বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালকের দায়িত্বে থাকা সায়মা ওয়াজেদকে নিয়ে নতুন আলোচনার সূচনা করেছে বাংলাদেশ সরকার। বর্তমান সরকারের তরফ থেকে ডব্লিউএইচওকে একটি চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে যাতে সায়মা ওয়াজেদকে এড়িয়ে সরাসরি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হয়। সায়মা ওয়াজেদ বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা, যিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন।
আজ ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে সরকার এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে। এ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এবং অপূর্ব জাহাঙ্গীর বক্তব্য দেন। সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর জানান, সরকারের উদ্দেশ্য ডব্লিউএইচওর সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাধাহীন সেতুবন্ধন তৈরি করা।
সায়মা ওয়াজেদের কার্যকলাপ নিয়ে সরকারের উদ্বেগ
উপ-প্রেস সচিবের বক্তব্যে উঠে আসে সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা আর্থিক এবং ফৌজদারি মামলার প্রসঙ্গ। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিচালকের দায়িত্ব পালন করা সায়মা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ বিচারাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, “সায়মা ওয়াজেদের ব্যাংক হিসাব জব্দ রয়েছে এবং তদন্ত চলমান। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর মাধ্যমে ডব্লিউএইচওর সঙ্গে যোগাযোগ যথাযথ হবে না।”
গত বছরের নভেম্বর মাসে ডব্লিউএইচওর এই গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন সায়মা ওয়াজেদ, এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তিনি দায়িত্ব পালন শুরু করেন। যদিও তাঁর মেয়াদ পাঁচ বছরের জন্য নির্ধারিত, কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে তাঁর কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত পরিবার ও মামলা
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দায়ের করা হয়, যার মধ্যে সায়মা ওয়াজেদ এবং শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামও উল্লেখযোগ্য। এই মামলাগুলি তাঁদের আর্থিক বিষয় এবং বিভিন্ন অনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার সায়মা ওয়াজেদের সঙ্গে লিয়াজোঁ না করে ডব্লিউএইচওর সঙ্গে সরাসরি কাজ করতে চায়, যা এই ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ বলে জানিয়েছেন অপূর্ব জাহাঙ্গীর।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের মতে, বিষয়টি নৈতিকতার। তাঁর মতে, সরকারের পক্ষ থেকে ডব্লিউএইচওকে অনুরোধ করা হয়েছে যেন তারা সায়মা ওয়াজেদের মাধ্যমে নয়, বরং সরাসরি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে।