সময়টা এখন গ্রীষ্মের মাঝামাঝি। চারদিকে প্রচন্ড গরম। গরমে মাঠ ঘাট শুকিয়ে গেছে। স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি প্রায় ঘনিয়ে আসছে। নিলু শহরের এক স্কুলে চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ে। পড়ালেখায় খুব ভাল নিলু। বাড়ির পাশাপাশি স্কুলেও তার আদরের কমতি নেই। স্যার ম্যাডামরা তাকে অনেক ভালবাসে। প্রতিবছর গ্রীষ্মের ছুটিতে নিলু মামার বাড়ি বেড়াতে যায়। এবারও বেড়াতে যাবে,কাল থেকে স্কুল গ্রীষ্মের বন্ধ। নিলু মনে মনে অনেক খুশি। তার মামাকে খবর দেওয়া হয়েছে তাকে এসে নিয়ে যাওয়ার জন্য। পরের দিন নিলুর মামা নিলুকে নিতে আসছেন। নিলুর মা নিলুকে ব্যাগ গুছিয়ে দিলেন। বই বেশি দিলেন না,কারন নিলুম মা জানে মামার বাড়িতে বেশি পড়ালেখা করবে না,শুধু আনন্দ আর মজা করে কাটবে সারাবেলা। নিলু এখন তার মামার বাড়ি। প্রায় দুই ঘন্টা জার্নি করে মামার বাড়ি এসে পৌঁছেছে। এদিকে নিলুর দাদু এবং দাদির নিলুর জন্য সে কি আয়োজন! এতদিন পর নিলু আসছে তাদেরও আনন্দের কমতি নেই। নিলুকে দাদু দাদি বুকে জড়িয়ে ধরলেন। দুপুরবেলা সবাই খেতে বসেছে,আজ ভাল ভাল রান্না হয়েছে নিলু আসাতে। নিলুর পচন্দের সব মজার খাবারগুলোই রান্না করা হয়েছে। সবাই মজা করে খেল। নিলুর মামা বলল এখন একটু রেষ্ট নাও,বিকালে সব ঘুরে ঘুরে দেখাবো। বিকাল বেলা নিলু তার মামার সাথে হাঁটতে বের হল। নিলুর মামাদের অনেক ফলের গাছ আছে। আমা,কাঁঠাল,পেয়ারা আরও কত গ্রীষ্মকালীন ফল গাছ তার হিসেব নেই। এ সময় আমগুলো পাকতে শুরু করে। প্রতিবছরই নিলু গ্রীষ্মের বন্ধে মামার বাড়ির সতেজ ফল খেতে পারে। নিলুর একটি পচন্দের আম গাছ আছে,গাছে অনেক আম ধরেছে। আমগুলো খুব মিষ্টি,তাই গাছটিও নিলুর খুব পচন্দ। পরেরদিন সকাল থেকেই বৃষ্টি,কখনো আস্তে আস্তে কখনোবা ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে। সাথে বজ্রপাতও হচ্ছে। এ সময় কালবৈশাখী ঝড় হয়। বজ্রপাতের। সময় মামা সবাইকে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করেন। সকাল থেকে টানা বৃষ্টি হয়ে দুপুরে গিয়ে থামলো। নিলুর মামাদের ঘরের সামনে একটা পুকুর আছে। বৃষ্টির নতুন পানিতে মাছগুলো লাফালাফি করতে শুরু করলো। নিলু এবং তার মামা দেখলো কিছু মাছ পুকুর থেকে উঠে যাচ্ছে। নিলু বলল মামা চল চল মাছ গুলো ধরে ফেলি! নিলু আর তার মামা মাছ গুলো মজা করে ধরলো। নিলু বলল আচ্ছা মামা মাছ গুলো পুকুর থেকে উঠে যাচ্ছে কেন? মামা বলল কিছু দেশীয় মাছ আছে যেমন শোল,কৈ,মাগুর ইত্যাদি মাছ গুলো পোনা ছাড়ার জন্য পুকুর থেকে উঠে অন্যত্র চলে যায়। নিলু বুঝতে পারলো এবং খুশি মনে ঘরে ফিরলো। সন্ধ্যা হলে দাদু এবং দাদির কাছে বিভিন্ন ধরনের গল্প শুনে নিলু তারপর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যায়। এভাবে মামার বাড়িতে আনন্দে দিনগুলো কাটতে থাকে নিলুর। হঠাৎ মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে নিলুর। কিরে এ দুপুর বেলা আর কতক্ষন ঘুমাবি! দেখ তোর মামা আসছে তোকে নিতে। আমি কি এতক্ষন স্বপ্নে দেখলাম! ঘুম থেকে উঠতে উঠতে নিলু ভাবলো। যাই হোক স্বপ্ন ত সত্যি হতে চলল,মামা আসছে আমাকে নিতে। এই বলে নিলু মামাকে জড়িয়ে ধরলো।
বনের সেই একা হাতিটার গল্প (শেষপর্ব)
মানুষ তো স্বাভাবিকভাবেই নিজের স্বার্থ আগে দেখে। এতে করে অন্যের কি আসে যায়, সেটা তাদের বিবেচনায় আসে স্বার্থ হাসিলের পর।...