আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি নতুন টপিক নিয়ে হাজির হয়েছি। তো আজকে আমি আপনাদের সামনে কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা, কাঁচা মরিচের উপকারিতা নিয়ে হাজির হয়েছি। তো আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
সূচনাঃ মরিচ হলো এক ধরণের ফল যা মসলা হিসেবে ঝাল স্বাদের জন্য সারা বিশ্বে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ক্যাপসিকাম গণের সোলোনেসি পরিবারের উদ্ভিদের ফলকে মরিচ বলা হয়। মরিচের মধ্যে একটি ভাগ হলো কাঁচা মরিচ যেটি আমরা সাধারণত সবুজ রংয়ের দেখে তাকি। একে কাঁচা লংকাও বলা হয়।
প্রায় ৭৫০০ বছর আগে থেকে আমেরিকার আদিবাসীরা মরিচ ব্যবহার করে আসছে। কলম্বাসের আমেরিকা আবষ্কারের পর মরিচ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। দিয়েগো আলভারেজ নামের একজন চিকিৎসক কলম্বাসের দ্বিতীয় অভিযানের সময়ে পশ্চিম ভারতের দ্বীপপুঞ্জ থেকে মরিচ স্পেনে নিয়ে আসেন।
তিনি ১৪৯৪ সালে মরিচের ঔষধী গুনাগুণ নিয়ে প্রবন্ধ লিখেন। স্পেনীয় ব্যবসায়ীরা মেক্সিকো থেকে মরিচ এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়। তারপরে ফিলিপাইন্স এবং তার থেকে ভারতবর্ষ, চীন, কোরিয়া, ও জাপানে মরিচ বিস্তার লাভ করে। ঝাল ও স্বাদের জন্য অচিরেই এটি এশিয়ার বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় খাবারের অপরিহার্য উপকরণে পরিণত হয়।
মরিচ আমেরিকা থেকে ছড়িয়ে পড়লেও অনেকের মতে কাঁচা মরিচের আদি বাড়ি ভারত উপমহাদেশ বিশেষ করে বাংলাদেশ।
কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা, কাঁচা মরিচের উপকারিতা
মরিচ অনেক উপকারী ও অনেক পুষ্টি উপাদান সম্পন্ন। এর বেশ কিছু ঔষুধী গুণও রয়েছে। দিয়েগো আলভারেজ নামক সেই চিকিৎসক ১৪৯৪ সালে মরিচের ঔষুধী গুণাগুণ সম্পর্কে একটি প্রবন্ধ লেখেন।
কাঁচা মরিচের মধ্যে ডায়াটারি ফাইবার, সোডিয়াম, থিয়ামিন, রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, ফলেট, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন এ, সি, কে, বি৬, পটাসিয়াম, কপার এবং ম্যাঙ্গানিজের মতো উপাদান থাকে যা আমাদের শরীরের নানা ধরণের উপকারে লাগে।
মরিচ শরীরের প্রধানত কোন সব ক্ষেত্রে উপকার করে তা নিচে বলে দিচ্ছি।
১. হজম ক্ষমতার উন্নতিঃ মরিচ গ্রহণের পর তা শরীরে ভিটামিন সি ও স্যালাইভারের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। এর ফলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে তার সাথে সাথে গ্যাস, বদহজম ইত্যাদি সমস্যা দূর করে
২. ওজন নিয়ন্ত্রণঃ প্রতিদিন কাঁচা মরিচ খেলে হজম শক্তির উন্নতি ঘটে। তাই অনেক পুষ্টিবিদদের মতে হজম শক্তি শক্তিশালী হওয়ায় অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির আশংকা একেবারেই কমে যায়। এর পাশাপাশি ফ্যাট সেলগুলোও গলতে শুরু করে।
৩. শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণঃ কাঁচা মরিচে ক্যাপসিসিন নামক উপাদান থাকায় এটি খেতে ঝাল লাগে। এই উপাদানটি স্বাদ গ্রন্থিকে সক্রিয় করে তোলার পাশাপাশি মস্তিষ্কের হাইপোথেলামাস অংশকে অতি মাত্রায় সচল করে তোলে। ফলে শরীরের তাপমাত্রা বজায় থাকে।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ মরিচে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি যা দেহে প্রবেশ করা মাত্র রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। ফলে নানাবিধ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।
৫. হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেইন স্ট্রোক থেকে রক্ষাঃ কাঁচা মরিচে থাকা একাধিক উপাকির উপাদান রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ফেলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । কগারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যাওয়ার ফলে হৃদপিণ্ডের কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
সেই সঙ্গে ফাইব্রিনোলেটিক অ্যাকটিভিটিকে বাড়িয়ে দিয়ে মস্তিষ্কে যাতে ব্লাড ক্লট না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্ট্রোকের আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
উপসংহারঃ কাঁচা মরিচ যে শুধু ঝাল কিংবা খাদ্যের স্বাদ বাড়িয়ে দেয় তা কিন্তু নয়। এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আমি কাঁচা মরিচের যে কয়টি উপকারী দিক দেখালাম তাবাদেও আরো অনেক আছে। কাঁচা মরিচের উপকার বলে শেষ করা যাবেনা। তো সকল ঝাল জাতীয় খাদ্যে কাঁচা মরিচ দিবেন। এটি শুধু স্বাদই বাড়াবেনা আপনার শরীর ও স্বাস্থ্য সুস্থ রাখবে।
তো আজকের জন্য এতটুকুই। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সেই কামনায় আজকের জন্য বিদায় জানাচ্ছি। পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর Facebook Group এর সাথেই থাকুন।