ভারতের খ্যাতনামা সংগীত পরিচালক এবং অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান এবং তার স্ত্রী সায়রা বানুর ২৯ বছরের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটেছে। এই বিচ্ছেদের খবর যেমন ভক্তদের অবাক করেছে, তেমনি নেটদুনিয়ায় শুরু হয়েছে আলোচনা ও গুঞ্জন। বিচ্ছেদের খবরের কিছুক্ষণ পরেই রহমানের সহকর্মী গিটার বাদক মোহিনী দে তার নিজের বিবাহবিচ্ছেদের কথা প্রকাশ করেন। ফলে এই দুই ঘটনায় তৈরি হয় নানা মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
পরকীয়ার অভিযোগ এবং মোহিনীর প্রতিক্রিয়া
দুটি বিচ্ছেদের ঘটনা একসঙ্গে প্রকাশ পাওয়ায় অনলাইনে ছড়ায় পরকীয়ার অভিযোগ। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, রহমান এবং মোহিনীর ঘনিষ্ঠতার কারণেই কি এমন কিছু ঘটেছে? তবে এই বিষয়ে রহমান কোনো মন্তব্য না করলেও, তার আইনজীবী গুজব নস্যাৎ করেছেন। অন্যদিকে, মোহিনী দে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করে স্পষ্ট করেছেন যে, রহমান তার কাছে বাবার মতো।
ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ভিডিওতে মোহিনী জানান, “রহমান স্যারের সঙ্গে আট বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করেছি। তিনি আমার জীবনে একজন পিতৃতুল্য। অথচ আমাদের নিয়ে যে ধরনের মিথ্যা খবর ছড়ানো হচ্ছে, তা অবিশ্বাস্য এবং অপরাধমূলক।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমার ব্যক্তিগত জীবনে কিছু পরিবর্তন এসেছে। মার্কের সঙ্গে আমার বিবাহবিচ্ছেদ সম্পূর্ণ আমাদের পারস্পরিক সিদ্ধান্ত। আমাদের বন্ধুত্ব এবং কাজের সম্পর্ক অটুট থাকবে। এ নিয়ে অযথা জল্পনা ছড়ানো অনুচিত।”
দীর্ঘ ২৯ বছরের সংসারের ইতি
১৯৯৫ সালে এ আর রহমান এবং সায়রা বানুর বিয়ে হয়েছিল। পরিবার এবং সামাজিক রীতির মেনে আয়োজিত এই বিয়ে তাদের ৩০ বছরের সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে তুলেছিল। তিন সন্তান খাতিজা, রহিমা এবং আমিনের জন্ম এই সংসারে। এমনকি তাদের বড় মেয়ে খাতিজার বিয়েও ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তবে হঠাৎ করেই দীর্ঘদিনের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ সম্পর্কে এখনো কোনো নির্দিষ্ট তথ্য সামনে আসেনি।
এক্স (পূর্বের টুইটার) প্ল্যাটফর্মে রহমান এবং সায়রা যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছেন, যেখানে তারা জানান, “এই ত্রিশ বছরের সম্পর্কের অনেক স্বপ্ন এবং প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু তা পূরণ হয়নি।”
সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক জল্পনা: প্রয়োজন সংযমের
মোহিনী এবং রহমানের ব্যক্তিগত জীবনের বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে যেভাবে মিথ্যা খবর ছড়ানো হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে অকারণ জলঘোলা না করার জন্য দুই তারকাই সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তাদের এই বিচ্ছেদ কেবল ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ফলাফল হলেও, অনলাইনে ছড়ানো গুজব এবং অমূলক অভিযোগ প্রমাণ করে যে, তারকাদের ব্যক্তিগত জীবনের প্রতি সামাজিক সংবেদনশীলতা কতটা প্রয়োজন।