আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা আজ আপনাদের একজন অসহায় পিতার গল্প বলবো এবং সবাইকে অনুরোধ করবো কেউ যেন বাবা মাকে কষ্ট না দাও |
কারণ তারা খুশি থাকলে আল্লাহ খুশি থাকেন|
আর কথা না বাড়িয়ে গল্পটা শুরু করছি|
তিনি ছিলেন একজন মেজর জেনারেল৷ তার তিন ছেলে৷ তিনজনই সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলো৷ সময় খুব সুন্দরভাবে অতিবাহিত হচ্ছিলো৷ তিনি মেজর হিসেবে দায়িত্ব আদায় করছেন৷ ছেলেরাও বড় হচ্ছে৷ একদিন চাকরির মেয়াদ পূর্ণ হলো৷ অবসর নিলেন চাকরি থেকে৷ বয়স অনেক হয়েছে৷ জীবন সমাপ্তির দিকে এগিয়ে চললো…
ছেলেরা বাপের ক্ষমতা থেকে যথেষ্ট ফায়দা লুটে নিলো৷ বাপ তো মেজর! ব্যস একটি কল দিলেই সব কাজ নির্বিঘ্নে হয়ে যায়৷ সবকিছু পদতলে এসে জমা হয়৷ বাপের উসিলায় সবাই তাদের স্যার স্যার বলে সম্বোধন করে৷ এখন বাপ বুড়ো হয়েছে৷ ছেলেরা ভুলে গিয়েছে বাপের কারণেই সবাই তাদের স্যার স্যার বলে সম্বোধন করতো৷ এখন বাপের দুর্বলতা দেখে ভাল্লাগেনা৷
এক ছেলে বললো, বাপজানের সম্পত্তি ভাগবাটোয়ারা করে নেয়া দরকার৷ কবে মরে যায় কী জানি৷ বন্ধুবান্ধবরা এলে বুড়োটা তাদের সামনে চলে আসে৷ লোকে কী বলবে এই ভেবে খুব লজ্জা লাগে!
আরেক ছেলে বললো, চলো একটা কাজের লোক রেখে দিই৷ মাসে বিশহাজার করে দেবো৷ কাজের লোক একটা পাওয়া গেলো৷ বিশাল দালানের নিচ তলায় একটি কক্ষে বাপের বিছানা তৈরি করে সেখানে রেখে দেওয়া হলো৷ চাকরকে বললো এর দিকে খেয়াল রাখবে৷ কোনো অভিযোগ যেন না আসে৷
ছেলেরা বিয়ে শাদী করলো৷ গ্রীষ্মের ছুটিতে বউ নিয়ে একজন চলে গেলো ফ্রান্স আরেকজন গেলো লন্ডন আরেকজন গেলো কানাডা৷ সেখানে নিজেদের পরিচয় দেয় একজন মেজর জেনারেলের সন্তান হিসেবে৷
এদিকে দালানের সব রুম তালাবদ্ধ৷ বুড়োকে যে রুমে রাখা হয়েছিলো ওই রুমের চাবি ছিলো চাকরের কাছে৷ চাকর বুড়োকে তালাবদ্ধ করে বাইরে গেলো বুড়োর জন্যে খাবার আনতে৷ চাকর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলো৷ চাকরও গেলো চাবিও গেলো৷ বুড়ো অচল৷ না আরামে নিঃশ্বাস নিতে পারে৷ না নিজ থেকে কারও কাছে কিছু চাইতে পারে৷ চাকরও আর ফিরে আসে না৷ এভাবে তিনমাস তালাবদ্ধ ঘরে পড়ে রইলো৷
তিনমাস পর আদরের দুলালেরা ঘরে ফিরে এলো৷ ততোদিনে বুড়োর প্রাণপাখি উড়ে গেছে৷ নিষ্প্রাণ দেহ পচে গলে গেছে৷ পড়ে আছে একটি কঙ্কাল৷