সিনেমার জগতে গ্ল্যামারের আড়ালে যে সবসময় স্বচ্ছ পরিবেশ বিরাজ করে না, তা আবারও প্রকাশ্যে আনলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী সায়নী গুপ্ত। সম্প্রতি রেডিও নাশাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সায়নী তাঁর অভিনয়জীবনের কিছু অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। এতে উঠে এসেছে শুটিং সেটে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের সময় সহ-অভিনেতার অনভিপ্রেত আচরণের কথা।
সায়নী জানান, ২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র মার্গারিটা উইথ আ স্ট্র–এর শুটিংয়ের সময় তিনি একটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের অভিজ্ঞতা পেয়েছিলেন। যদিও এটি তার জন্য প্রযুক্তিগতভাবে সহজ কাজ ছিল, তবুও সেই সময় সহ-অভিনেতার আচরণ তাকে বিব্রত করেছিল। তাঁর ভাষায়, “পরিচালক ‘কাট’ বলার পরও অভিনেতা চুমুর দৃশ্য থামাচ্ছিলেন না। এই ধরনের আচরণ অনেক ক্ষেত্রেই শিল্পীদের জন্য অস্বস্তিকর এবং অশালীন হয়ে দাঁড়ায়।”
শুধু তাই নয়, গোয়ার একটি আউটডোর শুটিংয়ের অভিজ্ঞতাও তিনি শেয়ার করেন। সেখানে একটি ছোট পোশাকে সৈকতে শুয়ে শুটিং করার সময় তিনি নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন। সায়নী বলেন, “আমার সামনে তখন প্রায় ৭০ জন দাঁড়িয়ে ছিল, অথচ সেটে আমার সুরক্ষার জন্য তেমন কোনো স্টাফ উপস্থিত ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে আমি একজন সহযোগী চেয়েছিলাম, যিনি আমাকে শাল দিয়ে ঢেকে দিতে পারেন। কিন্তু সেটাও নিশ্চিত করা হয়নি।”
শিল্পীদের সুরক্ষার প্রতি উদাসীন মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সায়নী। তিনি বলেন, “এমন অনেক ক্ষেত্রেই ঘটে, যেখানে অভিনেতাদের ব্যক্তিগত সীমারেখার প্রতি সম্মান দেখানো হয় না। এই মানসিকতা বদলানো অত্যন্ত জরুরি।”
অভিনেত্রীর মতে, অন্তরঙ্গ দৃশ্যগুলো পরিচালনার ক্ষেত্রে পেশাদার মনোভাব রাখা উচিত। তিনি বলেন, “আমি অন্তরঙ্গতা নিয়ে একটা বই লিখতে পারি। তবে অনেক সময় লোকেরা এর সুযোগ নেয়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
সম্প্রতি সায়নী গুপ্তকে প্রতীক বাব্বরের সঙ্গে রোমান্টিক কমেডি ছবি খোয়াবোঁ কা ঝামেলা–তে দেখা গেছে। ছবিটি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জিও সিনেমায় মুক্তি পেয়েছে। তবে সায়নীর এই সাক্ষাৎকার তার ক্যারিয়ারের আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
শিল্পীদের জন্য সুরক্ষা এবং পেশাদার আচরণ নিশ্চিত করতে ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে মানসিকতার পরিবর্তন আনা জরুরি বলে মনে করেন তিনি। তার এই বক্তব্য সিনেমার জগতে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রতি নতুন আলো ফেলেছে।