ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ১১ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এ মামলাটি করেন ধানমন্ডি থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা, যা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা হয়েছে।
এই মামলায় আটক ছাত্রলীগের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় নেতা ইসমাইল হোসেনকে (২২) শুক্রবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলার প্রধান আসামি হিসেবে তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে এবং সিএমএম আদালতে তার জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি মঞ্জুর হয়েছে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ইসমাইল ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির মানবাধিকারবিষয়ক উপসম্পাদক ছিলেন।
ছাত্রলীগের এই ১১ নেতার মধ্যে তরিকুল ইসলাম (প্রচার সম্পাদক), সজীবুর রহমান (সাংগঠনিক সম্পাদক), মিজানুর রহমান (সহসভাপতি), ওয়ালিউল খলিফা, মোস্তাকিম হোসেন (উপগণশিক্ষা–বিষয়ক সম্পাদক), জাহিদুল ইসলাম (বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক), রিয়াজুল ইসলাম (উপশিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক সম্পাদক), সেলিম রেজা (মানবাধিকারবিষয়ক উপসম্পাদক), মোহাম্মদ হোসাইন (কৃষিবিষয়ক সম্পাদক), তামজিদ ভূঁইয়া (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি), এবং মো. শৈশব (সূর্যসেন হলের সাংগঠনিক সম্পাদক) রয়েছেন।
মামলার পটভূমি ও অভিযোগ
ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম এজাহারে অভিযোগ করেন যে, গত ২৪ অক্টোবর রাত ২টা ২৫ মিনিটের দিকে খবর পান যে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের সামনে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ১১ নেতা এবং অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জন নেতা-কর্মী অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল করছেন।
রাত ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশ মিছিলটি দেখতে পায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ামাত্র নেতাকর্মীদের অনেকে দ্রুত পালিয়ে যান। এজাহারে উল্লেখ করা হয় যে, ছাত্রলীগের উপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে তারা রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিচ্ছিলেন, যা রাষ্ট্রের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
মামলায় আরও অভিযোগ আনা হয় যে, ছাত্রলীগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে তাদের এই মিছিলটি রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে করা হয়। মামলায় বলা হয়, স্লোগান এবং তাদের কার্যকলাপ সন্ত্রাসবিরোধী আইন লঙ্ঘন করেছে, যা দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার প্রেক্ষাপট
গত বুধবার রাতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয় যে, সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগের কিছু কার্যকলাপ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক এবং আইনশৃঙ্খলার জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।