আসসালামুআলাইকুম ।আশা করি সবাই ভালো আছেন ।উপরের টপিক দেখে আপনারা হয়তো বুঝে গেছেন আজকের বিষয়টা কি ।আর বেশি কথা না বলে চলুন শুরু করা যাক ।
কিরে ভাই দুদিন অন্তর বিছানায় পড়ে থাকিস। শরীরে ইমিউনিটি বলে কোন বস্তু আছে ,নাকি পুরোটাই গেছে। যদি আপনার শরীর খারাপের জন্য সারাদিন বিছানায় কাটাতে হয়,তাহলে আপনার জন্য সময় চলে এসেছে নিজের প্রতিরোধ ক্ষমতাটাকে বাড়ানোর দিকে একটু নজর দেওয়া ।
ইমিউনিটি সিস্টেম কি?
ইমিউনিটি সিস্টেম আমাদের দেহের ডিফেন্স ম্যাকানিজম এটা মেইনলি সেল টিস্যু আর কিছু অরগ্যানের মিলিত নেটওয়ার্ক যেটা কিছু ক্ষতিকারক ভাইরাস ,ব্যাকটেরিয়া,প্যারাসাইডসদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আপনার দেহকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। এই যে দুদিন আগে পরপর স্বর্দি ,কাশি,মাথাব্যাথা এগুলো সব দুর্বল ইমিউনো সিস্টেমস এর লক্ষণ।
কিভাবে আমরা আমাদের ইমিউনো সিস্টেম কে পর্যাপ্ত পরিমান শক্তিশালী রাখতে পারি ?
কিভাবে আমরা আমাদের ইমিউনো সিস্টেম কে পর্যাপ্ত পরিমান শক্তিশালী রাখতে পারি যাতে অন্তত দুদিন পরপর রোগে না ভুগতে না হয় সেটাই এই এ আমি আপনাদের সাথে এই আর্টিকেলে শেয়ার করবো ।
এর জন্য আমি আপনাদেরকে ৫টি টিপস দেব ।আপনি যদি আমার এই টিপসগুলো যদি সঠিক ভাবে পালন করেন তাহলে আশাকরি আপনার আর কোন সমস্যা হবে না। চলুন শুরু করি :
স্মার্ট আইডিয়া ১:চিল্যাক্স
চিল্যাক্স হলো চিল+রিল্যাক্স
হ্যা নিজের ইমিউনো সিস্টেম কে শক্তিশালী রাখতে চাইলে এটা আপনাকে সবার আগে করতে হবে। অতিরিক্ত চিন্তভাবনা আর ঘুমের ঘাটতি ইমিউনো সিস্টেম এর দুজন বড় শত্রু ।তাই স্ট্রেচ কমাতে আপনাকে চিল করতে হবে ।আর ঘুমের ঘাটতি কমাতে রিল্যাক্স করতে হবে। কিন্তু চিল কিভাবে করবেন সেটা আপনার নিজেস্ব পছন্দের ব্যাপার। সমসাময়িক জার্মানি তে একটি রিসার্চ এ জানা গেছে গান গাওয়া যেমন আমাদের মনকে আনন্দ দেয় তেমন আমাদের ইমিউনো সিস্টেম কে বুস্ট করতে সাহায্য করে ।তাই অন্তত একজন বাথরুম সিঙ্গার হলেও দিনে অন্তত একবার গলা ছেড়ে গেয়েও আপনি চিল করতে পারেন ।তাতেও আপনার ইমিউনো সিস্টেম বুস্ট হতে পারে ।আর রিল্যাক্স করার জন্য তো ঘুমাতে হবে ।ঠিক আছে যদি ঘুমানোর অতো সময় না থাকে,তো আপনি মেডিটেশন করতে পারেন। রিসার্চ থেকে জানা গেছে ২০ মিনিট মেডিটেশন প্রায় ২ ঘন্টা ঘুমের সমান ।
স্মার্ট আইডিয়া ২:ভিটামিন ডি
ভিটামিন ডি কে আমাদের ইমিউনো সিস্টেম এর প্রধান খাদ্য বলা যেতে পারে ।এটা আমাদের ইমিউনো সিস্টেম কে শক্তিশালী করতে একটা বড় ভূমিকা পালন করে ।সূর্যের আলো আমাদের ফ্রিতে আমাদের স্কিন এ ভিটামিন ডি সংশ্লেষ করে ।২০১০সালে একটা রিসার্চ এ দেখা গেছে প্রতিদিন ১২০০ আই ইউ পরিমান ভিটামিন ডি নেওয়ার ফলে ইনফ্লুয়েনজা এ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায় ।এর জন্য গরম কালে অন্তত ১০ থেকে ১৫ মিনিট ডইরেক্ট সূর্যের আলোর নিচে থাকলেই যথেষ্ট ।এখন,এ কথা শুনে আপনারা হয়তো হাসতে পারেন তবে এটাই বাস্তবতা ।তাই স্কিন কালো হয়ে যাওয়ার ভয়ে ঘরের মধ্যে লুকিয়ে বসে না থেকে ,অন্তত বিকালের দিকে রোজ ১৫ মিনিট এর জন্য হলেও ডাইরেক্ট সূর্যের নিচে দাড়াবেন ।সূর্যে আলো ছাড়া বিভিন্ন খাবার যেমন: কমলালেবু , দুধ ,ঘী এগুলোতেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায় ।এতেও আপনার অনেকটা উপকার হতে পারে।
স্মার্ট আইডিয়া ৩: নো স্মোকিং
স্মোকিং আপনার শরীরকে একটু একটু করে পুরো ধ্বংস করে দেয় ।ধুমপান করার ফলে আপনার শরীরে যে ধোঁয়া ঢোকে তা আপনার শরীরের এন্টিবডিস এবং এন্টি অক্সিডেন্ট কে ধ্বংস করে দেয় । এন্টিবডিস এবং এন্টি অক্সিডেন্ট শরীরের প্রধান উপাদান ।সবচেয়ে খারাপ তো হয় কিছু অতিরিক্ত ধুমপায়ীদের সাথে ।অনেক সময় তাদের নিজের দেহের ইমিউনো সিস্টেম তাদের হৃৎপিন্ডের এর সেলগুলোতে আক্রমন করতে শুরু করে। যেটা ডাক্তরি ভাষায় অটোইমিউনিটি বলা হয় । এর মানে নিজের দেশেরই সৈন্য নিজের দেশ ধ্বংস করতে লেগে পড়েছে ।এতো কিছুর পরও মানুষ এটি খেয়ে কি মজা পায় ,আমারতো মাথায় ঢোকে না।
স্মার্ট আইডিয়া ৫: হানি জিনজার লেমন টি
ইমিউনিটি সিস্টেম দুর্বল হওয়ার কারনে খুবই পরিচিত রোগ হলো স্বর্দি,কাশিতে ভোগা । এটা থেকে বাঁচার বেস্ট উপায় হলো,সকালে লেবু,আদা আর মধু দিয়ে ১ কাপ চা খাওয়া ।এটা রীতিমতো ম্যাজিকের মতো ইমিউনো সিস্টেম কে বুস্ট করার ক্ষমতা রাখে। আদা আমাদের শরীরের টক্সিনস গুলোকে রিমুভ করে শরীরের তাপমাত্রা সঠিকভাবে বজায় রাখতে সাহাজ্য করে ।মধু একটা এন্টিসেপটিক এর মতো কাজ করে ।আর লেবুতে প্রচুর পরিমান ভিটামিন এবং এন্টি অক্সিডেন্ট পাওয়া যায় ।এগুলো ইমিউনো সিস্টেম কে বুস্ট করে। তাই আপনিও যদি কিছুদিন পরপর স্বর্দি কাশিতে ভোগেন তাহলে রোজ সকালে দুধ চা বা কফি না খেয়ে ,কয়েকদিন অন্তত আাদ দিয়ে মধু দিয়ে লেবু চা খাওয়া ট্রাই করে দেখুন ।কয়েকদিনের মধ্যেই আপনি নিজেই এর এফেক্ট টা বুঝতে পারতেন ।
স্মার্ট আইডিয়া ৫:ব্যায়ম
এটা তো দেখছি সবকিছুর সমাধান,হ্যা তা ঠিক। কিন্তু মজার ব্যাপার এটা যে এটা আমাদের সবার বড় এলার্জির কারন। ব্যায়ম মূলত তিন ভাবে আমাদের ইমিউনো সিস্টেম কে বুস্ট করে ।
- ব্যায়াম করার ফলে আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল টা বৃদ্ধি পায় ।যার ফলে আমাদের শরীরে এন্টিবডিস এবং শ্বেত বক্ত কনিকা যেগুলো প্রধানত ইমিউনিটি সিস্টেম এর মূল উপাদান,শরীরে বিভিন্ন অংশের রক্ত চলাচল করার সুযোগ পায় ।ফলে কোন রোগ বেড়ে ওঠার আগেই সট সনাক্ত করে ধ্বংস করে দেয় ।
- ব্যায়ম এর ফলে ব্যায়ম এর আগে ও পরে আমাদের শরীরের তাপমাত্র টা ওঠা নামা হয়,যার ফলে ব্যাকটেরিয়া বেড়ে উঠতে পারে না।
- ব্যায়ম আমাদের স্ট্রেচ কমিয়ে দেয় ।যার ফলে ইমিউনিটি ও বুস্ট হয় ।
আর এই উপকারগুলো পাওয়ার জন্য যে খুব বেশি ব্যায়ম করা পয়োজন তা কিন্তু না। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মিনিট একটু জোরে হাটাহাটি করলেই যথেষ্ট ।
সবশেষে রিনাউন্ড অ্যামেরিকান অর্টপেন ওয়ার ‘জিম রনের বলা একটা কোড দিয়ে আমি আজকের আর্টিকেল শেষ করতে চাই,
“টেক কেয়ার ইওর বডি। ইট’স দ্যা ওনলি প্লেস ইউ হ্যাভ টু লিভ।”
সবশেষে বলতে চাই ইমিউনিটি সিস্টেম শক্তিশালী হলে ৮০% রোগ শরীরে সৃষ্টি হওয়ার আাগেই আাবার ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। সবশেষ আপনার কছে একটাই অনুরোধ যদি এই আর্টিকেল টি আপনার একটুও নিজের জীবনের সমস্যা সমাধান খুজে পেতে একটুও উপকারে আসে ,তাহলে প্রিয়জন ও ব্ন্ধু বান্ধবদের এই আর্টিকেলটি পড়তে বলেন ।এভাবে আপনিও কারো জীবন বদলে দিতে পারেন ।আজ আর নয় ।সবাইকে বিদায় ।আাসসালামুআলাইকুম।
আর কোন ভুল ত্রুটি গেলে সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।