চলুন জেনে আসি 11 ই জানুয়ারী সম্পর্কে. দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের যেমন দেশকে ভালোবাসা কর্তব্য ঠিক তেমনই দেশকে জানাও কর্তব। কিভাবে তৈরি হল বাংলাদেশ চলুন তাহলে জেনে আসি।এখনকার বাংলাদেশ আগে ছিল পূর্ব পাকিস্তান তখন মানুষজন অনেক অত্যাচার সয্য করতো। মানুষের উপর অনেক নির্যাতন করা হতো। মানুষ যখন এসব কিছুর বিরুদ্ধে যাচ্ছিল নির্যাতন সহ্য করছিলোনা তখন ১৯৭১ সালের ২৫ সে মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের ওপর নির্বিচারে হত্যাকান্ডে লিপ্ত হয়।তাদের এই অপারেশনকে অপারেশন সার্চলাইট বলা হয় ।এই রাতেই বঙ্গবন্ধুকে তার বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায়। েই রাতে বঙ্গবন্ধু একটি মেসেজ সবাইকে দিয়ে যান ‘যার যা আছে তাই নিয়ে লড়াই করো’ ১৯৭১ সালের১৬ ই ডিসেম্বর সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের দিন ।এদিন ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখরিত মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ ও ভারতে মিত্র বাহিনীর নিকট রমনা রেসকোর্স ময়দানে বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রায়.৯৩ হাজার পাকিস্তানী সেনা আত্নসমর্পন করার সাথে সাথেই বাংলাদেশ কার্যত স্বাধীন হয় ।এখনো বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র।.১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে। দেশে ফিরে আসেন দেশে ফেরার পর তিনি কালবিলম্ব না করে সংবিধান প্রণয়নে মনোনিবেশ করেন।.১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি করেন। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র দ্বারা যে রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল তার পরিবর্তে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করা হয়।
বাংলাদেশ অস্থায়ী সংবিধান আদেশ ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি
যেহুতু ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র আদেশের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার পরিচালনার জন্য অস্থায়ী বিধান প্রণয়ন করা হয়েছিল।
এবং যেহেতু উক্ত ঘোষণাপত্র রাষ্ট্রপ্রধানের সকল নির্বাহী আইন প্রণয়ন ক্ষমতা এবং একজন প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করার ক্ষমতা প্রণয়ন করা হয়েছিল।
এবং যেহেতু উক্ত ঘোষণাপত্রে বর্ণিত অন্যায় ও বিশ্বাসঘাতকতামূলক যুদ্ধের অবসান বর্তমানে ঘটেছে।
এবং যেহেতু বাংলাদেশে জনগণের ঘোষিত আকাঙ্ক্ষা এইযেবাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্র ও কার্যকরী করা হবে
এবং যেহেতু উক্ত লক্ষ্য অনুযায়ী এক্ষেত্রে অবিলম্বে কতগুলো বিধান প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
সেহেতু এক্ষনে, রাষ্ট্রপতি অনুগ্রহপূর্বক ১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র আদেশ এবং এতদুদ্দেশ্যে তাকে প্রদত্ত সকল ক্ষমতার অনুসারে নিম্নোক্ত প্রণয়নে জারি করেছেনঃ১।
আদেশ বাংলাদেশ অস্থায়ী সংবিধান আদেশ ১৯৭২নামে অভিহিত হবে।
২ সমগ্র বাংলাদেশের প্রযোজ্য হবে।
৩ এটি অবিলম্বে বলবত হবে।
৪ সংজ্ঞাঃ আদেশে বর্ণিত গণপরিষদ বলতে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর ও ১৯৭১সালে জানুয়ারি ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের আসনগুলো বিজয়ী এবং আইনের দ্বারা অধীনে অন্যদিক দিয়ে অযোগ্য বিবেচিত নন,বাংলাদেশের এমন সকল নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত পরিষদকে বোঝাবে।।
৫ বাংলাদেশ একটি মন্ত্রিপরিষদ থাকবে এবং প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদের প্রধান থাকবেন।
৬রাষ্ট্রপতি তার সকল দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবেন।
৭ রাষ্ট্রপতি গণপরিষদের এমন একজন সদস্যকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করবেন,যিনি গণপরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোগ করেন। অন্য সকল মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন।
৮ গণপরিষদ সংবিধান প্রণীত হওয়ার পূর্ববর্তী কোন সময়ে রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হলে, মন্ত্রিপরিষদ বাংলাদেশের একজন নাগরিককে রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত করবেন। তিনি গণপরিষদ কর্তৃক প্রণীত সংবিধান অনুসারে অপহরণ রাষ্ট্রপতির কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি পদে বহাল থাকবেন।
৯ বাংলাদেশের একটি হাইকোর্ট থাকবে ।একজন প্রধান বিচারপতি ও সময়ে সময়ে নিযুক্ত হতে পারেন এমন অন্যান্য বিচারককে নিয়ে হাইকোর্ট গঠিত হবে।
১০ বাংলাদেশের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি শপথ পাঠ পরিচালনা করবেন এবং রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের শপথ পাঠ পরিচালনা করবেন শপথ বাক্যের ফরম মন্ত্রী পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত হবে।”
শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ।ঢাকা ১১জানুয়ারি ১৯৭২
সবাই ভালো থাকবেন।