আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আপনাদের দোয়ায় ও আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও বেশ ভালো আছি।
আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি স্কুল জীবনের ভালোবাসা নিয়ে সেরা একটি ইউনিক গল্প, যা আগে কখনো কোথাও পড়েননি এবং কারো লেখায় দেখেননি। চলুন তাহলে দেখে আসি আমার লেখা গল্পটি আপনি বা আপনার পরিচিত কারো সাথে মিলে যায় কিনা…
অয়ন আর অবন্তী এখন ক্লাস টেনে উঠেছে। একই সাথে একই স্কুলে তারা প্রায় ৫ বছর ধরে একসাথে পড়ছে। আজও তারা বন্ধু হয়ে আছে। নতুন ক্লাস, নতুন পরিবেশ, নতুন ক্লাসে প্রমোশন পাওয়া ছাত্র ছাত্রীদের প্রতি স্কুলের স্যার/ম্যাডামদের নতুন ধরণের মনোভাব। সবকিছুই যেন সকলের শিক্ষাজীবনে একটা নতুন অধ্যায়ের উন্মোচন করেছে।
অয়ন একদিন অবন্তীকে ডেকে বলে,
– অবন্তী, তোর প্র্যাকটিকেল খাতাটা খুব দরকার ছিলো।
– হ্যাঁ, লাগলে নে না। কখন দেবো?
– কাল আনতে পারবি স্কুলে?
– ঠিক আছে নিয়ে আসবো..
– ওকে…
– ওই শোন…
– কি?
– কাল একটু তাড়াতাড়ি আসার চেষ্টা করিছ স্কুলে, কেমন?
– কেন?
– যা বলেছি তাই করিস। একটু তাড়াতাড়ি চলে আসিস স্কুলে।
– আচ্ছা।
পরদিন সকালে নয়ন তাড়াতাড়ি চলে যায় স্কুলে। গিয়ে দেখতে পায়, ক্লাসের এক কোণে অবন্তী বসে আছে।
– কিরে অবন্তী.. কি খবর তোর?
– ভালো আছি। এদিকে আয়..
(অয়ন টুলের উপর তার ব্যাগটা রাখে)
– হ্যাঁ বল।
তারপর হঠাৎ অবন্তী দাঁড়িয়ে গিয়ে একটা সুন্দর মোড়কে মোড়ানো একটা গিফটের সাথে কয়েকটি লাল গোলাপ অয়নের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,
– .. শুভ জন্মদিন দোস্ত ..
অয়ন আবেগে আপ্লুত হয়ে যায়! হঠাৎ করে অবন্তীকে জড়িয়ে ধরে তার গালে একটি চুমু দিয়ে দেয়! তারপর লজ্জায় মাথা নামিয়ে ঠাস করে বসে পড়ে..
“স্যরি রে অবন্তী.. স্যরি দোস্ত… স্যরি.. স্যরি.. স্যরি..”
অয়ন লজ্জায় শরমে কাতর হয়ে যায়। স্কুল জীবনে স্বাভাবিকভাবেই সবাই ভালোবাসা ও স্পর্শকাতর স্বভাবের হয়ে থাকে। তবে পরিস্থিতি যখন বপসামাল হয়ে যায়, তখন স্কুলের ছাত্ররা কি করতে কি করে ফেলে খেয়াল থাকেনা…
উঠতি বয়সের ছেলেরা যা করে আরকি…
অবন্তী মুখ কালো করে বসে আছে। অয়ন লজ্জায় মাথা নিচু করে লো-বেঞ্চের উপর বসে আছে। ইতোমধ্যে অনেকেই চলে আসে ক্লাসরুমে..
অয়নের বন্ধু ইফতি এসে জিজ্ঞেস করছে এত তাড়াতাড়ি তারা কেন এসেছে, কোন স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়ে কিনা..
অয়ন কিছু বলেনা; লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া মুখটা তুলে স্রেফ একটা মুচকি হাসি দিয়ে আবার মাথা নামিয়ে নেয়। ইফতি জিজ্ঞেস করে কিছু হয়েছে কিনা। অয়ন কিছুই বলেনা।
ইফতি অবন্তীর কাছে যায়। খোশগল্প করতে শুরু করে। কিন্তু সেদিকে অবন্তীর কোনরকম মনোযোগ নেই দেখে উঠে চলে আসে ইফতি।
সেদিন সারাটা ক্লাস মৌনাবস্থায় কাটিয়ে দেয় তারা দু’জন। অথচ ক্লাসের সবচেয়ে দূরন্তপনা ছাত্রছাত্রী ছিলো তারা। ক্লাসের অন্যসবাই অয়নকে মৌন দেখে জিজ্ঞেস করছিলো বারবার কি হয়েছে তার। অয়ন খালি মুচকি মুচকি হাসে।
স্কুল ছুটি হলে অবন্তী অয়নের পথরোধ করে..
– তোর কি সমস্যা হয়েছিলো অয়ন বল তো?
– কি অবন্তী?
– তোকে যে তোর জন্মদিনে উইশ করলাম, সেটা আমার ভুল ছিলো?
– অবন্তী এভাবে বলিসনা প্লিজ। আনার ভুল হয়ে গিয়েছে.. স্যরি।
– স্যরি বলে লাভ নেই এখন আর।
– তো?
– আমাকে চিপস কিনে দিতে হবে। নাহলে মাফ নাই।
– কি বলিস..
– হ্যাঁ। চিপস লাগবে। আর প্রতিজ্ঞা করতে হবে সামনে আর ওরকম তুই করবিনা..
– হাহা! আচ্ছা ঠিক আছে। চল..
– চিজ-পাফস খাবো কিন্তু.. মনে রাখিস..
– ঠিক আছে চল…
এত সুন্দর লাগছিলো তাদের; দুইজন যেন দুইটা গোলাপ ফুল.. তাদের সৌরভ আর সৌন্দর্য যেন ছড়িয়ে পড়ছিলো চারিদিকে..
(চলবে)