শীতের আগমনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক অদ্ভুত উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকে ‘কম্বল দে, কম্বল দে’ কথাটি এখন রীতিমতো ভাইরাল। ভিডিও, মিম, এমনকি হাস্যরসাত্মক পোস্টে ভরে উঠেছে টাইমলাইন। কেউ কম্বলের দাবি জানিয়ে মজা করছেন, আবার কেউ কৌতুক করে বানাচ্ছেন মজার সব ভিডিও। এই হঠাৎ কম্বল কেন্দ্রিক উন্মাদনার উৎস কী, তা নিয়ে কৌতূহলী নেটিজেনরা।
ঘটনার সূত্রপাত নিউজিল্যান্ড থেকে। দেশটির সংসদে মাওরি সম্প্রদায়ের একটি ঐতিহ্যবাহী গান পরিবেশন করেন তরুণ রাজনীতিবিদ হানা-রাহিতি মাইপি-ক্লার্ক। এই গানটি ছিল আদিবাসী মাওরিদের প্রতিবাদের একটি প্রতীকী উপস্থাপনা। গানটির নাম ‘হাকা’, যা মূলত সাহস এবং সংগ্রামের প্রতীক। এই গানে উচ্চারিত কিছু শব্দ অনেকের কানে শোনায় বাংলা ‘কম্বল দে’-এর মতো।
হাকা গানের আসল উচ্চারণ হলো ‘কাম্মাতে কাম্মাতে’, যা মাওরি ভাষায় একটি বিশেষ অর্থ বহন করে। তবে এতে কম্বলের কোনো উল্লেখ নেই। নিউজিল্যান্ডের সংসদে মাওরিদের একটি বিল নিয়ে আলোচনা চলাকালীন এই গানের পরিবেশনা নতুন মাত্রা পায়। এখান থেকে একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলা ভাষাভাষী দর্শকদের কেউ কেউ মজা করে গানটির সঙ্গে শীতের কম্বল চাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এনে ‘কম্বল দে’ কথাটি প্রচার করেন।
ফেসবুকের ভাইরাল কন্টেন্ট তৈরির প্রবণতা নতুন নয়। হাকা গানটির ভিডিও শেয়ার হওয়ার পর, কেউ কেউ সেটিকে শীতের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেন। শীত নামতে না নামতেই ‘কম্বল দে’ পরিণত হয়েছে হাস্যরসের কেন্দ্রবিন্দুতে। এটি একদিকে যেমন নিছক বিনোদনের অংশ, তেমনি শীতকালে দরিদ্র মানুষের জন্য কম্বলের প্রয়োজনীয়তাকেও স্মরণ করিয়ে দেয়।
এই ঘটনা প্রমাণ করে, সংস্কৃতি এবং ভাষার ভিন্নতা কখনো কখনো কৌতুক এবং আলোচনার জন্ম দিতে পারে। তবে এর পাশাপাশি এই ধরনের ভাইরাল কথার পেছনের বাস্তবতাও বুঝতে হবে। নিউজিল্যান্ডের হাকা গানের ঐতিহ্য যেমন সম্মানজনক, তেমনি শীতকালে দরিদ্র মানুষের জন্য কম্বলের প্রয়োজনীয়তাও গভীরভাবে উপলব্ধি করা জরুরি।
‘কম্বল দে’ এখন শুধু একটি কথাই নয়; এটি মজার মাধ্যমে শীতকালীন বাস্তবতার এক ছোঁয়া দিয়ে যাচ্ছে।