আসসালামু আলাইকুম, সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ৬ সপ্তাহের পরিকল্পিত এ্যাসাইনমেন্ট প্রোগ্রামে আজকে নিয়ে এলাম এই সপ্তাহে চলমান ৯ম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ (পার্ট-২, ৫ম সপ্তাহ) এ্যাসাইনমেন্টের সমাধান। তাহলে শুরু করা যাক।
প্রশ্ন ১: ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরি কাকে বলে? ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের কারণ ও ফলাফল বর্ণনা কর।
উত্তর:
ভূমিকম্প: পৃথিবীর কঠিন ভূত্বকের কোন কোন অংশ প্রাকৃতিক কোন কারণে কখনও কখনও অল্প সময়ের জন্য হঠাৎ কেঁপে উঠে। ভূত্বকের এরূপ আস্মকিক কম্পনকে ভূমিকম্প বলে।
আগ্নেয়গিরি: ভূত্বকের শিলাস্তর সর্বত্র একই ধরনের কঠিন বা গভীর নয়। ভূত্বকের চাপ হলে সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হয়। এই সুড়ঙ্গ দিয়ে ভূত্বকের উষ্ণ, গলিত শিলা, জলীয় বাষ্প, উত্তপ্ত পাথরখণ্ড, কাঁদা ইত্যাদি প্রবল বেগে উপরে উৎক্ষিপ্ত হয়। ভূপৃষ্ঠে সুড়ঙ্গ পথে বা ফাটলের চারপাশে ক্রমশ জমাট বেঁধে মোচাকৃতির যে উঁচু পর্বত সৃষ্টি করে তাকে আগ্নেয়গিরি বলে।
ভূমিকম্পের কারণ: পৃথিবীর উপরিভাগ কতগুলো পেট দ্বারা গঠিত । এই প্লেট সমূহের সঞ্চালন প্রধানত ভূমিকম্প ঘটিয়ে থাকে। অগ্ন্যুৎপাতের ফলে প্লেট সমূহের ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়।
আগ্নেয়গিরি অগ্ন্যুৎপাতের কারণ:
১. ভূত্বকের সুড়ঙ্গ দিয়ে ভূ-অভ্যন্তরের গলিত ভস্ম ধাতু প্রবল বেগে বের হয়ে অগ্নুৎপাত ঘটায়
২. ভূপৃষ্ঠের চাপ কমে গেলে শিরাগুলো স্থিতিস্থাপক অবস্থা থেকে তরলে পরিণত হয়।ফলে তরল স্থান ভেদ করে অগ্ন্যুৎপাতের সৃষ্টি করে।
৩. রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রভাবে তাপ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অগ্ন্যুৎপাতের সৃষ্টি হয়
৪. আগ্নেয়গিরির লাভা উপরে উঠলে চারপাশের ভূত্বকের দুর্বল অংশে ভেদ করার কারণে অগ্ন্যুৎপাতের সৃষ্টি হয়।
৫. অনেক সময় ভূত্বকের ফাটল দিয়ে খাল-বিল, সমুদ্রের পানি ভূগর্ভে প্রবেশ করে বাষ্পীভূত হয়। এটাও আরেকটি কারণ।
ভূমিকম্পের ফলাফল:
১. ভূমিকম্পের ফলে ভূত্বকের মধ্যে অসংখ্যবার ফাটল সৃষ্টি হয়। নদীর গতিপথ পাল্টে যায়।
২. পাহাড়-পর্বত বা দ্বীপের সৃষ্টি হয়।
৩. সমুদ্র তলে ডুবে যায় অনেক স্থলভাগ।
৪. ভূমিকম্পের ফলে সমুদ্র উপকূল সংলগ্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়।
আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত এর ফলাফল:
১. আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত পদার্থ চারদিকে সঞ্চিত হয়ে মালভূমির সৃষ্টি করে।
২. সমুদ্র তলদেশে আগ্নেয়গিরির নির্গত লাভা দ্বীপের সৃষ্টি করে।
৩. বিস্তৃত এলাকা নিম্ন সমভূমিতে পরিণত হয়।
প্রশ্ন ২: স্থুল জন্মহার নির্ণয়ের পদ্ধতি লেখ।জনসংখ্যাক্রমাগতবৃদ্ধিপেলে প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর অতিরিক্ত জনসংখ্যার প্রভাব বিশ্লেষণ কর।
উত্তর: স্থূল জন্মহার= (কোন বছরে জন জন্মিত সন্তানের মোট সংখ্যা ÷বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা)×100
প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অতিরিক্ত জনসংখ্যার প্রভাব: প্রথমত জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে সরাসরি প্রভাব পড়ে ভূমির উপর। আমরা জানি, ভূমি প্রাকৃতিক সম্পদ। একটি দেশের ভূমি সীমিত হওয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সে দেশের উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজন দেখা যায়। দেশে খাদ্য উৎপাদনের জন্য অধিক ভূমির প্রয়োজন।মনে রাখতে হবে অধিক ফসল চাষে উর্বরতা কমে যায় এবং মাটির জৈব উপাদান কমে যায়। আবার অধিক ফসলের জন্য অধিক কীটনাশক ব্যবহার করার কারণে মাটি দূষিত হয়।
অন্যদিকে বন কেটে মাটি ক্ষয় বৃদ্ধি পায়। অতএব ভূমির ব্যবহারে জনসংখ্যা ভারসাম্য থাকা জরুরি।
মানুষের বেঁচে থাকার জন্য পানি অপরিহার্য। দেখা যায় শিল্পক্ষেত্রের রং, গ্রিজ, রাসায়নিক দ্রব্য, যোগাযোগের ক্ষেত্রে পানিতে তেল, বর্জ্য সংযুক্ত হচ্ছে। লোনা পানি তলদেশে প্রবেশ করছে যা পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
পরিশেষে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, সম্পদ ও জনসংখ্যার মধ্যে ভারসাম্য যেকোনো দেশে সুষ্ঠু উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
.
কোন সমস্যা হলে কমেন্ট করুন এবং পরবর্তী এ্যাসাইনমেন্টগুলো পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।
আগের পোস্টটি পড়তে ক্লিক করুন।