অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে দেশে এত ফল থাকতে কাঁঠাল কেন জাতীয় ফল? কি কারনে এ মর্যাদস পেল কাঁঠাল? কারণ শুধুমাত্র কাঁঠালই জাতীয় ফলের যথার্থতা বহন করে। কাঁঠালের সব অংশ কাজে লাগে। মানে এর কিছুই ফেলতে হয় না।
কাঁঠালকে গরিবের পুষ্টি বলা হয়। কারণ এত সস্তায় এত পুষ্টি উপাদান আর কোন ফলে পাওয়া যায় না। কাঁঠাল খনিজ পদার্থ, ভিটামিন, শর্করার ইত্যাদির মত নিত্য নৈমিত্তিক প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদানের উৎস হিসেবে কাজ করে। পুস্টিবিদদের মতে প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালে কাঁচা অবস্থায় ৯.৪ গ্রাম এবং পাকা অবস্থায় ১৮.৯ গ্রাম শর্করা, কাঁচা অবস্থায় ২.৬ গ্রাম এবং পাকা অবস্থায় ২.০ গ্রাম আমিষ, কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থায় ১.১ গ্রাম খনিজ লবন এবং যথেষ্ট পরিমান ভিটামিন পাওয়া যায়। কাঁঠালের এসব পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের গঠন শক্তি উৎপাদন এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
কাঁঠাল কাঁচা এবং পাকা উভয় অবস্থাতেই খাওয়া যায়। কাঁচা কাঁঠাল সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। কাঁঠালের বীচি তরকারির সাথে রান্না করে খাওয়া যায় এবং পুড়িয়ে বাদামের মত খাওয়া যায়, ভর্তা খাওয়া যায়। পাকা ফলের কোষ বা কোয়া সাধারণত খাওয়া হয়। এই কোয়া থেকে রস বের করে আমসত্ত্বের মত কাঁঠাল সত্ত্ব তৈরি করা যায়।
অনেক রকম কাঁঠাল জাত দ্রব্য বানিজ্যিকভাবে বানানো যাই এগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্যাম, জেলি, কেন্ডিজ, নেকটার, মারমালেড ইত্যাদি অন্যতম। কাঁঠালের বীচির পাউডার গমের ময়দার সাথে মিশিয়ে বিস্কুট, কেক ইত্যাদি তৈরি করা হয়েছে যা অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর।
কাঁঠালের কোষ খাওয়ার পর যে খোসা বা রিন্ড থাকে তা গবাদি পশুর উত্তম খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কাঁঠালের খোসা ও রিন্ডে যথেষ্ট পরিমাণে পেকটিন আছে। এই পেকটিন সহজে সংগ্রহ করে জেলি বা জ্যাম তৈরিতে ব্যবাহার করা যেতে পারে।
কাঁঠাল গাছের মূল্যবান কাঠ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করা হয়।
কাঁঠাল গাছের পাতা ছাগলের প্রীয় খাবার।
সর্বোপরি বলা যায় কাঁঠালই একমাত্র ফল যা কাঁচা-পাকা সর্ব অবস্থায়ই সব অংশ ব্যবহৃত হয়।