ভোঁ ভোঁ শব্দটা বেজেই চলেছে। কোত্থেকে যে শব্দটা আসছে তা নির্ণয় করা যাচ্ছে না। মশা মনে করে কয়েকবার মারার চেষ্টা করে নিজের গালে পিঠে চড় খেতে হয়েছে আসিফকে। নাহ্ আর থাকা যায় না । হুরমরিয়েে উঠে শব্দের সূচনা খুজতেই চোখে পড়ে গেল এক অসহায় ফড়িংয়ের করুন অবস্থা। বেচারা উড়তে গিয়ে হয়তো কোথাও আঘাত খেয়ে পড়ে গিয়েছে। পিঁপড়া সেনার দল সেই সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে অক্লান্ত পরিশ্রম করে। একদল পিঁপড়া ভারি ফরিংটাকে টানার চেষ্টা করছে, পারছে না তো চেষ্টা করেই যাচ্ছে। ওদিকে একদল মুখে মুখে কি যেন আগত পিঁপড়াদের বলে যাচ্ছে। মুখে মুখ লাগিয়ে বলার পর ঝাঁপিয়ে পড়ছে অসহায় ফরিংয়ের উপর। বেচারা ফরিং আর কি করবে এ দলের উপর। অপারক অবস্থায় নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে, আর পাখারে আঘাতে ভোঁ ভোঁ শব্দ হচ্ছে। হু… তাহলে এই ব্যাপার বলেই আসিফের মনে দয়ার উদ্বেগ হলো। মন থেকে বেরিয়ে আসলো আহারে বেচারা। গুটি গুটি পায়ে খুবই সাবধানে এই বিশাল পিঁপড়া সেনাবাহিনীর হাত থেকে ফরিংটাকে আলতোভাবে তুলে নিলো। ফরিং হারিয়ে পিঁপড়ার দলের প্রায় পাগল পাগল অবস্থা। এদিক সেদিক তাদের আধার বস্তুটাকে হন্য হয়ে খুজতে লাগলো। সারা ঘরে এখন পিঁপড়ার মিছিল। ওদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কুট করে এসে আসিফের পায়ে কামড়ে দিলো। অমনি ওরে মারে বলে চিৎকার দিয়ে এক দৌড়ে ব্যালকনি। রেলিংয়ের উপর এক হাত গেরে দিয়ে আলতোভাবে হাতে থাকা ফরিংটাকে আদর করতে লাগলো। আদর পেয়ে এবার এবার ছটফটানিটা একবারেই থেমে গেল। চার পাখনা উচিয়ে একদৃষ্টে তাকিয়ে রয়েছে কোথায় যেন। সন্ধ্যা প্রায় ঘনিয়ে এসেছে। সারা আকাশে সূর্যের রক্তিম আভায় একাকার হয়ে আছে। সারা প্রকৃতিটা যেন শান্ত এক জড় ক্ষেত্র। মৃদু বাতাসে শরীরের লোমে শুরশুুর দিয়ে যাচ্ছে। মনভরে প্রকৃতিকে উপভোগ করছে আসিফ। ফরিংটা অনেকটাই সূস্থ হয়ে উঠেছে। তার পাখা গুলো একবার উচো করছে ফের নামিয়ে দিচ্ছে। শুধু ভোঁ করে উড়াল দেয়ার পালা মাত্র। ডান হাতটা কিছু চাওয়ার মতো করে রাখলো আসিফ। এবার বাম হাতে আলতো করে ধরে রাখা ফরিংটা ডান হাতের উপর রাখতেই ফুরুৎ করে ফরিংটা উড়ে গেল নিজ ঠিকানায়। হয়তো সারা প্রকৃতিটাই হবে তার বিচরণ ক্ষেত্র নতুবা আবার কোন আক্রমনের ফাঁদে। ভাবতে ভাবতে মাগরিবের আযানে ধ্যান ভাঙ্গে আসিফের। ঘরে এসে দেখে পিঁপড়ার দলও অনেক শান্ত হয়ে গেছে। একদম শৃংখলভাবে ঘরে ফেরার পায়তারা। কোন চিন্তা নেই, নাই কোন ভাবনা। চলছে তো চলছেই এ চলার যেন কোন শেষ নেই, আর শেষ হবে না কোন দিন।
অসমাপ্ত ভালোবাসা (পর্ব-১) [একটি আত্মজীবনীমূলক গল্প]
- হৃদয়, আজ না আমাদের এখানে মেলা বসেছে.. - সিরিয়াসলি! তো, তুই যাচ্ছিস না? - আরে কেমনে যাই বল? বন্ধুরা...