকে আমরা কখনো ছুতে পারি না। যে দিনটি যায় সেটি অতীত হয়ে যায়। তবে কোন জীবন আলোর, আবার কোন জীবন অন্ধকার এর। জীবনে আলো নেই, সে জীবনে অন্ধকার ও নেই। আলো- আঁধারের এই গোলকধাধায় জীবনকে গল্প বানিয়ে দেয়। হয়তো শুভর জীবনের গল্পটা ও ঠিক সেরকম।
শুভ খুব শান্ত স্বভাবের একটি ছেলে। এলাকায় তার সুনাম আছে ভদ্র ছেলে হিসেবে। সবার সাথে মিষ্টি মিষ্টি আচরণ তার। কেউ বলতে পারবে না ছেলেটি অভদ্র।
আরে ভদ্রতায় তার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। মা বাবা সব সময় বলে, দেখিস তোকে মানুষ ঠকাবে। শুভ প্রতিউত্তরে শুধু বলতো, আমাকে মানুষ ঠকা ক। কিন্তু আমার দ্বারা যাতে কেউ না ঠকে। অবশ্য শুভর পক্ষে তার মা সবসময় একই সুরে গাইতো। মা ছেলের মাঝে বিশেষ একটা ব্যাপার আছে। তাই শুভর বাবা এসব কথা পাত্তা দিত না। শুভ এবার চলে এসেছে ঢাকায়। ঢাকায় এসে তার মামার বাড়িতে উঠেছে। তার মামা এখানে বহুকাল ধরে থাকে। আর একটি মাত্র মামা ও মামা হওয়াই, শুভ একটু বেশি স্নেহ পায়। শুভকে শহরে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য, তাকে ভালো কোন কলেজে ভর্তি করে দেওয়া। অবশ্য দায়িত্বটা তোর মামায় নিয়েছে। মামি ও ভীষণ ভালোবাসেন, শুভকে।
সব সময় বলতেন ইস শুভর মত একটি ছেলে যদি আমার থাকতো! তাহলে বোঝাই যাচ্ছে, সবার কাছে এসে কতটা আদরের। মামা মামি ওকে নিজের ছেলের মতোই দেখেন। অবশ্য ওর একটি মামাতো বোন আছে। ওর নাম তনু। সবেমাত্র ক্লাস এইটে পড়ে। দুই ভাই-বোনের মধ্যে অনেক মিল। শুভ তার মামাতো বোন তনুকে নিজের বোনের মতোই দেখে। ওদের দেখলে মনে হবে আপন ভাই বোন। যাই হোক শুভ, মামার বাসায় উঠেছে। তার মামা থাকেন একটু ভাড়া বাড়িতে। এই বাড়িটিতে এসে অনেকদিন যাবতই থাকেন। বাড়িটি ঢাকা শহরের একজন নামকরা উকিল এর। লোকে তাকে ব্যারিস্টার হিসেবেই চেনে। বাড়িটি দোতলা। বাড়ির মালিক দোতালায় থাকেন।
আর নিচতলা টি শুভর মামার কাছে ভাড়া দিয়েছেন। শুভর মামা এখানে 20 বৎসর যাবৎ বসবাস করেন। বাড়িওয়ালার সাথে তার খুব ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে। তাই বাড়িটিকে সে নিজের বাড়ি বলেই মনে করেন। সকালবেলা মামা অফিসে চলে গেলেন। শুভ তার রুমে শুয়ে শুয়ে বই পড়ে। তনু গিয়েছে স্কুলে। বাড়িতে তনু অতনুর মামী ছাড়া আর কেউ নেই। মামি ব্যস্ততা রান্নাবান্নায়। হঠাৎ বাসার কলিং বেলটা বেজে উঠলো। কয়েকবার বেজে উঠলো। মামি রান্নাঘর থেকে বলছে, দেখতো শুভ কে এল? শুভ্র তাড়াতাড়ি দরজাটা খুলে দিল। দরজা খোলার পরে,, দেখল মাছ বিক্রেতা এসেছে। ভাই মাছ নিবেন? টাটকা টাটকা মাছ। ইতিমধ্যে শুভর মামী চলে এসেছে।
মাছগুলো দেখে তার খুব পছন্দ হলো। মামি মাছগুলো কিনে নিল। গ্রামদেশে এই মাছগুলোকে টেংরা মাছে বলে। খেতে অনেক সুস্বাদু। দেখতে দেখতে দুপুরে রান্নাটা হয়ে গেল। ইতিমধ্যে তনু স্কুল থেকে চলে এসেছে। দুপুরে তার একসাথেই খেলো। মামা আসবে অনেক রাত্রিতে। সন্ধ্যার পর শুভ একটু বাইরে বেড়াতে গেল। শুভ বাসায় ফিরল রাত্রি দশটায়। মামা এতক্ষণে চলে এসেছে। রাত্রিবেলা খাওয়া-দাওয়ার পর। শুভর মা মা জানাল। কোন ইউনিভার্সিটিতে শুভ কিসে ভর্তি করাবে। অবশেষে বোঝা গেল কোন এক প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি। ভার্সিটি অনেক ভালো। নামকরা একটি ইউনিভার্সিটি। শুভ রাজি হয়ে গেল। দেখতে দেখতে দিন এগোতে লাগলো। শুভ ইউনিভার্সিটি তে যাওয়া আসা শুরু করলো। খুব ভাল একটা ইউনিভার্সিটিতে ভাল লাগছিল। পড়াশোনার চাপ তা একটু বেশি ছিল।
ছোটবেলা থেকে ছাত্র হিসেবে খুব একটা মন্দ ছিল না শুভ। পড়তে পড়তে রাত বারোটা বেজে গেল। মামা মামি ঘুমিয়ে পড়েছে। তনুর রুমের দিকে এগিয়ে গেল শুভ। সেও ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু শুভর কিছুতেই ঘুম আসছে না। হঠাৎ শুভর মনে হল একটু ছাদে থেকে ঘুরে আসা যাক। তাছাড়া এই বাসা টি অনেক সুন্দর। অনেক বড় বাসা। বাসার ভেতরে বাউন্ডারি অনেক জায়গা। একদম নিরিবিলি পরিবেশ। বাসার বাইরে কবুতরের একটি নিবাস রয়েছে। সারাদিন তারা বাগবাকুম বাগবাকুম বলে ডাকতে থাকে। তবে এখন ডাকটি শোনা যাচ্ছে না। হয়তো তারাও ঘুমিয়ে পড়েছে। শুভ ছাদে চলে এলো। অসম্ভব সুন্দর একটি চাঁদ আকাশের মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে। শুভ চাঁদ দেখতে লাগলো।
ছাদটা অনেক বড় থাকায়, এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত রাত্রিবেলা খুব একটা ভালো বোঝা যায় না। সেদিনও ঠিক তাই ঘটেছিল।শুভ যখন ছাদে এসেছিল তখন সেই ছাদে যে অন্য কেউ ছিল তা সে খেয়ালই করেনি। হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন ডাকলো। শুভ পেছন ফিরে তাকাতেই, চাঁদের আবছা আবছা আলোয় সে দেখতে পেলো অপরূপ কোন এক তরুণী। সে অনেক তরুণী কি দেখেছে। কিন্তু চাঁদের আলোতে এই প্রথম কোনো তরুণীকে সে দেখতে পেল। হঠাৎ সেই চাঁদ আলো মাখা মেয়েটি একটু রাগান্বিত কন্ঠে বলে উঠলো, কে আপনি? শুভ হতভম্ব হয়ে গেল! এর আগে কেউ তাকে এমন প্রশ্ন করে নি। এই প্রথম প্রশ্নটি শুনে এসে একটু হতভম্ব হয়ে গেল। সে বলল আমি শুভ। নিচ তলায় থাকি। নিচতলায় j62 সেটি আমার মামার। মেয়েটা এবার বলল ও আচ্ছা তাই, কবে উঠেছেন? শুভ এবার কথা বলতে শুরু করল,।
বিস্তারিত সবকিছু শোনার পর মেয়েটি হেসে উঠলো। চাঁদ মাখা ঐ মুখের হাসিতে পুরো ছাদ যেন চকচক করে উঠলো। শুভর এবার একটু ভয় ভয় লাগতে শুরু করলো।এটি কি মেয়ে মানুষ নাকি জিন পরি কোন কিছু একটা হবে। মেয়েটি এবার হাসতে হাসতে চলে গেল। বড় অদ্ভুত মেয়ে। মায়া মায়া চেহারা। দেখলে যে কোনো ছেলেই তার দিকে একবার হলেও তাকাবে। তাকানোর মতো একটি মেয়ে। বিধাতা কোন কিছু কমতি দিয়ে তাকে বানায়নি। সেজন্য হয়তো শুভর মত ছেলে ও আশ্চর্য হয়ে গেছে। সকাল নটা বাজে। ভার্সিটিতে চলে গেল। দেখতে দেখতে কিছু দিন পার হয়ে গেল। একদিন বিকেলবেলা শুভ ছাদে উঠলো। আজ একদম স্পষ্ট মেয়েটিকে দেখা গেল। তবে সেদিন রাত্রি বেলা যেমন দেখেছিল, আজ তার চেয়েও অনেক বেশী সুন্দর লাগছে তাকে। শুভ আস্তে তার কাছে গেল।
মেয়েটি তাকে আগেই দেখেছিল। কেমন আছেন প্রশ্ন করতেই, ফিরে তাকালো সে। সত্যিই তো, মেয়েটি ভীষণ সুন্দর। শুভ আর অপেক্ষা করতে পারলো না। আচ্ছা আপনি এত সুন্দর কেন বলেন তো? এবার মেয়েটি আবার হাসতে শুরু করলো। কি ব্যাপার হাঁটছেন যে? মেয়েটি এবার আরো জোরে হাসতে শুরু করলো। শুভ কোন প্রশ্ন করল না। এবার সে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর চুপচাপ থাকার পর, আবার, সে মেয়েটির দিকে তাকালো। এবার শুভ মনে মনে ভাবছে বড় আজব তো মেয়েটা। কিছুক্ষণ পর মেয়েটি এবার তার মুখ খুলল। আমার নাম কলি, শুভ জিজ্ঞেস করল কোন কলি ,ফুল কলি,! মেয়েটি এবার আরো জোরে হাসতে শুরু করলো। এবার শুভ ভাবছে মেয়েটি হয়তো বা পাগল। কিন্তু পাগল হলেও মেয়েটা থেকে চোখ ফেরাতে পারছে না সে। সুন্দর একটি মেয়ে এবাড়িতে আছে এটি সে এতদিন বুঝতে পারেনি। মেয়েটির সাথে এবার শুভর অনেকক্ষণ কথা হল। বোঝা গেল মেয়েটির আসলে পাগল নয়।
তার সাথে মজা করছিল। মেয়েটার নাম, ডাকনাম কলি। সে বাড়িওয়ালার মেয়ে। তার বাবা এ শহরের নামকরা একজন ব্যারিস্টার। এখন অবসরে আছেন। এ বাড়িতে তার বাবা-মা ছাড়া, আর কেউ নেই। উপরতলায় তারা থাকে। আর নিচ তলা ভাড়া দিয়ে রেখেছে। শুভ জিজ্ঞেস করলো তোমার কোন ভাই নেই,? মিলি সদর সবটা উত্তর দিল না। শুভ এবার তার কথা শুরু করলো, আচ্ছা আপনি কি করেন? মেয়েটির শুধু উত্তর দিলো কিছুই করি না। খেয়ে দেয়ে ঘুরে বেড়াই। আচ্ছা আপনি কি করেন। শুভ তার ডিটেলস সবকিছু বলল। মেয়েটি এবার একটু অন্য চোখে শুভর দিকে তাকালো। আসলে তাকানোর eকথা শুভর মত ছেলে খুবই কমই দেখা যায়। অনেক হ্যান্ডসাম একটি ছেলে। দেখে বোঝা যায় না গ্রাম থেকে এসেছে। দুজনের অনেক কথা হল।এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে একটা ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেল। এখন তারা মাঝে মাঝেই ছাদে আসতে থাকে।
কথা এগোতে থাকে জীবন চলতে থাকে,। দুজনার ভাল একটা বন্ধুত্ব থেকে কখন যে সেই বন্ধুত্বর সীমা অতিক্রম করেছে তা তারা নিজেরাই জানেনা। কলি ঢাকা ইউনিভার্সিটি তে পড়ে। সে শুভর চেয়ে দু বছরের বড়। তবে তাদের বন্ধুত্ব দেখলে বড় ছোটর পার্থক্যটা আসলে আসেনা। মাঝে মাঝেই কলি শুভ দের বাসায় যায়। শুভ মাঝে মাঝে কলিদের বাসায় আসে। কলির বাবার সাথে শুভর একটা ভালো সম্পর্ক হয়ে গেল। আসলে শুভ আইনের ছাত্র। আর উনি একজন ব্যারিস্টার। দুজনের চিন্তা ধারা একই। আস্তে আস্তে তাদের মাঝে একটি পারিবারিক সম্পর্ক হয়ে গেল। অবশ্য বিষয়টা কলি কাছে খুব ভালোই লাগছিল। একদিন বিকেলবেলা তারা দুজন ঘুরতে বের হলো। কলি শুভ কে বলছে আচ্ছা তোমার কি পছন্দ। শুভ বলছে লাইট! এতকিছু থাকতে তোমার লাইট পছন্দ কেন? আসলে আমার লাইফটা এখনো আঁধারে ঢাকা। কলি এবার মুচকি হেসে উঠলো।কলি যখন হাসে তখন তার গাল দুটোতে টোল পড়ে যায়,।
শুভ কাছে যা সবচেয়ে বেশি পছন্দ। ঘুরতে ঘুরতে তারা রেস্টুরেন্টে বসলো। দুজন আড্ডা দিতে দিতে রাত্রি নটা বেজে গেছে। এখন ফেরার পালা। শুভ কলি কে প্রশ্ন করল, আচ্ছা কিসে যাবে? কলি, উত্তর দিলো রিক্সায়। তুমি কি জানো রিকশায় যাবার মজাটাই আলাদা। কলি শুধু মাথা নাড়ালো। দুজনে একটা রিকশায় চেপে বসল। শুভ এবার তার হাতটা কলির হাতের উপরে রাখলো। দুজন দুজনার দিকে তাকালো, মন কি যেন বলতে চাইছে কিন্তু কেউ বলতে পারছে না। শুভ এবার সাহস করে বলে উঠলো, জানো কলি ,আমি তোমাকে ছাড়া কখনো ভালো থাকতে পারবো না। কলি শুধু বললো তাতো জানি। কিন্তু কেন? শুভ বললো জানিনা। রিক্সা এগিয়ে চলছিল। শহরের রাস্তা গুলো অনেকটা এলোমেলো। জ্যাম এর ভিতরে রিকশায় চড়া টাই সবচেয়ে ভালো। রিক্সাটা হঠাৎ একটি গলির ভিতরে চলে এলো। গলিটি অনেক নিরিবিলি। কিছু কিছু লাইটের আলো একটু একটু দেখা যায় রাস্তা। শুভ রিক্সাওয়ালাকে বলল ভাই এই গলির দিকে নিয়ে এলেন কেন? রিক্সাওয়ালা বলল ভাই এখান থেকে খুব তারাতারি যাওয়া যায়। শুভর মনে একটু ভয় ভয় করতে লাগলো। করি অবশ্য বিষয়টা বুঝতে পেরেছিল।
সে হাত চেপে ধরলো শুভর। ভয় নেই কিছুই হবে না। দেখো সামনে বড় রাস্তা। রিক্সা চলছিল। এমন সময় হঠাৎ কিছু উঠতি বয়সের ছেলে রিকশার গতি আটকে দিল। এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে তারা তা কখনো ভাবতেই পারেনি। শুভ যুবক হিসেবে একদম ফিট ছিল। শুভ রিক্সা থেকে নেমে এলো। ছেলেগুলো শুভকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলল। তাদের একটি দাবি যা কিছু আছে সব দিয়ে দাও। শুভ দিতে অস্বীকার করল। এবার ছেলেগুলো অশুভকে আঘাত করতে শুরু করলো। এমন পরিস্থিতিতে কলি রিক্সা থেকে নেমে এলো। অলি ছেলেগুলো কে বোঝানোর চেষ্টা করল। কিন্তু ছেড়ে গুলো কিছুই শুনছে না তারা শুভকে মারতে শুরু করলো। একজন মানুষকে 5 জন মানুষ ধরলে সে যত শক্তিশালীই হোক তাদের কাছে পরাজিত হতে হয়। শুভর অবস্থা ঠিক সেরকম। একসময় কলি বললো আমাদের যা কিছু আছে সব আপনে নিয়ে নেন।
আমাদেরকে যেতে দিন। কিন্তু তারা তার কোনো কথাই শুনলো না। তাদের মাঝে কেউ একজন একটি ছড়া বের করল। ছেলেটি ছড়াটা শুভর দিকে তাক করলো, শুভ এবার একটু ভয় পাচ্ছে। শুভ চোখ বন্ধ করলো। শুভ হয়তো ভাবছে সে এতক্ষণে দুনিয়া থেকে চলে গেছে। কিন্তু সে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে থাকার পর কোন কিছু অনুভব না করতে পারায়। চোখ দুটো খুলল। কিন্তু চোখ খুলে সে যা দেখল তার চোখ না খুলেই ভালো ছিল। কলি রাস্তায় পড়ে আছে। তার পেট থেকে অনেক রক্ত বের হচ্ছে। কথা বলার মত অবস্থা তার নেই। শুধু দুই হাতে চেপে রেখেছে শুভর জন্য কেনা সেই লাল লাইট টা। ছেলেগুলো চলে গিয়েছে। এতক্ষণে দু-একজন মানুষ চলে এসেছে। শুভ কলি র কাছে এগিয়ে গেল কাছে এগিয়ে গেল। কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।ছিনতাইকারী গুলো তার পেটে খুব গভীরভাবে ছুরিটি বসিয়ে দিয়েছে। শুভর মুখে কোন কথা নেই। শুভ স্তম্বিত পোস্ট লাইটের মত হয়ে গেল। তারপর সে আর কখনো কথা বলেনি। তার এখন আর লাইট পছন্দ হয় না। আঁধারেই থাকতে ভালোবাসে সে। আলোতে সে আর ফিরে আসতে চায় না। হয়তো আঁধারেই সে খুঁজে পায় তার হারানো অতীত।