১ম পর্বের পর……..
রাজু তার ভাঙ্গা বাড়িতে ফিরে আসল। ফিরে এসে ক্লান্ত দেহে মাটিতেই শুয়ে পড়ল। এক ঘুমেই রাত কাবার। তার ঘুমও হয় ভালোভাবে। এই মাটিতেই তার যেন স্বর্গীয় ঘুম হয়। কারণ, তার কোনো সম্পদ নেই, যা তাকে চিন্তায় মগ্ন রাখবে। তার নিজের বলতে কেউ নেই, যে সে তাদের জন্য ভাববে। ফলে নিশ্চিন্তে সে মহাসুখে ঘুমিয়ে পড়ে। আজকেও তাই সন্ধ্যাবেলা যখন পিঁপড়াকে সাহায্য করে বাড়িতে এলো, তখনই ক্লান্ত দেহে সে ঘুমিয়ে পড়ল।
পরের দিন। সকালবেলা। চারদিকে মিষ্টি রোদ উঠেছে। পরিবেশ অনেক সুন্দর। রাজু সকালেই ঘুম থেকে উঠে ক্ষুধা অনুভব করল। তাই সে খাবারের সন্ধানে জঙ্গলে গেল। সে চাইলে গ্রামের কোনো বাড়িতে খেয়ে আসতে পারতো। কিন্তু সে চায় না কারো কাছে হাত পেতে খাবার গ্রহণ করতে। তাছাড়া, গ্রামের লোকেরা তো দিন আনে দিন খায়। তাদের কষ্টে উপার্জন করা টাকা সে কেন নষ্ট করবে।
জঙ্গলে গিয়ে সে একটি খেজুর গাছ দেখতে পেল। সে ওই খেজুর গাছে চড়ে কিছু খেজুর পেরে নিল। তারপর, নদীর ধারে বসে আপন সুখে একে একে সব খেজুর খেয়ে নিল। খাওয়ার পর নদী থেকে পানি পান করল। কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থান করার পর, গভীর জঙ্গলের ভিতরে সে প্রবেশ করল। কি কারণে প্রবেশ করল জানো?
গভীর জঙ্গলে গিয়ে সে কিছু লাকড়ি আর খড়কুটো জোগাড় করবে। এই লাকড়ি আর খড়কুটো বাজারে বিক্রি করে কিছু চাল-ডাল কিনে সে বাড়ি নিয়ে যাবে। রোজ রোজ ফল খেতে তার আর ভালো লাগেনা।
তাই আজকে একটু খিচুরি রান্না করে খাবে সে। তাই জঙ্গলের গভীরে গেলো শক্ত-পোক্ত কিছু লাকড়ি/কাঠ জোগাড় করতে। গভীর জঙ্গলে এসব অনেক পাওয়া যায়।
গভীর জঙ্গলের এই দিকটায় সাধারণত কেউ সচরাচর আসে না। কারণ এই দিকটায় বনের রাজা সিংহ থাকে। কিন্তু রাজু সেদিকে সতর্ক থেকেই গভীরে প্রবেশ করেছে। চোখ-কান খোলা রেখে সামনের দিকে সে চলতে থাকে। কিছুদূর এগিয়ে যেতেই সে কিছু লাকড়ি-খড়কুটো পেয়ে যায়। সেগুলো সে আপন মনে কুড়তে থাকে।
এমন সময় একটি সিংহ ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে ছিল। এই সিংহ রাজুর উপর হামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়। ঝোপের আড়াল থেকে সে রাজুর উপর থাবা বসানোর জন্য লাফ দেয়।
এই মুহূর্তে ওই পিঁপড়াটা রাজুর কাছের একটা গর্তে ছিল। সে সবকিছু দেখছিল। সে রাজুর উপকার এখনো ভুলেনি। তাই রাজুকে সতর্ক করার জন্য সে চিৎকার দিতে থাকে। কিন্তু রাজু তো তার ভাষা বুঝে না। পিঁপড়াটা কোনো উপায় না পেয়ে রাজুর পায়ে কামড় বসিয়ে দিল। সাথে সাথে রাজু যন্ত্রণায় নিচু হয়ে গেলো।
আর সিংহ মামা তার উপর দিয়ে সামনের একটা ফাঁদে পড়ে গেলো। এই ফাঁদটা ছিল এক শিকারির পাতানো ফাঁদ। তাই সিংহ সেখান থেকে আর বেরুতে পারল না। রাজু নিচের দিকে তার পায়ে লক্ষ্য করল। দেখল একটা পিঁপড়া। সে বুঝতে পারল এটা সেই পিঁপড়াটা, যাকে সে সাহায্য করেছিল। আজ সে তার জীবন রক্ষা করল।
মনে মনে পিঁপড়াটাকে সে ধন্যবাদ জানালো।
আর ওইদিকে সিংহ ফাঁদে পড়ার যন্ত্রণায় ছটপট করতে লাগলো। রাজু ছিল খুবই উদার আর দয়াবান। তাই সে সিংহটাকে ফাঁদ থেকে বের করার সিদ্ধান্ত নিল। যেই না সে ফাঁদ থেকে সিংহটাকে বের করল, ঠিক তখনই সিংহটা তার উপর………………..।
বাকি কাহিনীটা জানতে হলে এর পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর আজকের কাহিনীটা কেমন লাগলো, তা কমেন্ট করে জানাতে ভুলবে না যেন।
ধন্যবাদ সকলকে।