আমাদের চার পাশে ঘিরে আছে পানি। প্রাকৃতিক উৎস যেমন – বৃষ্টি, নদী, সমুদ্র,ইত্যাদি থেকে আমরা পানি পাই। মানুষের তৈরি উৎস যেমন- দিঘি, পুকুর, কূপ, নলকূপ ইত্যাদি থেকেও পানি পাওয়া যায়। পানি ছাড়া আমরা বেঁচে থাকতে পারি না।
জীবনের জন্য পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পানি ছাড়া জীব বাঁচতে পারে না।
উদ্ভিদঃ
উদ্ভিদের বেঁচে থাকার জন্য পানি প্রয়োজন। উদ্ভিদের দেহের প্রায় ৯০ ভাগ পানি। উদ্ভিদ খাদ্য তৈরিতেও পানি ব্যবহার করে। মাটি থেকে পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ ও বিভিন্ন অংশে পরিবহনের জন্য উদ্ভিদের পানি প্রয়োজন। পানি ছাড়া উদ্ভিদ মাটি থেকে পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে পারে না। প্রচন্ড গরমে পানি উদ্ভিদের দেহ শীতল করতে সাহায্য করে।
প্রাণীঃ
বেঁচে থাকার জন্য প্রাণীদেরও পানি প্রয়োজন। মানবদেহের ৬০-৭০ ভাগ পানি। পানি ছাড়া কোনো প্রাণীই বেঁচে থাকতে পারে না। আমরা যখন খাদ্য গ্রহণ করি তখন পানি সেই খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে। পুষ্টি উপাদান শোষণ ও দেহের প্রত্যেকটি অঙ্গে পরিবহনের জন্য পানি প্রয়োজন। পানি আমাদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
পানি আমাদের প্রত্যেকটি কাজেই প্রয়োজন, তাই আমাদের উচিত পানি অপচয় না করা এবং পানি দূষন থেকে রক্ষা করা।
পানি দূষনের কারণ–
মানুষের কর্মকান্ড পানি দূষণের প্রধান কারন। কৃষি কাজে ব্যবহৃত কীটনাশক, কলকারখানার রাসায়নিক দ্রব্য, গৃহস্থালির বর্জ্যের মাধ্যমে পানি দূষিত হয়। এছাড়া নদী বা পুকুরে গরু-ছাগল গোসল করানো এবং কাপড়চোপড় ধোয়ার কারণেও পানি দূষিত হয়।
পানি দূষনের প্রভাব–
পানি দূষনের ফলে জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে এবং জলজ খাদ্য শৃঙ্খলের ব্যাঘাত ঘটছে। এই দূষনের প্রভাব মানুষের উপরও পড়ছে। দূষিত পানি পান করে মানুষ ডায়রিয়া বা কলেরার মতো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
কিভাবে পানি দূষণ প্রতিরোধ করা যায়—
কৃষিতে কীটনাশক এবং রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে আমরা পানি দূষণ প্রতিরোধ করতে পারি। এছাড়া রান্নাঘরের নিষ্কাশন নালায় ও টয়লেটে বর্জ্য এবং তেল না ফেলে দূষণ রোধ করতে পারি। পুকুর, নদী, হ্রদ কিংবা সাগরে ময়লা-আবর্জনা না ফেলে পানি দূষণ কমাতে পারি সমুদ্র সৈকতে পড়ে থাকা ময়লা এবং খাল-বিল কিংবা নদীতে ভাসমান ময়লা আবর্জনা কুড়িয়ে আমরা পানি পরিষ্কার রাখতে পারি।
- পানি বিশুদ্ধকরণ—
মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন পানিই হলো নিরাপদ পানি। কিছু পানি মানুষের জন্য নিরাপদ। যেমন- নলকূপের পানি। আবার কিছু পানি মানুষের পানের জন্য নিরাপদ নয়। যেমন- পুকুর বা নদীর পানি।
তাই পান করা এবং রান্নার কাজে ব্যবহার করার পূর্বে পানি নিরাপদ করা প্রয়োজন। মানুষের ব্যবহারের জন্য পানিকে গ্রহনযোগ্য এবং নিরাপদ করার ব্যবস্থাই হলো পানি বিশুদ্ধকরণ।
(ধন্যবাদ)