রাজধানীর বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাতে এই বৈঠকে দুর্নীতিবাজ এমপি-মন্ত্রীদের সম্পদ দ্রুত বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানান।
আওয়ামী লীগের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান
বৈঠকে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে ব্যাপক দুর্নীতি ও সম্পদ পাচারের ঘটনা ঘটেছে। তিনি অভিযোগ করেন, অনেক এমপি-মন্ত্রী বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তুলেছেন। এমনকি একজন এমপির বিদেশে ৩০০টিরও বেশি বাড়ি রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এ ধরনের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা না হলে বিদেশে বসে তারা দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখবে বলে তিনি সতর্ক করেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অস্থিরতা ও আন্দোলনের প্রেক্ষাপট
বৈঠকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান অস্থিরতা এবং আন্দোলনের পেছনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। হাসনাত অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থাকা লোকজন শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করছে এবং বিভিন্ন পেশাজীবী আন্দোলনকেও উসকে দিচ্ছে।
‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালনের ঘোষণা
বৈঠক শেষে হাসনাত ঘোষণা দেন, আগামী এক সপ্তাহ ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালন করা হবে। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হচ্ছে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন ঠেকানো এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। বৈঠকে উপস্থিত ছাত্র সংগঠনগুলোও এই সিদ্ধান্তে একমত হয়।
জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ
আলোচনায় অংশগ্রহণকারী নেতারা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের ঘোষণা দেন। তারা একমত হন যে, আর কোনো পরিস্থিতিতেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়া হবে না।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা
বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ, মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, ইসলামী ছাত্রশিবির ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এই কর্মসূচি ছাত্র আন্দোলনের এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কতটুকু কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে।