আসসালামু আলাইকুম । সম্মানিত ব্লগার ভাই বোনেরা, আজ আপনাদেরকে কথা বলব সমাজে সৃষ্ট হতাশাব্যঞ্জক যুব সমাজের অবস্থা সম্পর্কে।
আত্মগঠন। ১
পর্ব-১
নৈরাশ্যের চোরাবালি।
আজকের সমাজের অধিকাংশ যুবক যুবতি ভাই বোনেরা হতাশার স্রোতে গা ভাসিয়ে নিজেদেরকে জজলাঞ্জলি দিচ্ছে। এভাবে আমাদের যুব সমাজ ধেয়ে যাচ্ছে চরম এক ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
এই হতাশা গ্রস্থ জীবনের জন্য কে দায়ী? আর কিভাবেই বা এর আশু সমাধান করা যায়?
সর্বপ্রথম আমাদের জানা উচিত, কেন আমরা হতাশ হই। মন খারাপ হতাশার ছোট্ট একটা কলেবর।
-এই তোর মন খারাপ ক্যান রে?
-চাপা কন্ঠে উত্তর আসে, সাঞ্জিদার সাথে ব্রেকআপ হয়ে গেছে।
আ..হা!! এই তো, ছোটখাট কথায় ব্রেকআপ তারপর এর চরম পর্যায়ে আত্মহত্যার পথ ই বেছে আমদের চিরচেনা লালসবুজের তরুণ তরুণীরা।
-কিরে বন্ধু, ফ্রেসার হইছিস, নাকি এখনো সেশনজট? আরে ভাই চাকরি-বাকরি তো করবি নাকি?
-এক নিঃশ্বাসে এত গুলো প্রশ্ন করা বন্ধুর প্রতিউত্তরে তিন বছর আগে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করা বেকার ছেলেটা লুকিয়ে লুকিয়ে এভাবে মিথ্যা কথা বলেছিল, আমার এখনো গ্রাজুয়েট কমপ্লিট হয় নি। সেশন জট আছে। প্রকৃতপক্ষে ছেলেটা বেকারত্বের অভিসাপ ঘুচতে সমাজের মানুষের কাছে প্রতিনিয়তই মিথ্যা বলে যাচ্ছে। আর এই অপমানের মাত্রাতৃক্তির প্রতিরুপে আত্মহননের পথ দৃষ্ট হয় তার সামনে।
আরমিনা সচ্চরিত্রের একটি মেয়ে। কিন্তু দুষ্ট প্রতিবেশী তার নামে অপবাদ ছড়িয়েছে। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে তার শেষ সম্বল হিসেবে গ্রহণ করেছে নিজেকে জলাঞ্জলি দেওয়ার ঘৃনীত পথ।
-এই যে কখন থেকে ফোনে কথা বলে যাচ্ছ? সেই অফিস থেকে এসেই খাবার চাচ্ছি, আর তুমি কি না ফোনে কথা বলেই যাচ্ছ? উফ!!
– চরম রাগত স্বরে খাবার খোলা আছে, নিয়ে খেতে পারছ না?
এই ছোটখাট বাকবিতন্ডায় সৃষ্টি হচ্ছে স্বামী স্ত্রীর ঝগড়াঝাটির শুরুর দিক। চরম উৎকন্ঠায় সময়ের ব্যবধানে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে বহু পরিবারিক বন্ধন। ফলস্রুতিতে হতাশাগ্রস্থ অনেক দম্পতি অকালেই পাড়ি জমায় পরপারে।
-কিরে, এখনো মন খারাপ করে বসে আছিস? রেজাল্ট খারাপ হয়েছে বলে পপড়ালেখা ছেড়ে দিতে হবে!! এইটা কোনো কথা হল?
-বন্ধুর এরকম মোটিভেশনাল প্রশ্নেও মুখটি বুজে ভাবনার দোলাচালে আমগ্ন থাকে উচ্চমাধ্যমিক এ খারাপ রেজাল্ট করা নাজনিন আক্তার।
এরকম আরও অনেক নাজনীন আক্তার পরিক্ষার ফলাফল আশানুরূপ না হওয়াই নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে বেছে নেয় আরেকটি ভুল পথ।
কিন্তু এই যে, সবাই কোনো না কোনো কারণে মন খারাপ করে বসে আছে। একটু পর্যালোচনা করলে যে কারণ গুলো সামনে আসে তা খুবই সিম্পল। বাট এটাকে আমরা ভাবনার দোলাচালে পিষে আরও প্রসারিত করে নিই। এই কষ্টগুলো একসময় গিয়ে বিশালাকার ধারণ করে। তখন কষ্ট সহ্য করাটাই অসহ্য কাজ হিসেবে পরিগনিত হয়। আজকের এই পর্বে এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আগামী পর্বে কথা মন খারাপের কারণ। তো ভালো থাক সবাই। করোনা সচেতনতায় বাড়িতে থাকুন। ভালো থাকুক বাংলাদেশ।।