জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের সম্প্রতি একটি মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর দেশে নতুন করে বৈষম্যের সূচনা হয়েছে। কাদের অভিযোগ করেছেন, ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে জাতীয় পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
সভায় কাদের বলেন, “আমরা এই আন্দোলনের শুরু থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দিয়েছি এবং সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। অথচ আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নিহত ছাত্রদের মামলায় আসামি করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অন্যায়।” তিনি রংপুরে অন্তত ১১টি মিথ্যা মামলায় ৩৩ জন জাপা নেতা-কর্মীকে আসামি করা এবং দুইজনের মৃত্যু উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জাতীয় পার্টির এ নেতার অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন অন্তবর্তীকালীন সরকারের গঠনের পর থেকে রাজনৈতিক সংঘাত তীব্র হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা জাতীয় পার্টিকে ‘স্বৈরাচারের দোসর’ হিসেবে উল্লেখ করায় দলের নেতাদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায়, জাতীয় পার্টি আন্দোলনের নেতাদের বিরুদ্ধে লাঠি মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে, যা তাদের রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও কঠিন করেছে।
জিএম কাদের এ সময় আওয়ামী লীগকে তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে, কিন্তু বাস্তবে তাদের কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ বিপরীত।” তিনি জনগণের জন্য একটি আইন এবং দলের জন্য আরেকটি আইন তৈরির ফলে দেশে বৈষম্য বাড়ছে বলে উল্লেখ করেন। এই বৈষম্যের ফলে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ এবং অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে।
তিনি দেশের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বেকারত্ব ও নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কাদের সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সভায় উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, লিয়াকত হোসেন খোকা, আব্দুস সাত্তার মিয়া, হেনা খান পন্নি, মো. শরিফুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতারা।
জাতীয় পার্টির নেতাদের উপর এই নির্যাতন ও বৈষম্যের অভিযোগ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার একটি প্রতিফলন, যা দেশের সামগ্রিক পরিবেশকে প্রভাবিত করছে। দেশের জনগণের কাছে এই পরিস্থিতির সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তাদের অধিকার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।