জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও অসাম্য এবং অন্যায়ের দিকে এগোচ্ছে। তিনি দাবি করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সফল হওয়ায় আওয়ামী লীগের পতন ঘটেছিল, কিন্তু এরপরে দেশজুড়ে নতুন করে বৈষম্যের শেকড় গাঁথা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে জাতীয় পার্টির নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে এবং অন্যায়ভাবে দমন করা হচ্ছে।
তিনি জানান, এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জাতীয় পার্টি শুরু থেকেই একাত্মতা প্রকাশ করে, এবং ছাত্রদের পাশে থেকে সমর্থন দিয়েছে। তার দাবি, বৈষম্যের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে সামিল হয়ে জাতীয় পার্টির নেতারা অসামান্য ভূমিকা পালন করেছেন, তবুও তাদেরই আসামি করে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে, যা অমানবিক এবং অন্যায়।
জি এম কাদের আরও জানান, এই আন্দোলনে রংপুরের জাতীয় পার্টির দুজন নেতা শহীদ হয়েছেন। অথচ, সেই রংপুরেই বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় দলের অন্তত ৩৩ জন নেতা-কর্মীকে জড়ানো হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছেন।
শনিবার রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে অনলাইন কর্মী এবং ঢাকা বিভাগীয় জেলার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জি এম কাদের এসব কথা বলেন। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে জাতীয় পার্টি এই আন্দোলনকে প্রথম থেকেই সমর্থন জানায় এবং ছাত্রদের পাশে দাঁড়ায়।
১ জুলাই থেকে ছাত্রদের আন্দোলন রাজপথে শুরু হয়, এবং ৩ জুলাই দ্বাদশ সংসদের বাজেট অধিবেশনে জি এম কাদের কোটাপদ্ধতির ওপর বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতির কারণে বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে করে দেশের মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে, যা কোনোভাবেই দেশের জন্য মঙ্গলকর নয়।”
জি এম কাদের আরও বলেন, দেশের মানুষ বর্তমানে চরম অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকটে ভুগছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, বেকারত্বের হার বেড়েছে, এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা সংকটেও রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যৌক্তিক সময় দিয়ে সংস্কারমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাই, যাতে তারা একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং পরিবর্তিত রাষ্ট্রকাঠামো গঠন করতে পারে।”